ডেস্ক নিউজ:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের জাতিসঙ্ঘ সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু প্রাধান্য পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. মাসুদ বিন মোমেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ মিশনে প্রধানমন্ত্রীর জাতিসঙ্ঘ সফর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান মাসুদ বিন মোমেন।
এছাড়াও এবারের অধিবেশনে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে আরো সম্পৃক্ত করতে প্রধানমন্ত্রী জোর প্রচেষ্টা চালাবেন বলে জানান তিনি।
জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ নিউ ইয়র্কে পৌঁছবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনে তিনি ৯০ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ সরকারি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিবেন। যাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. মাসুদ বিন মোমেন জানান, বিএনপি জাতিসঙ্ঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণে নয়, নিজেরাই যোগাযোগ করে জাতিসঙ্ঘে এসেছেন। জাতিসঙ্ঘের রাজনৈতিক বিষয়ক একটি বিভাগ আছে তারা সেখানে যোগাযোগ করে এসেছে। ‘আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি’ বলেও জানান তিনি।
২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সম্বর্ধনায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। পরের দিন ২৪ সেপ্টেম্বর বিকালে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে লেনসন ম্যান্ডেলা পিস সামিটে ভাষণ দিবেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে সকালে বিশ্ব মাদক সমস্যা বিষয়ে বৈশ্বিক আহ্বান সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের সভায় যোগ দিবেন তিনি। এতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
একই দিনে শরণার্থী রিষয়ক বৈশ্বিক কম্প্যাক্ট ও শিক্ষা বিষয়ক দুটি উচ্চ পর্যায়ের হাই-লেভেল ইভেন্টে অংশ নিবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া দুপুরে ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত একটি রাউন্ড টেবিল আলোচনায় অংশ নেবার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ও জাতিসঙ্ঘের নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সাইবার সিকিউরিটি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়ও জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের আয়োজনে অ্যাকশন ফর পিস কিপিং বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে। শান্তিরক্ষা বিষয়ক ওই ইভেন্টে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ক্রমাগত উন্নতির বিষয়গুলো তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
একই দিন তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সম্পর্কিত একটি প্যানেলে যোগ দিবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সভায় যোগ দিবেন প্রধানমন্ত্রী।
২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় প্রধানপ্রন্ত্রী জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের জেনারেল ডিবেট অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিবেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করতে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য তুলে ধরা হবে প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যে।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়ন, অভিবাসী শ্রমিকের অধিকার আদায়, দারিদ্র্য দূরীকরণ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা ও সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, অবকাঠামোগত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের সাফল্য গাঁথার বিষয়গুলো।
‘রূপকল্প ২০২১’-এর আলোকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে সরকার যে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে, সে বিষয়ে আলোকপাতের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশাগুলোও তার বক্তৃতায় থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে ।
২৭ সেপ্টেম্বর সকালে লিথুনিয়ার রাষ্ট্রপতি আয়োজিত ‘নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন’ বিষয়ক সাইড ইভেন্টে ভাষণ দেবার কথা রয়েছে প্রধানন্ত্রীর।
২৮ সেপ্টেম্বর সকালে নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে জাতিসঙ্ঘ সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র/সরকারপ্রধান, জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব, কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে আলোচনায় রোহিঙ্গা বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলে জানান মাসুদ বিন মোমেন।
প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আয়োজিত একটি রিসেপশন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারো প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি অ্যাওয়ার্ড পেতে যাচ্ছেন। তবে কি কি বিষয়ে অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন কিংবা কোন কোন প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রীকে পুরস্কৃত করছেন তা জানানো হয়নি সংবাদ সম্মেলনে।
২৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে ফেরার কথা রয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।