শাহেদ মিজান, সিবিএন
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে যাত্রা করলো ‘রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড’। আজ ৩০ নভেম্বর সকাল ১১টায় এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই কক্সবাজার শহরের ঝাউতলায় নব প্রতিষ্ঠিত এই সামুদিক মৎস্য এ্যাকুরিয়ামের উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, রেডিয়েন্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ছিদ্দিক মিয়া চৌধুরী, কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যথিং অং, রেডিয়েন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান তুহুন্নেছা শিল্পী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেডিয়েন্ট গ্রুপের কর্ণধার শফিকুর রহমান চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ‘রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড’র জেনারেল ম্যানেজার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার কক্সবাজারের অনেক উন্নয়ন করেছেন। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, রেললাইন স্থাপন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ। এছাড়াও পর্যটনখাতে নানা প্রকল্প নানা উন্নয়ন করেছেন। আমাদের সরকারের এই উন্নয়নের সাথে সঙ্গী হলো রেডিয়েন্ট গ্রুপ। তারা ‘রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড’ নামে বিশ্বমানের এই এ্যাকুরিয়াম স্থাপন করে এই অবদান রেখেছেন। এই এ্যাকুরিয়াম কক্সবাজার পর্যটন খাতে এক নবদিগন্ত সংযোজন করেছে। এই জন্য রেডিয়েন্ট গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ‘এক সময় কক্সবাজারের পর্যটনের কেন্দ্র ছিলো ঝাউতলা। এখান থেকেই পর্যটকেরা তাদের ভ্রমণের যাত্রা করতো। কিন্তু ক্রমে ঝাউতলা সেই ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। এখন পর্যটনের সব উপলক্ষ্য কক্সবাজারের দক্ষিণ দিকে চলে যাচ্ছে। এমন মুহূর্তে এখানে রেডিয়েন্ট গ্রুপ বিশ্বমানের ‘রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড’ এ্যাকুরিয়াম নির্মাণ করেছেন। এই এ্যাকুরিয়াম ঝাউতলার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে দারুণ অবদান রাখবে। এই এ্যাকুরিয়াম রেডিয়েন্ট গ্রুপের নয়; আমাদের সম্পদ।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘রেডিয়েন্ট গ্রুপ বিপুল টাকা ব্যয় করে ‘রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড’ এ্যাকুরিয়াম নির্মাণ করেছেন। তারা এর অর্ধেক টাকা খরচ আরো বেশি মুনাফার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে পারতেন। কিন্তু তারা সেটা করেননি। তারা নিজেদের লাভের কথা চিন্তা না করে কক্সবাজারের উন্নয়নের জন্য বিশ্বমানের ফিস এ্যাকুরিয়াম নির্মাণ করেছেন। এই জন্য আমরা কক্সবাজারবাসী তাদের কৃতজ্ঞ। তাদের এই উদ্যোগে আমাদের সহযোগিতা করে যেতে হবে।’
জানা গেছে, ‘রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড’ দেশের প্রথম ও একমাত্র বেসরকারি এ্যাকুরিয়াম। কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক ও স্থানীয় মানুষের বিনোদন যোগাতে এই এ্যাকুরিয়ামের যাত্রা। । যা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে সংযোজন হয়েছে বিনোদনের নতুন সংযোজন হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এটি বিনোদন ছাড়াও দর্শনার্থীদের এ্যাডভেঞ্চারে শিহরিত করবে।
রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড এ্যাকুরিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুর রহমান চৌধুরী জানান, এটি মালেশিয়ার টেকনিক্যাল প্রকৌশলির সহায়তায় নির্মিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের এই এ্যাকুরিয়াম নির্মাণে সময় লেগেছে দুই বছর। এই এ্যাকুরিয়ামে বঙ্গোপসাগরের থাকা বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মৎস্য সংক্ষণ করা হয়েছে। অচেনা এবং বিলুপ্ত প্রায় অনেক মাছও রয়েছে। সাগরের বিলুপ্ত মাছ বিভিন্ন প্রাণী সংরক্ষণে একটি জাদুঘরও করা হচ্ছে। এটা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এটি সাগরের জীববৈচিত্র ও প্রাণী সম্পর্কে জানার একটি শিক্ষা কেন্দ্র।
এ্যাকুরিয়ামের তত্বাবধায়ক সমুদ্র বিজ্ঞানী মো: নুরুল বাকি জানান, এ্যাকুরিয়ামে রাখা হয়েছে সামুদ্রিক শৈল মাছ, হাঙ্গর, পিতম্বরী, আউস, শাপলা পাতা, সাগর কুচিয়া, বোল, পানপাতা, বোল, পাংগাস, চেওয়া, কাছিম, কাঁকড়া, জেলি ফিসসহ অর্ধশতাধিক প্রজাতির মাছ। কিছু বিরল প্রজাতির মাছও এখানে রয়েছে।
ভিডিও দেখতে নিচের লিঙ্ক ক্লিক করুন-
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।