নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়ায় আসামী গ্রেফতাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে নয়জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে কালারমারছড়া বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এলাকায় অাধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজি নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
এতে আহতরা হলেন, ইউনিয়নের ফকিরজোমপাড়ার টুনু মিয়ার পুত্র আবদু শুক্কুর (৩৮), সোনারপাড়ার বদিউজ্জামানের পুত্র আবদুর রহিম (৩৪), হোয়ানকের হরিয়ারছড়ার নজু মিয়ার পুত্র আবদু সালাম (২৩), তিনি পথচারী, আবদু জলিলের পুত্র আবদুর শুক্কুর (৩৬), নয়াপাড়ার আবদুল হাকিমের পুত্র শহীদুল্লাহ (২২), অফিসপাড়ার মো. ছবির পুত্র বোরহান উদ্দীন (৩০), আরো তিন জন চকরিয়া একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে কালারমারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু জানান, সিএনজির অবৈধ টোল আদায়ের সংক্রান্ত একটি মারামারি ঘটনায় স্থানীয় শ্রমিক নেতা গোলাম মোস্তফাসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানা নিয়ে মোস্তফাসহ দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে ছিনিয়ে নিতে চেয়ারম্যান তারেকের নেতৃত্বে প্রায় পাঁচ’শ লোক জড়ো হয়ে পুলিশের হামলা করে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে । পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুঁড়ে।
স্থানীয় প্রভাবশালীরা এএসআই অহিদুর রহমানসহ অপর ৪ কনস্টেবলকে প্রহার করে আসামী ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা চালায়। প্রহারের আঘাতে এএসআইসহ অন্যরা গুরুতর আহত হয়েছে। আত্ম রক্ষার্থে পুলিশ ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়।
পুলিশের দাবি, একটি গুলিভর্তি ম্যাগজিন লুট করেছে স্থানীয়রা।
সন্ধ্যার পর থেকে ম্যাগজিন উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
খবর পেয়ে মহেশখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হোছাইন ইব্রাহিম, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
চেয়ারম্যান তারেক শরীফ জানান, পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ একদল পুলিশ নিয়ে গ্রেফতারী পরোয়ানা না থাকা সত্ত্বেও কালারমারছড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোস্তফাকে গ্রেফতার আসে। ওই সময় মোস্তফা বাজারে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে অবস্থান করছিলেন। তাকে আটক করতে গিয়ে পরিষদের জানালা ও বিভিন্ন জিনিস ভাংচুর করেন পুলিশ। কিন্তু ওই সময় পরিষদের ছিলেন না চেয়ারম্যান তারেক। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এই সময় পরিষদে ভাংচুর নিয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ রাজুর সাথে তারেকে কথা কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারেকের সাথে অসদাচরণ করেন পুলিশ কর্মকর্তা রাজু। এই খবর পেয়ে এলাকার শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
চেয়ারম্যান তারেক দাবি করেন, লোকজন ছুটে আসায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে উপ-পরিদর্শক রাজু। এক পর্যায়ে তিনি সাধারণ মানুষের সাথে থাকা চেয়ারম্যান তারেককে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। কিন্তু গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তারেকে গায়ে লাগেনি। এরপর শত শত লোকজনকে লক্ষ্য নির্বিচারে আরো গুলি ছুড়ে পুলিশ সদস্যরা। এতে নয়জন গুলিবিদ্ধ হয়। পরিস্থিতি এক পর্যায়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আহতদের কক্সবাজার ও চকরিয়ার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানান চেয়ারম্যান তারেক।
এ ব্যাপারে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, সিএনজি-টেম্পুর একটি মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই আসামী গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করলে চেয়ারম্যান তারেকের নেতৃত্বে তাকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করা হয়। এই সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশে আট রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে। এসময় পুলিশের গুলিভর্তি একটি ম্যাগাজিম ছিনতাই হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।