বিদেশ ডেস্ক:
রক্ষণশীলতা ঝেড়ে ফেলে অর্থনৈতিক অগ্রগতির নতুন পথ খুঁজছে সৌদি আরব। এ লক্ষ্যে আগামী বছর থেকেই বিদেশি নাগরিকদের ট্যুরিস্ট ভিসা দেবে দেশটি। বর্তমান সৌদি রাজার ছেলে এবং কমিশন ফর ট্যুরিজম অ্যান্ড ন্যাশনাল হেরিটেজ-এর প্রধান প্রিন্স সুলতান বিন সালমান বিন আবদুলআজিজ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সৌদি প্রিন্সের এ সাক্ষাৎকারটি বুধবার সিএনএন-এ সম্প্রচার করা হয়। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সরকার রক্ষণশীল দেশটিকে উন্মুক্ত করে দিতে চাইছে। অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে আয়ের নতুন নতুন উৎসের সন্ধান করা হচ্ছে।
বর্তমানে সৌদি আরবে বিদেশিদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ রয়েছে। আবাসিক কর্মী এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি, ব্যবসায়ী এবং হজযাত্রীরাই এখন দেশটিতে ভিসা পান। ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোতে ভ্রমণের জন্য হজযাত্রীদের বিশেষ ভিসা দেওয়া হয়। কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী যে কেউ ট্যুরিস্ট ভিসায় দেশটি ভ্রমণ করতে পারবেন।
কমিশন ফর ট্যুরিজম অ্যান্ড ন্যাশনাল হেরিটেজ-এর প্রধান বলেন, যারা এখানে আসতে চান এবং এই দেশ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভ করতে চান তাদের প্রতি লক্ষ্য রেখেই এই নিয়ম করা হয়েছে।
ভিসা পরিকল্পনা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যেই এর বাস্তবায়নে সরকার আশাবাদী। এছাড়া লোকজন যেন সহজে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন সেজন্য অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
এই মুহূর্তে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও সিংহাসনের পরবর্তী দাবিদার ৩২ বছরের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রক্ষণশীল ভাবমূর্তি থেকে দেশকে বের করে নিয়ে আসতে চাইছেন তিনি। তার ভাষায়, ‘অতীতে আমরা এই রকম রক্ষণশীল ছিলাম না। আমরা যেখানে ছিলাম ফের সেখানেই ফিরতে চাই— উদার ইসলামে ফিরতে চাই।’
দ্য গার্ডিয়ান’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর সৌদি আরবেও কট্টরপন্থী ইসলামের শেকড় বিস্তৃত হয়। আমরা জানতাম না, কিভাবে এটা মোকাবিলা করতে হতো। সমস্যা হচ্ছে এটা পুরো দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এখন সময় এ থেকে মুক্তি পাওয়ার।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের স্বপ্নের সৌদি শহর নিওম-এর প্রমোশনাল ভিডিওতে দেখা গেছে হিজাবহীন নারীদের, স্পোর্টস ব্রা পরে শরীরচর্চা করছেন তারা, পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নানা কাজে অংশ নিচ্ছেন নারীরা। ৫০ হাজার কোটি ডলার বা প্রায় ৪০ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরটি তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন সৌদি যুবরাজ। এছাড়া ২০১৭ সালের এপ্রিলে ঘোষিত ‘সৌদি ভিশন ২০৩০’-এর আওতায় বিনোদন শিল্পের উন্নয়নে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এসবের ধারাবাহিকতায় এবার ট্যুরিস্ট ভিসার ঘোষণা এলো।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।