আমান উল্লাহ, টেকনাফ:

টেকনাফে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৩ হাজার ২৪০ জন শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল ব্যাগ পেলেও ভাগ্যে জুটেনি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আড়াই হাজার শিক্ষার্থীর। এতে বঞ্চিত ক্ষুদে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হতাশ হওয়ার পাশাপাশি অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈষম্য বলে মনে করছেন।

সুত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থা ইউনিসেফ কর্তৃক উখিয়া-টেকনাফের প্রাইমারি বিদ্যালয় গুলোতে স্কুল ব্যাগ বিতরণ করছেন। উক্ত ব্যাগগুলো সরকারি পর্যায়ে ৬৪ টি বিদ্যালয়ের ২৩ হাজার ২৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু ৮টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থীরা ওই স্কুল ব্যাগ পাচ্ছেনা। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হতাশ হওয়ার পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। স্কুল ব্যাগ বঞ্চিত প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো হচ্ছে দমদমিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেররুনতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হারিয়াখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুলাতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহপরীরদ্বীপ দক্ষিন পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, কচ্ছপিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেন্টমার্টিন দক্ষিন পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাবরাং বাজার পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। মুসলিম এইড কর্তৃক সরকারি বিদ্যালয়ের পাশাপাশি এসব বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিস্কুট পাচ্ছেন। তাছাড়া সরকার কর্তৃক বিনামুল্যে বইও পেয়ে যাচ্ছেন। তবে স্কুল ব্যাগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ কি এমনটায় বলছেন অভিভাবকরা।

দমদমিয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সউদের পিতা মোঃ ইউনুছন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কোমলমতি ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্যমুলক আচরণ করা হয়েছে। অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীদের মাঝেও স্কুল ব্যাগ বিতরণের জোর দাবীও জানান তিনি।

কেরুনতলী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ শাহীন বলেন, পাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা যখন ব্যাগ নিয়ে হেঁটে যায়, তখন আমার স্কুলের শিক্ষার্থীরা চেয়ে থাকে এবং অনেককে হতাশ হতে দেখা গেছে। অনেক অভিভাবক জিজ্ঞেস করছেন ‘আমাদের ছেলে-মেয়েরা স্কুল ব্যাগ পাচ্ছেন না কেন?’ তিনি বেসরকারি স্কুলগুলোতেও স্কুল ব্যাগ বরাদ্ধের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।

টেকনাফ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ এমদাদ হোসেন চৌধুরী জানান, প্রতিটি প্রাইমারি বিদ্যালয় বিস্কুট পাচ্ছে। সেভাবে ব্যাগও পাওয়া উচিৎ। প্রথমে ৬৪ টি সরকারি বিদ্যালয়ের ২৩ হাজার ২৪০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ২০ হাজার ব্যাগ বরাদ্ধ করা হয়েছিল। পরে যোগাযোগ করে বাকি আরো ৩ হাজার ২৪০ জনের জন্য ব্যাগ পাওয়া গেছে। যা ইতিমধ্যে বরাদ্ধ করা হচ্ছে। বাকি ৮ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী ব্যাগ বঞ্চিত রয়েছে। ওইসব বিদ্যালয়গুলোতেও সমভাবে ব্যাগ পাওয়া উচিৎ। এবিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী যেন স্কুল ব্যাগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।