নুরুল আমিন হেলালী:
কক্সবাজার সদর উপজেলার অধিকাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় অন্তহীন সমস্যায় জর্জরিত। শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্যানিটেশন ব্যবস্থা,খেলার মাঠ,বিনোদনের উপকরণ,শিক্ষকস্বল্পতা সহ বিশুদ্ধ পানির আকাল দেখা দিয়েছে। ফলে সমস্যা জর্জরিত এসব বিদ্যালয়ে সু-শিক্ষার পরিবেশ প্রতিনিয়ত ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল। সদর উপজেলায় নতুন জাতীয়করণসহ প্রায় ১০৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অধিকাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সু-শিক্ষার পরিবেশ তৈরীতে নানান সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান বলে জানান খোদ সদর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: আবু শামীম। সরেজমিনে দেখা গেছে,শিক্ষক সংকট,বিশুদ্ধ পানির অভাব,টয়লেট সমস্যা,ও শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটানোর অন্যতম মাধ্যম খেলাধুলার মাঠ সমস্যা হল অন্যতম। সরকারী সুযোগ-সুবিধা শিক্ষার ক্ষেত্রে অধিক পাওয়ায় প্রতি বছর শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে,অবকাঠামো ও শিক্ষক সমস্যা প্রকট। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে খাবার পানির নলকুপ থাকলেও পানি স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা কখনো পরীক্ষা করানো হয়নি।এছাড়া কোন কোন বিদ্যালয়ে নলকুপ বিকল আবার কোন কোন বিদ্যালয়ে তাও নেই। বিশেষ করে রেজিষ্টার্ড থেকে সরাসরি জাতীয়করণ হয়ে যাওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অবকাঠামো থেকে শুরু করে অন্যান্য সমস্যা সবচেয়ে বেশি বিদ্যমান। ফলে এসব বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে অধিকাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরও নাজুক। এসব বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সরকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে মাঝে ভিজিট করার কথা থাকলেও কেউ যাচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে।অপরদিকে অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিনোদনের উপকরণ কিংবা খেলাধুলার কোন মাঠ নেই।যার কারণে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রাত্যাহিক সমাবেশ,শরীর চর্চা,বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ নানা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে না। প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকার কারনে অন্তহীন সমস্যায় জর্জরিত এসব বিদ্যালয়ের অবস্থা বেহাল।সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু শামীম আরো জানান, এখন পর্যন্ত ২৭ টি প্রধান শিক্ষকের পদ ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে দীঘদিন যাবৎ এবং সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ রয়েছে ৪৪ টি। বার্মিজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,টেকপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,কস্তুরাঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,খোনকারখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,চান্দের ঘোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ মাইজপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,ওয়াহেদরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,ভোমরিয়াঘানা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সদ্য জাতীয়করণ হওয়া কয়েকটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে জানা গেছে,সদরের অধিকাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নানামূখী সমস্যার এচিত্র। কয়েক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলে জানা যায়,নিজেদের বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত মাঠ না থাকায় প্রাত্যাহিক সমাবেশ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়া এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে কোন ধরনের খেলাধুলা সহ শরীর চর্চার সযোগ পাচ্ছে না। ঈদগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালেয়র প্রধান শিক্ষক ও সদর উপজেলা উত্তর জুন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম মনে করেন মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার মতো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত শরীর চর্চা শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হলে নিয়মিত শরীর চর্চাও হবে পাশাপাশি শিক্ষক সংকটও কিছুটা লাঘব হবে। সদরের কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই মুহুর্তে সদরের অধিকাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বড় সমস্যা শিক্ষক সংকট বলে আমরা মনে করি। এছাড়া যেসকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭ম, ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণি চালু রয়েছে তাদেরও বিভিন্ন সমস্যা বিদ্যমান। এমতাবস্থায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে সু-শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত কল্পে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন সচেতন মহল।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।