ইমাম খাইর, সিবিএন:
দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার তথা সিএইচসিপিরা। সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার কাঠামো সিএইচসিপি দ্বারা নির্মিত ও পরিচালিত। কিন্তু যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সেবায় সরকারের সুনাম, তাদের চাকুরী ৬ বছরেও জাতীয়করণ করা হয়নি। আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন করা হচ্ছেনা। সিএইচসিপিদের অবমূল্যায়ন করে ‘এসডিজি’ অর্জন সম্ভব নয়।
এদিকে চাকুরী জাতীয়করণের দাবি নিয়ে আবারো মাঠে নেমেছেন বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (২০ জানুয়ারী) সকাল থেকে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এর ডাকা অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালিত হয়েছে।
কর্মসূচির প্রথম দিনে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গনে অবস্থান ও কর্মবিরতি চলাকালে কোন সেবাপ্রার্থী সেবা পায়নি। কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে যাওয়া জনগন শুন্য হাতে ফিরে গেছে।
সকাল ৯টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়ে বিকাল তিনটা পর্যন্ত চলে। এ সময় উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিছবাহ উদ্দিনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) কক্সবাজার জেলা সভাপতি রফিকুল হাসান এর নেতৃত্বে প্রথম দিনের কর্মসূচিতে সংগঠনটির উখিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান জিয়া, সিএইচসিপি আব্দুল হামিদ খাঁন, অজিৎ বডুয়া, শামিমা নাসরিন, সুরাইয়া, তাসলিমা, জাহাঙ্গীর আলম, মঈন উদ্দিন, নুরুল আবছার, জালাল আহমদ, মুহসিনা শারমিন, সুশমিতা বডুয়া, শাওরিন জাহান, তাছলিমা, পারভিনা আক্তারসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
২২ জানুয়ারী পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে এ কর্মসূচি পালিত হবে। ২৩ জানুয়ারী সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সিভিল সার্জন অফিস প্রাঙ্গন এবং ২৭ থেকে ৩১ জানুয়ারী ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সিএইচসিপি সদস্যরা।
কক্সবাজার জেলার ৮ উপজেলায় ১৭২ জন সিএইচসিপি সদস্য রয়েছে। সংবিধানের ২২ (খ) ধারা বাতিলের দাবিতে সিএইচসিপিদের এ আন্দোলন।
বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) কক্সবাজার জেলা সভাপতি রফিকুল হাসান জানান, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে ১৪ হাজার সিএইচসিপি ২০১১ সাল থেকে নিরলসভাবে কাজ করছে। ২০১৩-২০১৪ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ৪৬৬৮ নম্বর স্মারকে সিএইচসিপিদের চাকরি স্থায়ী করার বিষয়টি জানানো হয়। পরে ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল ৬৭১ নম্বর স্মারকে তাদের চাকরির গোপন প্রতিবেদন (এসিআর) খোলার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর এ বিষয়ে আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তারা কর্মসূচি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের চাকরি অবিলম্বে জাতীয়করণের দাবি জানান তারা।
তিনি জানান, আগামী ২০-২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশের প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মবিরতি। ২৩ জানুয়ারি সিভিল সার্জেন কার্যলয়ে অবস্থান ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান।
এরমধ্যে দাবি মানা না হলে আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে ঢাকায় অবস্থান করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এরপরও দাবী মেনে নেয়া না হলে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করবে সিএইচসিপি সদস্যরা।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এই হেলথ কেয়ারগুলোকে রাজস্ব খাত থেকে একটি ট্রাস্ট আইনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
সিএইচসিপি সূত্র জানায়, জাতীয় বেতন কাঠামোয় সবার বেতন বাড়লেও তাদের বেতন বৃদ্ধি না করে ১৪ নম্বর গ্রেডেই রাখাতে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।