মোহাম্মদ শফিক
কক্সবাজার ঝিলংজা বীজ বিপনন খামারের সহকারী পরিচালক সুমন চাকমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এই অনিয়ম-দুর্নীতি হাতেনাতে ধরলেন খোদ কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্স। তবে অভিযানে খবর পেয়ে টপ সয়েল কাটা শ্রমিক ও জড়িত রুবেল মল্লিকের নের্তৃত্বে সিন্ডিকেট পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর ইউএনও।
অভিযোগ ওঠেছে, প্রায় ১ একর সরকারী জমির টপ সয়েল (কৃষি জমির উপরি ভাগ) স্থানীয় একটি মাঠি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে বিক্রি করে পাশ্বাবর্তী পুকুর, জলাশয় ভরাটের মাধ্যমে ভিটে জমি তৈরির সুযোগ করে দেন সুমন চাকমা। এ খবরে গত শনিবার (২ ডিসেম্বর) বিকালে ইউএনও এবং কক্সবাজার সদর থানার এসআই খালেদসহ একদল পুলিশ ঝিলংজা মল্লিকপাড়ায় সরেজমিনে অভিযান চালালে টপ সয়েল বিক্রির ঘটনার সত্যতা পান। এসময় ঘটনাস্থল থেকে বীজ বিপনন খামারের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধানের সাথেও কথা বলেন ইউএনও।
অভিযোগে জানা গেছে, কক্সবাজার ঝিলংজা বীজ বিপনন খামারের সহকারী পরিচালক সুমন চাকমার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বীজ বিপনন খামারের মালিকানাধীন জমির ফসল, সরকারি পুকুর, খড়, নারকেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে দূর্নীতি করে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটিকে গিলে খাচ্ছিল সুমন চাকমা। শেষ পর্যন্ত সরকারী জমির টপ সয়েল বিক্রির মতো ঘটনা ঘটান। স্থানীয় সচেতন লোকজনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকালে ই্উএনও এবং কক্সবাজার সদর থানার এসআই খালেদ সহ একদল পুলিশ ঝিলংজা মল্লিক পাড়ায় অভিযান চালালে টপ সয়েল বিক্রির ঘটনার সত্যতা পান।
স্থানীয় বজেন্দ্র মল্লিকের ছেলে রুবেল মল্লিকের নেতৃত্বে, তুষার মল্লিক, সুবাস মল্লিক, মিদুল মল্লিক বাড়ি জাফরসহ প্রায় ১৫জনের একটি ভূমি খেকো সিন্ডিকেট প্রায় ১ মাস ধরে শত শত শ্রমিক দিয়ে সরকারি ফসলি জমির টপ সয়েল খুঁড়ে বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয় দেদারছে ভরাট করছে। এ পর্যন্ত প্রায় সরকরি ২০ লক্ষ টাকার মাঠি বিক্রি করে ফেলে। রুবেলের দাপটে এলাকার মানুষ অসহায়। তার সহায়তায় তৎকালীন জেলা প্রশাসকের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী সন্তুষ মল্লিক এবং বিজন্দ্র মল্লিক ড্রাইভার হত্যার ঘটনা ঘটে বলেও অভিযোগ ওঠে। তার এসব অপকর্মে যোগানদাতা হিসেবে কাজ করেন নিকটাতœীয় সুভাষ মল্লিক। যিনি কাস্টমস অফিসের সিপাহি হলেও এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।
সিপাহী সুবাষের অবৈধ ধন-সম্পদের খুঁজে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যদি মাঠে নামে তাহলে তাহলে সব রহস্য উৎঘাটন হবে বলে মনে করেন সেখানকার বাসিন্দারা।
তবে অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবী করে অভিযুক্ত রুবেল বলেন, কক্সবাজার ঝিলংজা বীজ বিপনন খামারের সহকারী পরিচালক সুমন চাকমাকে ম্যানেজ করে তারা মাটি কাটছে।
এব্যাপারে বীজ বিপনন খামারের সহকারী পরিচালক সুমন চাকমার বক্তব্য নেওয়ার জন্য বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকারী জমির টপ সয়েল বিক্রি করে পাশ্ববর্তী পুকুর, জলাশয় ভরাটের সত্যতা পেয়েছি। এছাড়া মাঠি কাটার মুল সিন্ডিকেট রুবেলসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সুমন চাকমার বিরুদ্ধেও তদন্ত টিম গঠন করা হচ্ছে। এব্যাপারে বীজ বিপনন খামারের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রধানের সাথে কথা বললে তিনিও একই বক্তব্য প্রদান করেন।