নীতিশ বড়ুয়া, রামু:
রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের বহুল বিতর্কিত অবকাশ কমিউনিটি সেন্টার সীলগালা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলি অভিযান চালিয়ে মাদক, জুয়া ও নারীদের নিয়ে অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বিতর্কিত অবকাশ কমিউনিটি সেন্টারটি সীলগালা করেন। অভিযানে ঈদগাঁহর আলী আহমদ ও জোয়ারিয়ানালার বাদশা মিয়া নামের দুজন জুয়াড়িকে আটক করে দশ দিনের সাজা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করেন ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে এগারটায় ও আগের দিন মঙ্গলবার রাতে এ অভিযান চলে।
জানা গেছে, রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা এইচএম সাঁচি উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী অবকাশ কমিউনিটি সেন্টারে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে মদ, জুয়া ও নারীদের নিয়ে অবৈধ কার্যকলাপ চলে আসছিল। খবর পেয়ে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা. শাজাহান আলি গত ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাতটার দিকে অভিযান চালিয়ে কমিউনিটি সেন্টারটির মালিক নুরুল আবছারসহ ৪ জনকে আটক করে জেল জরিমানাও আদায় করে ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযানে মাদক ও জুয়ার সামগ্রীও জব্দ করা হয়েছিল। উক্ত অভিযানে এলাকায় কিছু দিনের জন্য স্বস্থি ফিরে এলেও ওই কমিউনিটি সেন্টারে আবারো অসামাজিক কার্যকলাপের আসরে এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। কমিউনিটি সেন্টারের মালিক নুরুল আবছার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ জনগণ ভয়ে এর প্রতিবাদ করতেও সাহস পায়না। নুরুল আবছার কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলার চিহ্নিত জুয়াড়িদের জড়ো করে জুয়ার আসর বসাতো এবং মদ ও নারীদের নিয়ে অবৈধ কার্যকলাপ চালাতো। এনিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসন আবারো এ অভিযান চালায়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা. শাজাহান আলি জানান, জোয়ারিয়ানালার অবকাশ কমিউনিটি সেন্টারে অসামাজিক কার্যকলাপ, মদ, জুয়ার আড্ডা, ইয়াবা সেবন, ইত্যাদি নিয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে সদর উপজেলার ঈদগাহ ইসলামাবাদ ৭নং ওয়ার্ডের খোদাইবাড়ি এলাকার মৃত মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র আলী আহমদ (৪৫) ও রামু জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল মোতালেবের পুত্র বাদশা মিয়া (৩৫) কে আটক ও কারাদন্ড প্রদান করা হয়। বাকিরা পালিয়ে যায়।
প্রতিষ্ঠানের কোন দায়িত্বশীল মালিক না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য সীলগালা করা হয়। অভিযান চলাকালে জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী প্রিন্স, রামু থানার এসআই ছাইদুর, এসআই ছানাউল্লাহসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রামু থানাকে বলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায় প্রতিনিয়ত সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ওই বিতর্কিত কমিউনিটি সেন্টারে অপরিচিত লোকজনের আসা যাওয়া শুরু হতো। এসময় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করতো। উদ্বিগ্ন এলাকাবাসি অবকাশ কমিউনিটি সেন্টারে প্রশাসন কর্তৃক অভিযান চালিয়ে সীলগালা করায় রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা. শাজাহান আলিসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।