ইমাম খাইর, সিবিএন:
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচন আজ। সকাল ১০ টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত জেলা বার প্রাঙ্গনে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৭ পদের বিপরীতে দুই প্যানেলে ৩৪ প্রার্থী লড়ছেন। প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোহাম্মদ জাকারিয়া। এবারের ভোটার সংখ্যা ৬৩২। গতবারের ভোটার সংখ্যা ছিল ৬৫২।
নির্বাচনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ সমর্থিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সমমনা আইনজীবীদের প্যানেলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী আইনজীবীদের প্যানেল। দুই প্যানেলই প্রার্থী সিলেকশনে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। ক্লিন ও গ্রহণযোগ্য আইনজীবীরাই এবার ভোটযুদ্ধে নেমেছেন।
তবে, প্রতিবারের মতো এবারও নতুন আইনজীবীদের ভোট একটি ফ্যাক্টর হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এই শ্রেনীর ভোট যার পক্ষে পড়বে তিনিই বিজয়ী হবেন- এমনটি মনে করছেন সাধারণ আইনজীবীরা।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল থেকে বিভিন্ন পদে যারা লড়ছেন তারা হলেন- সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি সেলিম নেওয়াজ ও মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক ইকবালুর রশিদ আমিন (সোহেল), সহ-সাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) মোহাম্মদ নুরুল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক (হিসাব) মোহাম্মদ ইছহাক শাহরিয়ার, পাঠাগার সম্পাদক মো. আবুল হোছন, আপ্যায়ন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এ.বি.এম মহিউদ্দিন।
এই প্যানেল থেকে সদস্য পড়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- আমজাদ হোসেন, মোহাম্মদ ইছহাক-১ (জিপি), কপিল উদ্দিন চৌধুরী, মাহাবুবুর রহমান, মোহাম্মদ রফিক উদ্দীন, রবিউল এহেছান, মাহামুদুল হক, মোহাম্মদ ইমরুল কায়েস এবং লিপিকা পাল।
বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেল থেকে সভাপতি পদে লড়ছেন নুরুল মোর্শেদ আমিন, সহ-সভাপতি মোহামম্দ ফরিদ উদ্দিন ফারুকী ও মোহাম্মদ ছাদেক উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মন্নান, সহ-সাধারণ সম্পাদক (সাধারণ) মোহাম্মদ ইউনুছ (সাধারণ) এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (হিসাব) এ.কে ফিরোজ আহমদ, পাঠাগার সম্পাদক ছরোয়ার আলম, আপ্যায়ন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম।
বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলের সদস্য প্রার্থীরা হলেন- আবুল কালাম ছিদ্দিকী, এস.এম নুরুল ইসলাম, সব্বির আহমদ, এ.কে.এম আতাউল হক, নাজিম উদ্দিন, মোহাম্মদ তাওহীদুল আনোয়ার, মঈনুল আমিন, মোহাম্মদ কলিম উল্লাহ এবং আবু মুসা মোহাম্মদ।
সর্বশেষ শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুই প্যানেলই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছে। নিজস্ব অবস্থানে ভোটের মাঠে সবাই চষে বেড়িয়েছেন।
আইনজীবীদের ধারণা, এর আগের প্রায় নির্বাচনে বিএনপির মধ্যে গ্রুপিং ছিল। শীর্ষ নেতারা চেষ্টা করেও সেই বিরোধ গলাতে ব্যর্থ হতো। কিন্তু এবারের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত কোন বিরোধ-মতানৈক্য চোখে পড়েনি। জামায়াত-বিএনপি ঘরানার আইনজীবীরা একাট্টা হয়ে গেছে। বিএনপির শীর্ষ নেতারাও বিরোধকারীদের আগেভাগে সতর্ক করেছেন। এসব বিবেচনায় এই প্যানেলের প্রার্থীরা সংখ্যাধিক্য পদে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারে।
তবে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের অবস্থাও বেশ সুসংহত। প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সাধ্য মতো দলের শীর্ষ নেতারাও ওয়ার্ক করেছেন।
সব হিসেবে নিকেশ আজ হবে। বিজ্ঞ আইনজীবীদের সুচিন্তিত ভোটেই আসল ভাগ্য নির্ধারিত হবে।
এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এডভোকেট এম. শাহজাহান। সহকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এডভোকেট বাবু শ্যামল কান্তি চৌধুরী। এছাড়া নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রয়েছেন- এডভোকেট মুহাম্মদ বাকের, এডভোকেট মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম, এডভোকেট মো. নুর উল আলম, এডভোকেট ফরিদ আহমদ এবং এডভোকেট মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ।
নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এডভোকেট এম. শাহজাহান কোন অপ্রীতিকর ঘটনা নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলেই তিনি আশা করেন। এ জন্য তিনি প্রার্থী ভোটারসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, গত বছর জেলা বারের নির্বাচন ২৫ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে সভাপতি ও সম্পাদক পদসহ মোট ৬ পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয় লাভ করে। তিনটি সম্পাদকীয় পদসহ ১১ পদে জয়ী হয় বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেল।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।