ইমাম খাইর, সিবিএন:

খালেদা জিয়া সার্কিট হাউজে পৌঁছেছেন। রবিবার রাত ৮টার দিকে বিশাল গাড়ী বহরযোগে তিনি শহরের হিলটপ সার্কিট হাউজে ওঠেন। ওখানে তিনি রাত যাপন করবেন।

পথে পথে ব্যাপক সংবর্ধনা-অভ্যর্থনার মধ্য দিয়ে কক্সবাজারের সীমানায় ঢুকেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রবিবার বিকাল ৫টার দিকে তাকে চকরিয়া বাস স্টেশন এলাকায় অভ্যর্থনা জানানো হয়।

সোমবার সকাল ১১টায় উখিয়ায় বালুখালি পানবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প, বালুখালি-২, হাকিমপাড়া ও শফি উল্লাহকাটা ঢালা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করবেন খালেদা জিয়া।

এ সময় রাস্তার দুই পাশে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড প্রদর্শন করে সংবর্ধনা জানায় দলীয় নেতাকর্মীরা। সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও বেশ লক্ষ করার মতো। সড়কে শুধু মানুষ আর মানুষ। কক্সবাজারবাসী বেগম জিয়াকে কি পরিমাণ ভালবাসে ্এটি তার প্রমাণ।

 

রবিবার দুপুর সোয়া বারোটার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস ছাড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর আগে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের উদ্দেশ্যে শনিবার ঢাকা ছাড়েন তিনি।

পাঁচ বছর পর কক্সবাজারে বিএনপি প্রধানের এ সফরকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসা উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার তিনি উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করবেন। এ সময় তিনি প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে ত্রাণ দিবেন।

২০১২ সালে রামু বৌদ্ধ মন্দির পরিদর্শনে কক্সবাজার আসেন বেগম জিয়া ।সুদীর্ঘ ৫বছর পর তার আগমনে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে ধরণের উৎসবের আমেজ। দেখা দিয়েছে প্রাণ চাঞ্চল্য।

এদিকে তার সফরসূচি সফল ও তদারকি করতে শুক্রবারই কক্সবাজারে এসেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খানঁ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও জাতীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার সাথে রয়েছেন মির্জা ফখরুলসহ একডজন কেন্দ্রীয় নেতা। মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খাঁন কক্সবাজারে এসে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দদের সাথে দফায় দফায় মিটিংয়ে বসে সবকিছু তদারকী করছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের তারকামানের হোটেল লংবীচ এর লবিতে প্রেসব্রিফিংয়ে মুখোমুখি হন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি রোহিঙ্গাদের মাঝে আমরা রাজনীতি করতে আসিনি। তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখতে ও ত্রাণ সহায়তা দিতে এসেছি। ৩ বারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন আজ কক্সবাজারে পৌছবেন। আগামীকাল সকালে সড়কপথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করতে যাবেন। তিনি বেগম জিয়ার সফরসূচি সফল করতে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। তারা আশ^াস দিয়েছেন সর্বাত্মক সহযোগিতার। আশা করি সবাই এগিয়ে আসবেন।

জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ হিসেবে ১১০ টন চাউল, প্রসূতি মা ও শিশুদের মাঝে খাদ্যসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করবেন। তিনি গতকাল বিএনপি চেয়ারপাসনের পরিদর্শন স্থল ও ত্রাণ বিতরণের সম্ভাব্য এলাকা দেখে বলেন, আগের চেয়ে অনেক শৃংখলা ও সীমাবদ্ধতা ফিরে এসেছে। এজন্য তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি আওয়ামীলীগের সামলোচনা করে বলেন, বিএনপি শুরু থেকে রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয় ও সহযোগিতা করে আসছে। আর আওয়ামীলীগ লুটপাট ছাড়া কিছুই করেনি।

বিএনপির দপ্তর সূত্র আরো জানায়, ইতিমধ্যে জেলা বিএনপি ১৪ টি সাংগঠনিক ইউনিট গঠন করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এ উপলক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) বিকালে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্নাসহ পৌরসভা, বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়নের বিএনপি-অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বেগম জিয়ার সফর উপলক্ষে ৬টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিগুলো হলো- অভ্যর্থনা উপ-কমিটি, শৃঙ্খলা উপ-কমিটি, আপ্যায়ন উপ-কমিটি, অর্থ উপ-কমিটি, মিডিয়া উপ-কমিটি এবং ত্রাণ উপ-কমিটি। জেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা কমিটিগুলোর তত্ত্বাবধান করবেন।

সভায় চকরিয়ার উত্তর হারবাং থেকে শুরু করে জেলা প্রতিটি এলাকায় ও কক্সবাজার সার্কিট হাউজ এলাকা পর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ব্যাপক সংবর্ধনা দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জেলার ১৪টি সাংগঠনিক ইউনিটকে।

কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, খালেদা জিয়া উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে ত্রাণ বিতরণ করবেন। দলীয় চেয়ারপারসনকে জেলায় অভ্যর্থনা জানাতে বিএনপি ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। চেয়ারপারসনের আগমন উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।