হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ
বিজিবি টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ঝিমংখালী সীমান্তে পৃথক অভিযান চালিয়ে ২ কোটি ৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা মুল্যের ৬৯ হাজার ৯৫ পিস ইয়াবা বড়ি এবং ৪৬০ বোতল বিয়ার উদ্ধার করেছে। এঘটনায় ১টি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়েছে। তাছাড়া ইয়াবা পরিবহনের অভিযোগে সাবরাং পানছড়িপাড়া মোঃ আলী প্রকাশ আলুগোলার পুত্র মোঃ সামছুল আলমকে (২৫) পলাতক আসামী করা হয়েছে বলে জানা গেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজ দখলে রাখার অপরাধে পলাতক আসামীর বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করতঃ জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট ও মোটর সাইকেল টেকনাফ মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
টেকনাফ-২ বিজিবির অতিরিক্ত পরিচালক ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান ‘সাবরাং বিওপির নাঃ সুবেদার মোঃ আতিকুর রহমানের নেতৃত্ত্বে একটি টহল দল সাবরাং ইউপিস্থ পুরানপাড়া এলাকায় নিয়মিত টহলে গমন করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, সাবরাং ইউপিস্থ পুরানপাড়া মসজিদের পাশে পাকা রাস্তায় ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয়-বিক্রয় হতে পারে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে টহলদল দ্রুত বর্ণিত স্থানে গমন করে এবং রাস্তার পূর্ব পাশে অবস্থান নেয়। এসময় পুরানপাড়া হতে একজন লোককে মোটর সাইকেল নিয়ে টহল দলের সম্মুখে আসতে দেখে সন্দেহ হলে তাকে চ্যালেঞ্জ করে। এমতাবস্থায় মোটর সাইকেল আরোহী টহল দলের ৫০ গজ সামনে মোটর সাইকেলটি থামিয়ে দ্রুত দৌঁড়ে পাশ্বর্বতী গ্রামের ভিতর পালিয়ে যাওযায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে টহল দল উক্ত মোটর সাইকেলটি তল্লাশি করে মোটর সাইকেল এর হ্যান্ডেলের সাথে ঝোলানো কাপড়ের ব্যাগের ভিতর হতে ইয়াবা ভর্তি ১৯৬টি নীল রঙের প্যাকেট উদ্ধার করে। উক্ত প্যাকেটগুলো খুলে গণণা করে ১ কোটি ১৭ লক্ষ ২৮ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যমানের ৩৯ হাজার ৯৫ পিস মেটা এ্যামফিটামিনযুক্ত মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত মোটর সাইকেলটির মূল্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট সিজার মূল্য ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫০০টাকা। নিষিদ্ধ ঘোষিত মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজ দখলে রাখার অপরাধে পলাতক আসামীর বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়ের করতঃ জব্দকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট ও মোরট সাইকেল টেকনাফ মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে’।
তিনি আরও জানান ‘২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ ঝিমংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মোঃ ইব্রাহিম হোসেনের নেতৃত্বে একটি টহল দল ৫ নম্বর স্লুইচ গেইট এলাকায় নাফ নদীতে নিয়মিত টহলে গমন করে। পরবর্তীতে বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রের মাধ্যমে জানা যায় হোয়াইক্যং ইউপিস্থ ৫ নম্বর স্লুইচ গেইট এলাকা দিয়ে ইয়াবার একটি চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে টহল দল দ্রুত বর্ণিত স্থানে পৌছে ঔঁৎ পেতে থাকে। টহল দল সীমান্তের শুন্য লাইন অতিক্রম করে একটি হস্তচালিত নৌকা বাংলাদেশের দিকে আসতে দেখে নাফ নদীর কিনারায় আসার জন্য অপেক্ষারত থাকে। অতঃপর নৌকাটি নাফ নদীর কিনারায় আসা মাত্রই নৌকা হতে চার থেকে পাচঁজন ইয়াবা পাচারকারী ৫টি বস্তাসহ নৌকা হতে নামার সাথে সাথেই টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করে। আকস্মিক বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা মাত্রই ইয়াবা পাচারকারীরা বস্তাগুলো ফেলে রেখে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে দ্রুত দৌড়ে গ্রামের ভেতর পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে টহল দল ইয়াবা পাচারকারী কর্তৃক ফেলে যাওয়া বস্তাগুলো তল্লাশী করে ৯০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের ৩০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা মূল্যমানের মিয়ানমারের ৪৬০টি ডায়াব্লু বিয়ার ক্যান উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। মোট সিজার মূল্য ৯১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট ও বিয়ারগুলো ব্যাটালিয়ন সদরে জমা রাখা হয়েছে। যা পরবর্তীতে উর্ধতন কর্মকর্তা, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হবে’।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।