নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমী বহুগুণে গুণান্বিত একটি ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই স্কুলের শিক্ষা কারিকুলাম তথা শিক্ষা, আদব কায়দা, শৃংখলা, পড়ালেখা সত্যি প্রশংসনীয়, যা দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনুকরণীয়। একদিন এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা অত্র জেলার গ-ি পেরিয়ে দেশ-বিদেশে সুনাম বয়ে আনবে।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বিকালে বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, শিক্ষাবিদ এম এম সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে সুদক্ষ শিক্ষকমন্ডলীর পরিচালনায় অত্র বিদ্যালয় হাঁটি হাঁটি পা পা করে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চলেছে। নিজস্ব গতিতে এ প্রতিষ্ঠান আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ভাল ছাত্র হওয়ার জন্য ভালভাবে পড়ালেখা করতে হবে। লেখাপড়ার প্রতি যতœশীল হয়ে নিজেকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, স্কুল জীবনই বাস্তব জীবনের মূল বুনিয়াদ। ভাল ফলাফল ছাড়া জীবনে স্বার্থকতা বয়ে আসবেনা। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় এগুতে হবে।

বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক ও একাডেমীর পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব এম.এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার এডভোকেট তোফায়েল আহমদ, কক্সবাজার সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন ও কক্সবাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সোহেল ইকবাল। উপস্থিত ছিলেন বায়তুশ শরফ হাসপাতালের যুগ্ম-সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস.এম কামাল, একাডেমীর প্রাত শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক, সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ তৈয়বসহ শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।

অনুষ্ঠানের সভাপতি আলহাজ্ব এম.এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, বায়তুশ শরফই একমাত্র ধর্মীয় গোড়ামীমুক্ত ব্যতিক্রমধর্মী একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ছাত্র-ছাত্রীরা অধ্যয়ন করছে। ক্রীড়া, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে আরো বেশি অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে যোগ্য নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলবে। বক্তব্যকালে তিনি মাদকাসক্তি, নকল প্রবণতা ও দূর্নীতি থেকে তরুণ প্রজন্মকে দূরে থাকার জন্য শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

একাডেমীর ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম খাঁনের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ছৈয়দ করিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষক নিজামুল বাহার ও ইমতিয়াজ হাসান। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টায় বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শুভ উদ্বোধন করেন কক্সবাজার সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মীর জাফর আহমদ। এতে তিনি বলেন, ক্রীড়া, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে নিজেকে যোগ্যতর মানুষ হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শুধু মাত্র শারীরিক দক্ষতা প্রদর্শন করলে চলবে না, পাশাপাশি জ্ঞান চর্চার মধ্য দিয়ে নিজের সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করতে হবে। বর্তমান যুগে নিজেকে যোগ্য নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলতে প্রয়োজন মেধার প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে জ্ঞান চর্চার কোন বিকল্প নেই।

তিনি আরো বলেন, অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মেধার প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে এই বিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আনবে। তিনি অত্র বিদ্যালয়ের ভূঁয়সী প্রশংসা করে আরো বলেন, এখানকার শিক্ষার মনোরম পরিবেশ ও সহশিক্ষা পাঠ্যক্রম কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বুদ্ধিমত্তার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশন। শুরুতেই একাডেমীর ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে একটি উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে প্রধান অতিথিসহ সকল অতিথিবৃন্দের উপস্থিতিতে একাডেমীর কাব স্কাউট, গার্লস গাইড, বয়স্কাউট ও ক্রীড়া দলের কুচকাওয়াজ প্রদর্শনী ও মশাল প্রজ্জ্বলন শেষে শান্তির পায়রা উড়িয়ে অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক ও একাডেমীর পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম.এম সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মোঃ নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সেলিম উদ্দীন, কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের যুগ্ম সম্পাদক বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা এস এম কামাল উদ্দীন, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক ও জেলা প্রতিনিধি আবদুল কুদ্দুস রানা ও অত্র একাডেমীর সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ তৈয়ব।