এম.এ আজিজ রাসেল:
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আমরা মানবিক কারণে সাহায্য করছি। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। তাদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে স্থানীয়দের অবহেলা করা যাবে না। এটি কোন অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না।
১১ অক্টোবর বুধবার সকাল ১১ টায় কক্সবাজার সদর হাসপাতাল পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে তত্ত্বাবধায়ক ডা. পুঁ চ নু এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার-রামু আসনের সাংসদ ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাইমুম সরওয়ার কমল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) হাবিবুর রহমান, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র সাহা, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন আব্দুস সালাম।
সভাপতির বক্তব্যে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পুঁ চ নু জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ায় গত ২৫ আগষ্টের পর থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। ২৫০ শয্যার হাসপাতালে স্থানীয় ও রোহিঙ্গা মিলে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৬’শ রোগী অবস্থান করে। অতিরিক্ত সংখ্যক এই রোগি সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে দ্রুত সময়ে আরো অতিরিক্ত ১০০ শয্যা প্রয়োজন। এছাড়া নতুন করে হাসপাতালে চালু করা হয়েছে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। যা দেশে আর কোন হাসপাতালে এ পর্যন্ত চালু হয়নি। এটি কক্সবাজারবাসীর জন্য গৌরব ও সুনামের।
তাঁর বক্তব্যের জবাবে জাহিদ মালিক বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে হাসপাতালে রোগির চাপ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে ছিল। কিন্তু এই চাপ আজকে সরাসরি দেখলাম। আজকেও ৬৩০ জন রোগি ভর্তি আছে। অতিরিক্ত ১০০ শয্যার দাবীটি যথেষ্ট যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী। শিগগিরই ১০০ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও জনবল মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এবং যত দ্রুত সম্ভব চালু করার ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেন, এই হাসপাতালে শিগগিরই আরো একটি অপারেশন থিয়েটার, আইসিইউতে দুটি বেড ও একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হবে। কোন ধরণের ঘাটতি রাখা হবে না। এর আগে তিনি রোহিঙ্গা ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন। এসময় আহত রোহিঙ্গা রোগিদের সাথে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে জরুরি ভিত্তিতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শেষে শুরু করে সকল শূণ্য পদ পূরণ করা হয়েছে। আরও যত ধরণের অভাব রয়েছে সবকিছু পূরণ করার চেষ্টা চলছে; যাতে চিকিৎসাসেবায় কোন ব্যাঘাত না ঘটে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. শাহিন আব্দুর রহমান বলেন, হাসপাতালের সাথে লাগোয়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সাবেক একাডেমিক ভবন অর্থ্যাৎ সিসিউ ভবনের ৪র্থ ও ৫ম তলায় অতিরিক্ত ১০০ শয্যা চালু করার ব্যবস্থা রয়েছে। শুধুমাত্র আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় জনবল পেলেই এটি চালু করা যাবে। এটি হলে চিকিৎসাসেবায় কিছুটা গতি আসবে। পরে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক কক্সবাজার সদর হাসপাতালের নিচতলার ১১৩ নং কক্ষে ‘মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র’ উদ্বোধন করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।