মো:ফারুক, পেকুয়া:
পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের সুতাচোরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দানকৃত জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। বিরোধ নিম্পত্তিতে আদালতে মামলা দায়ের করা হলে পেকুয়া থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। পেকুয়া থানার ওসি’র নির্দেশে এসআই বিপুল চন্দ্র রায় বিরোধ নিরসনে দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। সোমবার ২৭ (নভেম্বর) দুপুরে সুতাচোরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্টিত হয়।
জানা গেছে, আরএস ২৮ বাট্টা ৬০ খতিয়ানের ১৭৮৪ বাট্টা ১৮৮২ দাগের আন্দর ৪০শতক জমির উপর ১৯৭২ সালে সুতাচোরা স্কুলটি প্রতিষ্টিত হয়। পরে এটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। দাতা হিসাবে এ জমি দান করেছিলেন মৃত মাষ্টার মো: ইদ্রিস। পরবর্তিতে তার ছেলে আনোয়ার হোসেন এ স্কুলটিতে দাতা সদস্য হিসাবে পরিচালনা করে আসছিলেন। কিন্তু স্কুলটির জমি ওই খতিয়ানের উপর ছিলনা দাবী করেন একই এলাকার মৃত আশরাফ মিয়ার ওয়ারিশ রেজাউল করিম গং। স্কুলের আসল খতিয়ান হল ২৮ বাট্টা ২৮ দাগের আন্দর ১৭৭৭ খতিয়ানের। যা তাদের প্রাপ্য সম্পত্তি। এ নিয়ে চরম বিরোধ দেখা দিলে ওই স্কুলের শিক্ষক মাষ্টার মোদ্দাসের মুরাদ চকরিয়া আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং১৩৭২/১৭ইংরেজি। যা বর্তমানে পেকুয়া থানায় তদন্তাধীন আছে এবং পুলিশ সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষ নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে রেজাউল করিম গং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখালেও আনোয়ার গং কোন ধরণের কাগজ দেখাতে পারেনি। যার কারণে পুলিশ জমিটি পরিমাপ করে যার জায়গা তাকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
রেজাউল করিম বলেন, সুতাচোরা স্কুলের জমিটি আমাদের। যা কাগজপত্র বিশ্লেষন করে বিভিন্ন বৈঠকে প্রমানীত হয়। কিন্তু আনোয়ার গং জোরপূর্বক তাদের দখলে রাখার চেষ্টা করছে। তারা কিছুতেই স্কুলের দাতা সদস্য হতে পারেনা। আমাদের জমি আমরাই স্কুলের দাতা সদস্য। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সুবিধার্তে বিরোধ মিমাংসায় শিক্ষক মোদাচ্ছের মুরাদ ভুমিকা রাখার চেষ্টা করণে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে আনোয়ার হোসেন। স্কুলের জমি প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া ও তার উপর হামলার ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। সোমবারের বৈঠকেও আনোয়ার হোসেন কোন ধরণের কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। যার কারণে পরিমাপ করে জমিটি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্কুলের জমি স্কুলে থাকবে। আমাদের দাবী প্রতিষ্টা করার জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।
স্কুল কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, স্কুলের জমিটি আসলে আনোয়ার হোসেন গংয়ের নয়। জমি প্রকৃত মালিক রেজাউল করিম গং। যা পরিমাপ করলে বের হয়ে আসবে। এ দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াও প্রভাব পড়ছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার জন্য প্রশাসনের নিকট দাবী জানান তিনি।
পেকুয়া থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) বিপুল চন্দ্র রায় বলেন, সুতাচোরা স্কুলের জমি বিরোধ নিয়ে মাননীয় আদালতে মামলা দায়ের করেন স্কুলের শিক্ষক মোদাচ্ছের মুরাদ। যার তদন্তভার দেওয়া হয় পেকুয়া থানার ওসি মহোদয়কে। তার নির্দেশে আমি সরেজমিন গিয়ে দ্রুত বিরোধ মিমাংসায় জমি পরিমাপ করার নির্দেশ প্রদান করি। পরিমাপে ওই জমির প্রকৃত মালিক যারা তারাই হবে স্কুলের দাতা।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।