উখিয়া উপজেলা পরিষদের প্রথম ও সফলতম চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী। দীর্ঘদিন ধরে কোনো ধরণের ক্ষমতায় না থাকলেও উখিয়ার সাধারন মানুষের মাঝে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ তিনি। বিশাল মনের অধিকারী এই রাজনীতিবিদ সাধারন মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। নিস্বার্থ, পরোউপকারী ও বিপদের বন্ধু হিসেবে উখিয়ার গরীব, অসহায় ও বিপদগ্রস্থ মানুষের কাছে তিনি একজন প্রাণপুরুষ। জনদরদী, সজ্জন, নির্লোভ, নিরহংকারী, অমায়িক, দানবীর, অসিম সাহস আর বন্ধুসুলভ ব্যবহারের কারনে মাহামুদুল হক চৌধুরী উখিয়া উপজেলার অন্য সকল রাজনীতিবিদের চেয়ে আলাদা । বিপদে সব সময় কাছে পাওয়ায় উয়িখার মানুষ তাঁকে কিংবদন্তি ও অবিসংবাদিত নেতার আসন স্থান দিয়েছেন।শুধুু তাই নয়; তার এই সব গুনাবলীর কারনে উখিয়ার গন্ডি ছাড়িয়ে কক্সবাজার জেলাজুড়ে তাঁর সুনাম রয়েছর রয়েছে।
গত ৪ ডিসেম্বর তাঁর ৫৬ তম জন্মদিন। জন্মদিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁকে যেভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছে তাই প্রমাণ করে তিনি কতটা জনপ্রিয় মানুষ।
উখিয়ার হলদিয়ার চৌধুরীপাড়ায় সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারের জন্মগ্রহন করেন মাহমুদুল হক চৌধুরী। তার পিতা বখতিয়ার আহম্মদ চৌধুরী ছিলেন কক্সবাজারের অন্যতম জমিদার। বখতিয়া আহম্মদ চৌধুরী ছিলেন মুক্তিযোদ্ধেরর অন্যতম সংগঠক। মুক্তিযোদ্ধা চলাকালীন সময়ে হলদিয়া পালং আওয়ামীলীগকে সংগঠিত করেছেন বখতিয়ার আহম্মদ চৌধুরী। যার কারনে পাক হানাদার বাহিনী তার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে ছিলো। বখতিয়ার চৌধুরীকে ধরেনেয়ার জন্য বেশ কবার তার গ্রাম চৌধুরী পাড়ায় অভিযান চালিয়েছিলো পাক বাহিনী। পাক বাহিনী ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার পরে মাহামুদুল হক চৌধুরী তার পিতা ও পরিবারের সাথে প্রায় ৬ মাস পালিয়ে ছিলো। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭১ সালের ২০ ডিসেম্বর তারা নিজ গ্রামে ফিরে আসলেও ঘরবাড়ি কিছুই ফিরে পায়নি।
মাহমুদুল হক চৌধুরীর নিজ গ্রামের রুমখা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেনী শেষে উখিয়ার বিখ্যাত রত্না পালং উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঐ কলেজ থেকেই ১৯৮২সালে বিকম পাশ করেন। লেখা-পড়া শেষ করেই জনসেবারর নেমে পড়েন। ১৯৮৪ সালে তরুণ বয়সেই হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত। এক বছর পর সাবেক সংসদ সদস্য ও বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরীকে পরাজিত করে উখিয়া উপজেলার প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ক্ষমতায় আসীন হয়ে তিনি একবারও নিজের স্বার্থের কথা ভাবেননি। সব সময় মানুষের কথা ভেবেছেন। তাদের স্বার্থের জন্য কাজ করেছিলেন। মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন রাতদিন। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা কালিন তার উন্নয়নের কর্মকান্ড এখো উখিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গেলে দেখা যায়। তার আচরণ থেকে কোনোভাবেই তিনি মানুষের মনে কষ্ট দেননি। মানুষের বিপদ-আপদে রাতদিন তিনি ছুটতেন অনায়সে। ধনী-গরীব তার কাছে কোনো ভেদাভেদ ছিলো না। বরং গরীবের জন্য তার সহানুভূতির হাত আরো বেশি প্রসারিত থাকতো। একই ভাবে নিজের আখের না গুছিয়ে এলাকার উন্নয়ন করেছেন অভাবনীয়।
মাহমুদুল হক চৌধুরী ক্ষমতায় নেই বহুকাল। কিন্তু তিনি জনমানুুষকে থেকে বিচ্ছিন্ন হননি কখনো। ক্ষমতায় না থেকেও সব সময় মানুষের পাশে থেকেছেন। সমানভাবে মানুষের সুখ-দু:খের সাথী হয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোনো মানুষকে তাঁর কাছে সহযোগিতা না পেয়ে খালি হাতে যেতে হয় না। যেভাবে-যতটুকু পারেন তিনি বাড়িয়ে দেন সহযোগিতার হাত।
স্থানীয় লোকজন জানান, মাহমুদুল হক চৌধুরী দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকলেও তিনি কখনো উখিয়ার মানুষের কাছ থেকে হারিয়ে যাননি। কোন মানুষ বিপদে পড়লে সবার আগে ছুটে আসা তার সবচেয়ে বড় গুন। ক্ষমতার বাইরে থেকেও মানুষের নিত্যদিনের সমস্যাসহ নানা সমস্যা সমাধানে তিনি অবদান রাখেন। একই ভাবেই মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য ভাত্রিত্ব পূর্ণ পরিবেশ রক্ষায়ও তাঁর মন্ত্রমুগ্ধ অবদান ম্যাজিকের মতো কাজ করে। উখিয়ার যেকোন স্থানে মাহমুদুল হক চৌধুরী গেলে সাধারণ মানুষ ছুটে আসে তাঁর কাছে। তাঁর সাথে ভাগাভাগি করে সুখ-দু:খের জীবন কথা। সমস্যা বা নানা করণীয়তে তিনি যে সিদ্ধান্ত দেন তাঁর হেরফের করে না কেউ। তাই উখিয়া-টেকনাফের বর্তমান সংসদ সদস্যা আবদুর রহমান বদিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও সমাজপতিরা মাহমুদুল হক চৌধুরীর পরামর্শ, সহযোগিতা নেন। তাই শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার আসনে তুলনাহীন এক প্রতিকৃতি হয়ে এক উচ্চ আসনে আসীন হয়ে আছেন তিনি।
রাজনৈতিক ভাবে গন্ডিবদ্ধ হলেও সামাজিক ভাবে মাহমুদুল হক চৌধুরী সার্বজনীন এক ব্যক্তি। দল-মত নির্বিশেষে সকলে তাঁকে সমান ভালোবাসেন। তিনিও রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা পেছনে ফেলে সকলের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেন।
উখিয়া সোনারপাড়া সোনা মিয়া প্রকাশ সোনা বরী বলেন, ‘মাহমুদুল হক চৌধুরী একজন নেতা। নেতা হয়ে তিনি কখনো নেতাগিরি করেননি। নেতার প্রকৃত গুণাবলী হিসেবে মানুষের সেবা করেছেন। মানুষকে ভালোবেসেছেন। সর্বোপরি মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তাঁর কাছে গিয়েও অসন্তোষ হয়ে ফেরেননি। মানুষও এর প্রতিদান দিয়েছেন। ক্ষমতায় না থেকেও মানুষ তাঁকে মনে রেখেছে। তাঁর জন্য এখনো মানুষ পাগল।’
উখিয়ার বাসিন্দা ও কক্সবাাজারের তরুণ সাংবাদিক আহসান সুমন বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে ওনি পরিচ্ছন্ন একজন রাজনীতিবিদ। তিনি একজন জনবান্ধব, দানবীর, সাহসী মানুষ। মানুষের সেবা করার মধ্যে দিয়ে তাঁর সারা জীবন কেটে গেছে। আমার বয়স পর্যন্ত দেখেছি সব সময় জনগণ নিয়ে সম্পক্ত থেকেছেন এই মানুষটি। তিনি জনগণের কাছে থাকেন এবং খুব সহজেই জনগণের ভিতরে ঢুকে দু:খ-দর্দশা, কষ্ট বুঝে নিতে পারেন। রাজনৈতিক ও দেশের পট পরিবর্তনের কারণে রাজনীতিতে একটু ঝিমিয়ে আছেন। কিন্তুু কঠিন বাস্তবতা হচ্ছে, রাজনৈতিক ভাবে যতই কিছু হোক না ব্যক্তি মাহমুদুল হক চৌধুরী হিসেবে তিনি এখনো তুমুল জনপ্রিয়। তিনি আসলেই অত্যন্ত একজন ভালো মানুষ। এই ধরণের মানুষের যুগ যুগ ধরে ক্ষমতায় থাকা দরকার।’
অন্যদিকে জন্মদিনে তিনি যেভাবে শুভেচ্ছা পেয়েছেন তাও অবিশ্বাস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরব না হলেও তাঁর জন্মদিন তাঁকে ঠিকই মনে করেছেন সর্বস্তরের মানুষ। ভক্তসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় আর ভালোবাসা মাখানো শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন তিনি।
ফেসবুকে একজন লিখেছেন, “উখিয়া মাটি মানুষের অবিসংবাদিত নেতা জনাব আলহাজ মাহমুদুল হক চৌধুরী সাহেবের শুভ জন্মদিনে আন্তরিক অভিনন্দন।”
আবদুল্লাহ আল মামুন নামে একজন লিখেছেন, “আপনার সম্পর্কে বলার মতো কিংবা লেখার মতো শক্তি-সাহস/ যোগ্যতা কোনটাই আমার নেই। এটা কামনা করি আপনি হাজারো মানুষের ভালোবাসায় শত বছর বেচেঁ থাকুন। শুভ জন্মদিন। “
সিরাজুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, “আমার শ্রদ্বেয় বড় ভাই জনাব মোহাম্মদুল হক চৌধুরীর দীর্ঘায়ু কামনা করছি, এবং তাহার সুস্বাস্হ ও কামনা করছি তিনি একজন এদেশের মহান ব্যক্তিত্ববান মনের অধীকারী হয়ে এদেশে গণমানুষের হৃদয়ে চির স্থান করেই নিয়েছেন। অমর হয়ে থাকবে যেন তার স্মৃতিবিজড়িত দেশ ও জাতি সেবামুলক দৃশ্যগুলো থাকবে আমরণ হৃদয়ের মালা হয়ে। পরিশেষে এই নব জাতকের দীর্ঘায়ু কামনা ও সুন্দর মুস্তাকিনের জীবনে অধিষ্টিত হোক”
তালেব সিকদার নামে একজন লিখেছেন “একেক ফুলের একেক ঘ্রাণ। ওনি এমন এক ঘ্রাণ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সুভাসিত করে যান। উখিয়াবাসীর হৃদয়ের স্পন্দন, চিরযুবা আলহাজ্ব মাহমদুল হক চৌধুরীর শুভ জন্মদিনে প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। সেই সাথে ওনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।”
পারভেজ কক্স নামে একজন লিখেছেন, “উখিয়া উপজেলার সর্ব প্রথম সাবেক সফল উপজেলা চেয়ারম্যান, উখিয়ার মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা জনাব মাহাম্মদুল হক চৌধুরী আংকেলের শুভ জন্মদিন, আপনি আমাদের মাঝে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকেন।”
প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি কেন এত জনপ্রিয় তা আমি জানবো না। এটা শুধু জনগণই বলতে পারবে। তবে একটুকু বলতে পারি, আমার ধ্যান-জ্ঞান জুড়ে আমার জনগণ। সারা জীবন আমি এভাবে জনগণের কাছে থেকে জীবন কাটিয়ে দিয়েছি। আগামীতে যতদিন বাঁচি তাও সেভাবে কাটাবো বলে কথা দিচ্ছি। তার জন্য সকলের দোয়া চাই। আর আমার ৫৬ জন্মদিনে যারা আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে তারাসহ উখিয়ার সকল জনসাধারণনকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের প্রথম ও শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল সিবিএন’র সম্পাদক অধ্যাপক আকতার চৌধুরী মাহমুদুল হক চৌধুরীর ভাতিজা ও যমুনা টিভির কক্সবাজার প্রতিনিধি ইমরুল কায়েস চৌধুরী তাঁর পুত্র।
লেখক: শাহেদ মিজান, চীফ রিপোর্টার- দৈনিক সকালের কক্সবাজার ও সিবিএন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।