বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগে রাতে শহীদুল্লাহ হল থেকে এক সহযোগীসহ রানাকে গ্রেপ্তার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম।
এ সময় তাদের কাছে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতিতে ব্যবহৃত একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ আলী বলেন, মাস্টারকার্ডের মতো দেখতে পাতলা ওই ডিভাইসের ভেতরে মোবাইল সিম থাকে। আর পরীক্ষার হলে ব্যবহারের জন্য থাকে অতি ক্ষুদ্র লিসেনিং কিট। এই ডিভাইসের মাধ্যমে বাইরে থেকে হলের ভেতরে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করে উত্তর বলে দেওয়া যায়।
এই ডিভাইসসহ রানার সঙ্গে গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন অমর একুশে হলের ছাত্র, ফলিত রসায়নের প্রথম বর্ষে পড়েন তিনি। তারাই ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ‘মাস্টার মাইন্ড’ বলে প্রক্টরের ভাষ্য।ওই দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সকালে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল কেন্দ্র থেকে ইশরাক হোসেন রাফী নামে একজন ভর্তি পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
পরে রাফী জিজ্ঞাসাবাদে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে ছাত্রলীগ নেতা রানার কাছে এসেছিলেন তিনি। রানা তাকে ‘জেনিথ’ নামে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। তার সঙ্গে দুই লাখ টাকার চুক্তি হয় তার।
আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি এই চক্রে আর কারা জড়িত তা বের করতে রানা, রাফি ও মামুনকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিতে হস্তান্তর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিনহাজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই তিনজনের বিরুদ্ধে সাইবার অপরাধ আইনে মামলা করা হবে।
রানাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত কেউ ছাত্রলীগ করতে পারবে না। আমরা মহিউদ্দিন রানার বিষয়টি জানার সাথে সাথে তাকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছি।”
শেরপুরের ছেলে রানা ছাত্রলীগে জাকির হোসাইনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত বলে সংগঠনটির কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন।
রানা ঠাকুরগাঁও পাইলট হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ছাত্রলীগে সক্রিয় হয়ে লেখাপড়ায় অনিয়মিত ছিলেন তিনি। ছাত্রলীগের শহীদুল্লাহ হলের গত কমিটিতে পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন রানা।
এছাড়া এদিন ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক আরও ১২ শিক্ষার্থীকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।