সংবাদদাতা:
টেকনাফের বাহারছড়া বড়ডেইল মৌজায় আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য ও দলিল গোপন করে জমি বিক্রির অভিযোগ ওঠেছে। স্থানীয় জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে জমির খতিয়ান ও কাগজপত্র গোপন করে একাধিক বক্তিকে জমি বিক্রি করে স্বর্বস্ব খুইয়ে নিয়েছে। সর্বশেষ তার প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় মারিষবনিয়ার এলাকার মৌলভী জাকের আহাম্মদ, মনির আহাম্মদ ও মৌলভী বশির আহামদ। এ্ই বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা আদলতে মামলাও করেছে। এই সিন্ডিকেট আরো কয়েক জনের সাথে প্রতারণা করেছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগ করা হয়, জহির উদ্দিন সিন্ডিকেটের আতাউল্লাহ, আব্দুল হামিদ, মাহবুর রহমান ও ফরিদ আহাম্মদ সাধরণ মানুষের কাছ থেকে জমি নিয়ে নানা কায়দা কৌশল করে জমি ক্রয় বিক্রির নামে প্রতারণা করছে।
টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের বড় ডেইল গ্রামের মরহুম নাছির উদ্দিন মাস্টারের পুত্র জহির উদ্দেনের কাছ থেকে মৌলভীর জাকের আহাম্মদ গং গত ২০০৮ সালের দিকের হেবা ও ক্রয় দলিল মুলে ৫৯ শতক জমি ক্রয় করেন। যার ক্রমিক নং-১২৯,বই নং-০১,দলিল নং-১২৮,বিএস দাগ ২১৬২,খতিয়ান-৪১১,৪১২.তবে জহির উদ্দিন প্রতারণার করে ৩০১১৮২ ও ৫৪২৫ দলিল গোপন করে তার নামে সৃজিত খতিয়ান করেছে। মুল ক্রেতা তাদের জমিটি সৃজিত খতিয়ান করতে গেলেই বেরি এসেছে প্রতারক জহির উদ্দিনের প্রতারণার থলের বিড়াল। জহির উদ্দিন এইসব জমি বিভিন্ন সিন্ডিকেটের হাতে বিক্রি করতে পায়তারা শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইতোমধ্যে জহির উদ্দিন তার নিজের নামে ভুয়া সৃজিত খতিয়ান ও করেছে যার সৃজিত খতিয়ান-৮৯৫।
অপরদিকে বড় ডেইল গ্রামের মরহুম নাছির উদ্দিন মাস্টারের পুত্র মাওলানা নেজাম উদ্দিন, মৃত শামসুদ্দিনের স্ত্রী নুর নাহার বেগম ও মেয়ে আরেফা বেগম কর্তৃক কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে নাজেম উদ্দিন, জহির উদ্দিন, জালাল উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনকে বিবাদী করে টেকনাফ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের নামজারি ও জমা ভাগ মামলা নং- ৬১২(২)/২০০৯-২০১০ মামলার ১৮/১১/২০০৯ তারিখের আদেশে সৃজিত ৮৯৫নং খতিয়ান বাতিল এবং ২১৬২ দাগের উপর যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত করতে দায়েরকৃত মিচ পিটিশন মামলা নং- ২৩৩/২০১৪ আর্জিতে উল্লেখ করেন। টেকনাফ উপজেলার বড় ডেইল মৌজার ৪১১ ও ৪১২নং বিএস খতিয়ান ২১৬২ বিএস দাগের আন্দর ০.৯৩, ২/১ একর এবং সৃজিত বিকএস খতিয়ান নং- ৮৯৫ জমি ফজর আলীর পুত্র নাছির উদ্দিনের রায়তী স্বত্ব দখলীয় জমি ছিল। তাঁর নামে ৪১১ ও ৪১২নং বিএস খতিয়ান চুড়ান্তরূপে লিপি ও প্রচার আছে। নাছির উদ্দিন ১৯৮২ সালের ৫ জুলাই ৬৫৬৪নং দলিল মূলে ২.০০ একর জমি শামসুদ্দিন ও জহির উদ্দিনকে বিক্রি করেন। শামসুদ্দিন তাঁর খরিদা জমি ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ৭৩নং দলিল মূলে ৩১ শতক এবং ১৯৯২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ১৩২নং দলিল মূলে ২৬ শতক জমি মাওলানা নেজাম উদ্দিনকে বিক্রি করেন।
শামসুদ্দিনের মরণে তৎস্বত্ব স্ত্রী নুর নাহার বেগম ও মেয়ে আরেফা বেগম প্রাপ্ত হন। উক্ত জমিতে আবেদনকারীগণ স্বত্ববান দখলকার হিসাবে ভোগ দখলে রয়েছেন। কিন্তু অভিযুক্তগণ উপরোক্ত বিষয় সম্পূর্ণ গোপন, মিস লিড, মিস গাইড করে খতিয়ান সৃজন, তর্কিত আদেশ হাসিল এবং নামজারি খতিয়ান মূলে নালিশি জমি অন্যত্র বিক্রি করার পাঁয়তারা ও ষড়যন্ত্র করছে। তাছাড়া এসএ এন্ড টি এ্যাক্ট এর ১১৬ ও ১১৭ ধারার বিধান উল্লেখ করে টেকনাফ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের নামজারি ও জমা ভাগ মামলা নং- ৬১২ (২)/২০০৯-২০১০ মামলার ১৮/১১/২০০৯ তারিখের আদেশে সৃজিত ৮৯৫নং খতিয়ান আইন, অবস্থা, ইকুইটি, ন্যায় বিচার পরিপন্থি, মনগড়া, অবাস্তব, ফেরবী, যোগসাজসী, অনুমান নির্ভর উল্লেখ করে তা অচল, অরক্ষণীয় ও বাতিলযোগ্য বলে দাবি করা হয়েছে। তৎকালিন কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জাফর আলম আদালত ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল এক আদেশে সম্পত্তির রেকর্ডপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সরেজমিন তদন্ত, মালিকানা ও দখলী স্বত্ব, আবেদনে বর্ণিত বিষয়ে তদন্ত করে সুনির্দিষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে টেকনাফ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট নথি তলব এবং সৃজিত বিএস ৮৯৫ খতিয়ানের ২১৬২ দাগে স্থগিতাদেশ দেন। আর্জির ছায়া কপিসহ ১৬ এপ্রিল ২০১৪ স্মারক নং- ৬৫৫/আরএম মূলে আদেশনামা টেকনাফ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও টেকনাফের সাব রেজিস্টারের কাছে প্রেরণ করা হয়।
মামলার বাদী মাওলানা নেজাম উদ্দিন জানান, বিজ্ঞ আদালতের উক্ত আদেশের পর তদন্ত প্রতিবেদন এখনো দাখিল করা হয়নি। অথচ আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য ও দলিল গোজামিল করে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জমি বিক্রির পাঁয়তারা এবং ষড়যন্ত্রের করে চলছে।