আনোয়ার হোছাইন ঈদগাঁও :
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে উপকূলীয় বনবিভাগের গাছ লুটেরা ঘটনায় নগদ টাকা লেনদেন ও লুটকৃত কয়েক লক্ষ টাকার গাছ উদ্ধার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার পরিবর্তে উল্টো তাদের রক্ষা করতে এবং অবশিষ্ট গাছ লুটের সুযোগ করে অফিসিয়ালি নানা ফন্দি পিকিরের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিরুদ্ধে । এ নিয়ে এলাকাবাসী ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,ঈদগাঁও-চৌফলদন্ডী উপকূলীয় সড়কের জালালাবাদ পালাকাটা অংশের এক কিলোমিটার মতো সড়কের উভয় পাশে উপকূলীয় বন বিভাগ কতৃক ২০০১ সালে রোপিত শতশত গাছ গত ৩০ ডিসেম্বর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সশস্ত্র কাঠ পাচারকারী দিয়ে জালালাবাদ ইউনিয়নের বটতলী পাড়ার মৃত মুসলিম উদ্দীনের ছেলে কাঠ পাচারকারী নাজিমুদ্দিন কেটে পাচার করলেও স্থানীয় উপকূলীয় বিট কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত )শাহ আলম রহস্যময় কারণে অভিযানে আসেনি।পরে সকাল ১১টার দিকে মহেশখালী থেকে রেন্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক এসে যতক্ষণে অভিযান শুরু করে এর পূর্বেই কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের  গাছ পাশের ঈদগাও বাজারের এক অবৈধ করাত কলে পাচার করে। তাৎক্ষণিক উক্ত লুটকৃত গাছ উদ্ধার ও ঘটনাস্থকৃলে পাওয়া কাঠ লুটকারী নাজিমকে রহস্যময় কারণে আটক করেনি। এমনকি গাছ লুটের দুই দিন পরও লুটকারীর বিরুদ্ধে মামলা এবং করাতকলে পাচারকৃত কাঠ উদ্ধারে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ । উল্টো থানায় অভিযোগের আইওয়াশ করে কাঠ পাচারকারী থেকে অবৈধ উপায়ে নেয়া টাকা জায়েজে নানা ফন্দি করছে । এতে করে বেরিয়ে আসছে গাছ লুটের পূর্বে বন বিভাগ ও বিভিন্ন মহলের সাথে অবৈধ লেনদেনের গুরুতর তথ্য । এদিকে গাছ লুটের ঘটনায় মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিট কর্মকর্তা, রেঞ্জার এবং বিভাগীয় বন কর্মকর্তার তিন ধরণের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে লুটকারীর সাথে বন বিভাগের মোটা অংকের অবৈধ লেনদেন হয়েছ।

ঘটনার দুইদিন পর বিট কর্মকর্তা জাফর আলম (01762188241) জানান মামলা হয়েছে। রেন্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক (01742887702) বলেন মামলার প্রস্ততি চলছে এবং করাত কলে পাচারকৃত কাঠ উদ্ধারে উপরের নির্দেশের দোহাই দেন এবং বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও 01819655811) বলেন থানায় অভিযোগ হয়েছে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। সচেতন মহলের অভিযোগ দিবালোকে সরকারের লাখো টাকা মূল্যের গাছ লুটের ঘটনা কি বন বিভাগের কিছু দূর্নীতিবাজ লোকের কারণে ধামাচাপা পড়বে? রক্ষা পেয়ে যাবে চিহ্নিত কাঠ পাচারকারী চক্র ! উদ্ধার হবেনা লাখো টাকা মূল্যের লুটকৃত কাঠ!

এঘটনায় মোটা অংকের লেনদেনের সত্যতাও পাওয়া গেছে। বিষয়টি গতকাল ঈদগাঁওর বিভিন্ন মহলে ব্যাপকভাবে চাউর হয়েছে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত সংবাদ মিডিয়ায় ফলাওকরে প্রকাশিত হয়েছে।এদিকে গাছ কর্তন, পুলিশ ও বনবিভাগের এ অভিযানটি গত দুদিন স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচিত হতে থাকে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকেও লেখালেখি হচ্ছে। সৌদি আরব থেকে মোর্শেদ হাসান নামের একজন ফেইসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেন যে, মামলা না করার জন্য এ ঘটনায় ৬৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। স্থানীয় ইউপি মেম্বার আরমান উদ্দীন মোর্শেদ এ টাকার লেনদেন করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। লেনদেনকৃত টাকার মধ্যে বন কর্মকর্তা শাহ আলমের জন্য ৫০ হাজার, পুলিশ কর্মকর্তার জন্য ১০ হাজার এবং এক সাংবাদিকের জন্য ৫ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে । অন্যদিকে মেম্বার আরমান উদ্দীন মোর্শেদ এ স্ট্যাটাসের প্রতি উত্তরে অপর এক স্ট্যাটাসে বলেন, তিনি কারো শ্রমিক নন যে, টাকার লেনদেন করবেন। এ বিষয়ে তিনি তার আত্মীয় মোর্শেদ হাসানকে উল্টো দোষারোপ করে ঘটনার ব্যাপারে তার ভাই চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদের কাছ থেকে জেনে নেয়ার পরামর্শ দেন। অপরদিকে গিয়াস উদ্দীনও টাকা লেনদেনের বিষয়টি এক প্রকার স্বীকার করেছেন। তবে কাকে বা কার মাধ্যমে করেছেন তা তিনি স্পষ্ট করেননি।