সিবিএন:
মহান স্রষ্টা তাঁর সুনিপুন হাতে কক্সবাজারকে গড়েছেন। দিয়েছেন অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত, পাথুরে বীচ ইনানী, হিমছড়ির প্রকৃতির ঝর্ণা, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন দেখতে আসে নানা দেশের পর্যটক। এছাড়া পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। যেগুলো সত্যিই মুগ্ধকর স্পট।
এখানে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ঝিনুক মার্কেট। সীমান্তপথে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, চীন প্রভৃতি দেশ থেকে আসা বাহারি জিনিসপত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে বার্মিজ মার্কেট। কিন্তু পর্যটকদের স্থায়ী ধরে রাখতে এখনো কাঙ্খিত অবকাঠামো গড়ে উঠেনি। এরপরও নানা প্রতিকূলতায় পর্যটন শিল্পকে প্রমোট করতে সরকারী বেসরকারী অনেক সংগঠন-সংস্থা কাজ করছে। তার মধ্যে ‘ট্যুর অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার’ (টুয়াক) একমাত্র স্বেচ্ছাসেবী নিবন্ধিত সংগঠন।
কক্সবাজারকে বিশ্ব দরবারে আরো আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরতে প্রকৃত ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে এই সংগঠনটি গঠন করা হয়। কক্সবাজারে পর্যটক টানতে ট্যুর অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন কাজ করছে। নিজে ট্যুর অপারেটিং ব্যবসায় যুক্ত না থেকে ব্যবসায়িক নেতা বনে যাওয়ার সুযোগ এখানে নেই।
কক্সবাজার নিউজ ডট কম (সিবিএন)-কে দেয়া সাক্ষাতকারে কথাগুলো বলছিলেন ‘ট্যুর অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার’ (টুয়াক)-এর সভাপতি তরুণ সংগঠক ও সমাজসেবক এম. রেজাউল করিম (রেজা)।
তিনি বলেন, ট্যুর অপারেটরদের ব্যবসার স্বার্থ সংরক্ষণ, ন্যায্য অধিকার আদায়, সৃশৃঙ্খল ব্যবসা পরিচালনায় সহায়তা, দক্ষ জনশক্তি গঠন, নতুন পর্যটন স্পট স্থাপনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে পরামর্শক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে ট্যুর অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন। আমাদের সংগঠনটি একমাত্র ট্যুর অপারেটর মালিক সংগঠন হিসেবে ট্রেড ইউনিয়ন থেকে নিবন্ধিত। যার নং-২৮৩৫।
আমাদের সংগঠন প্রকৃত ট্যুরিজম ব্যবসায় সম্পৃক্ত মালিকদের সংগঠন। কোন ভূইফোঁড় সংগঠন ও ব্যক্তি আমাদের সংগঠনে স্থান পাবেনা। প্রকৃত ট্যুর অপারেটরদের জন্য আমাদের সংগঠনটি কাজ করছে, কাজ করবে।
সিবিএনকে এম. রেজাউল করিম রেজা বলেন, অনেকে ট্যুরিজম ব্যবসার সাথে জড়িত নেই, নেই কোন অফিস ঠিকানা। ভাসমান অফিস দেখিয়ে ট্যুরিজম ব্যবসা চালাচ্ছে। অথচ সেই সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে কোন পর্যটক হয়রানীর শিকার ও প্রতারিত হলে ধরার কোন জায়গা নেই। নাম স্বর্বস্ব প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে প্রশাসন, পর্যটকসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক হওয়া দরকার। কোন প্রতারকচক্রের কারণে যাতে পর্যটকেরা কক্সবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষন না করে।
আপনারা এ পর্যন্ত কি কি কাজ করেছেন? জানতে চাইলে সংগঠনের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে মাননীয় পর্যটনমন্ত্রী, পর্যটন সচিব, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স, আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতি, কটেজ ব্যবসায়ী সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তাদের পরামর্শ নিয়েছি। সব স্তরের লোকজদের সাথে সমন্বয় করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
সোনাদিয়া, মাদারবনিয়া, কুতুমগুহাসহ বেশ কয়েকটি এলাকাকেন্দ্রিক নতুন পর্যটনের পরিকল্পনা রয়েছে। রিভার ক্রুজ-এর মাধ্যমে নতুন বিনোদনের চিন্তা করছে সংশ্লিষ্টরা। আমরাও কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিকমানের পর্যটন গড়তে চাই। আমাদের সংগঠনের তত্ত্বাবধানে ‘ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা শেখানো হবে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ভাষাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে শেখানো হবে।
প্রশাসনের দৃষ্ট আকর্ষণ করে ‘ট্যুর অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার’ (টুয়াক)-এর সভাপতি এম. রেজাউল করিম (রেজা) বলেন, পর্যটন মৌসুমে কার্ড স্বর্বস্ব পর্যটক ব্যবসায়ীদের কারণে পর্যটন নগরীর বদনাম হয়। আমরা অফিস নিয়ে সারা বছর পর্যটকসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছি। আর কিছু লোক শুধু মৌসুমী পাখি হয়ে হাকডাক করে বেড়ায়। তাদের ব্যাপারে সবমহলকে সজাগ থাকতে হবে। অনিবন্ধিত কেউ যাতে পর্যটন ব্যবসায় অনুপ্রবেশ করতে না পারে- সে ব্যপারে প্রশাসনকে তদারকি বাড়াতে হবে। ওইসব নাম স্বর্বস্ব ট্যুর অপারেটরদের কারণে ইতোমধ্যে অনেক পর্যটক হয়রানীর শিকার হওয়ার অভিযোগ আছে। তাদের ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন মহলে অবগত করেছি।
কোন রোহিঙ্গা যাতে কোন আবাসিক হোটেল ও রেস্তুঁরায় চাকুরীর অজুহাতে ঢুকে না পড়ে- সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান করেন ট্যুর অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন সভাপতি। সস্তা শ্রমের লোভে রোহিঙ্গাদের নিয়োগ না দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।