জসিম মাহমুদ :
বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েছেন সাত শতাধিক পর্যটক। এ ছাড়া ভ্রমণে আসা প্রায় তিন হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিনে যেতে পারেননি।

বঙ্গোপসাগর নিম্নচাপের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়া ৩নং সতর্ক সংকেত থাকায় শনিবার সকালে টেকনাফ থেকে কোনো জাহাজ সেন্টমার্টিন যায়নি। ফলে পর্যটকরা ফিরতে পারছেন না। তবে আটকাপড়া পর্যটকরা নিরাপদে আছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। গত শুক্রবার সকালে আটকাপড়া পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে গিয়েছিলেন।

সেন্টমার্টিনে আটকা পড়া ঢাকা পেট্রোবাংলার সহকারী ব্যবস্থাপক (সাধারণ) জিয়াউল করিম বলেন, শুক্রবার সকালে পরিবার নিয়ে এখানে আসি। বেড়াতে এসে আটকা পড়লাম। আমার মতো বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অনেক কর্মী আটকা পড়েছেন।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী আবহাওয়াবিদ উজ্জ্বল কান্তি পাল বলেন, নিম্নচাপটি আরও উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ৩নং সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাগর ও নাফ নদীতে মাছ শিকার ও পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

পর্যটকবাহী জাহাজ কেয়ারি সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম বলেন, সাগর উত্তাল ও বৈরি আবহাওয়ার জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে ভ্রমণে আসা প্রায় সাত শতাধিক মতো পর্যটক দ্বীপে রয়েছেন। তারা বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে নিরাপদে আছেন। সাগর স্বাভাবিক হয়ে গেলে সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনা হবে। তাছাড়া শনিবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে প্রায় পাচঁ শতাধিক পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারেননি। ফলে যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দিতে হয়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, শুক্রবার সন্ধায় হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সেন্টমার্টিনের হাজার খানেক পর্যটক আটকা পড়েছিল। এর মধ্যে শনিবার সকালে ঝুকি নিয়ে ট্রলারে করে প্রায় তিন শতাধিক পর্যটক টেকনাফ ফিরে গেছেন। এরপর দ্বীপে সাত শতাধিক পর্যটক আটকা পড়ে। তাদের যাতে খাদ্যসহ কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, সে ব্যাপারে খেয়াল রাখা হচ্ছে।

সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতির আহ্বায়ক সিদ্দীকুর রহমান বলেন, ‘সাধারণত ডিসেম্বর মাসে পর্যটকের চাপ একটু বেশি থাকে। আগাম বুকিং হলেও আজ জাহাজ আসতে না পারায় আমাদের প্রচুর ক্ষতি হবে। তবে যাঁরা আটকা পড়েছেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে অর্ধেক ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।’

টেকনাফ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে নৌরুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেন্টমার্টিনে আটকাপড়া পর্যটকদের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই নিরাপদে আছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।