হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
আটশ’ টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে দুই বোনের মধ্যে কথাকাটাকাটি। এক পর্যায়ে স্বামীকে ডেকে এনে হামলা। আর স্বামীও স্ত্রীর বড় বোনের পেটে লাথি মেরে নষ্ট করলো ৩ মাসের ভ্রূণ। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারির করলিয়ামুড়া গ্রামের এই ঘটনায় বিচার পায়নি নির্যাতিত গৃহবধু।
ভিকটিমের স্বামী মো.ইলিয়াছ বলেন, ‘ঘটনাটি গত ১১ সেপ্টেম্বরের। ছেলে মুঠোফোনে জানান, সেলিমসহ (স্ত্রীর ছোট বোনের স্বামী) অন্যান্যরা তার মাকে রক্তাক্ত করেছে। তখন দৌঁড়ে বাড়ি যায়। কিন্তু গ্রামের প্রভাবশালীরা প্রকাশ
করতে দেয়নি। তাঁরা বিচার করে দিবে বলে এখনো নানা তালবাহানা করছে। বাইশারি ইউপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামশুল আলম, তাঁর ছেলে স্থানীয় ইউপি
সদস্য আনোয়ার সাদেক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোক্তার আহমদ ও মোজ্জাফর আহমদ প্রথমে নিরপেক্ষ ভাব দেখালেও বর্তমানে অপরাধী সেলিমের পক্ষে অবস্থান
নিয়েছে।’ মো.সেলিম একই গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে। গ্রামবাসী বলছে- তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাত দলের গুপ্তচরের তকমা রয়েছে।

ইলিয়াছ বলেন, ‘ঘটনার পর পর স্ত্রীকে বাইশারির নুরুল আমিন ও পরে ঈদগাঁও‘র তাসমিন জাহানের তত্বাবধানে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এখন টাকার অভাবে বাকি
চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। তার শরীরে ১৫টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাড়িতে কেঁদে কেঁদে সে সময় পার করছে। দাঁড়াতেও পারছে না ঠিকমত। আমার সন্তানকে যারা নষ্ট করেছে তাদের বিচার হওয়াতো দূরের কথা উল্টো নানা শঙ্কা বাড়ছে। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ছেলে- হেফাজ উদ্দিন ও মো.শাহীনকে নিয়ে আমি চরম কষ্টে আছি।’

স্থানীয় জসিম উদ্দিন বাবুল বলেন, ‘সেলিম লাথি মেরে ইলিয়াছের স্ত্রীর ভ্রূণ নষ্ট করেছে- এটা শতভাগ সত্য। কিন্তু তারা উভয়ে নিকট আত্মীয় হওয়ায় ইউপি সদস্য আনোয়ার, আনোয়ারের বাবা সাবেক ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান শামশুল আলমসহ বাকিরা প্রকাশ করতে দেয়নি। তারা সুষ্ঠু সামাধান করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু ঠিকমত বিচার করেনি।’
জানতে চাইলে বাইশারি ইউপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামশুল আলম বলেন, ‘সেলিম এবং ইলিয়াছের স্ত্রীর বিষয়টি আমরা প্রকাশ না করে, সামাধানের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সমাপ্ত করতে পারিনি। এ বিষয়ে আর খবর নিতে ইচ্ছে হয়না।’

এ ব্যাপারে বাইশারি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ, উপপরিদর্শক (এসআই) আবু মুসা বলেন, ‘গত বুধবার বিকেলে ইলিয়াছ ওই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
বিষয়টি অনেক জটিল হওয়ায় থানায় এজেহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মামলা হলেই আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’