ডেস্ক নিউজ:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন দেশসহ নানা মহল থেকে দাবি উঠেছে। এমন দাবির আড়ালে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো বোঝায় বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি ‘নির্ভর’ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ভাবনা নেই ক্ষমতাসীন দলের।
দলটির একাধিক নীতিনির্ধারক ও খোদ সরকারপ্রধানও এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে কি বরণডালা পাঠাতে হবে? যে কোনো রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে অবশ্যই নির্বাচনে আসবে। কোনো দল নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, সেটা সেই দলের সিদ্ধান্ত।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনার কোনো উদ্যোগ নেয়ার বিষয় নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি নাকে খত দিয়ে এবার নির্বাচনে আসবে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী নেতারা বলছেন, বাংলাদেশে ৪১টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে সে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না- এমন কথা যারা বলেন, তাদের একটা দূরভিসন্ধি রয়েছে। কোনো দল নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, সেটা সেই দলের নিজস্ব বিষয়।
দলটির নেতারা মনে করেন, বিএনপির শর্ত মেনে নিয়ে তাদের নির্বাচনে নিয়ে আসার অর্থই হচ্ছে সংবিধানের বাইরে যাওয়া। সংবিধান অনুযায়ী কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধা নেই। সেক্ষেত্রে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ জাগো নিউজকে বলেন, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণতন্ত্রকে আরো সুসংহত করতে এগিয়ে আসবে।
‘বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে তা অংশগ্রহণমূলক হবে না- এমন ধারণা ঠিক নয়। নির্বাচনে বিএনপি আসলো, অন্য দলগুলো আসলো না- তাহলে কি অংশগ্রহণমূলক হবে? নিশ্চয়ই নয়। এক-আধটা দল আসলো কি আসলো না, সেটা আওয়ামী লীগ ভাবছে না’- যোগ করেন তিনি।
দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের নামে কোনো কোনো উন্নয়ন সহযোগী বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে চায়। এর সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ কিছু শক্তিও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে বিএনপির অংশগ্রহণকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কাউকে নাক গলাতে দেবে না। অন্যদিকে বিএনপিনির্ভর ভাবনায় না থেকে সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান অব্যাহত থাকবে।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য কোনো প্রকার বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণের ভাবনায় আওয়ামী লীগ নেই। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সেই নির্বাচন পরিচালনায় কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে। নির্বাচনকালীন সরকার রুটিন-ওয়ার্ক করবে। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিভিন্ন মহলের দাবি পাত্তা না দেয়ার কৌশল নিয়েই এগোবে দলটি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের নামে যারা বিএনপির অংশগ্রহণ খোঁজে তাদের ভেতর একটা দূরভিসন্ধি আছে। আমরা মনে করি বাংলাদেশে ৪১টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত আছে। সুতরাং এক বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না- এমনটা বলা যাবে না।
তিনি বলেন, বিএনপির বাইরেও যে সব রাজনৈতিক দল আছে, রাজনৈতিক শক্তি আছে নিশ্চয়ই তারা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এ নির্বাচন কমিশনের ওপরও তাদের আস্থা আছে এবং নির্বাচনকালীন সরকারের ওপরও তাদের আস্থা থাকবে। সুতরাং সেই নির্বাচন অবশ্যই অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।