বিবিসি বাংলা : বাংলাদেশের যে ধরনের মসজিদ প্রচলিত রয়েছে তার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি করা হচ্ছে সাড়ে পাঁচশোর বেশি মসজিদ। এগুলোকে বলা হচ্ছে মডেল মসজিদ। এ ধরনের ৯টি ‘মডেল মসজিদ’ বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন।
কেন এই মডেল মসজিদ?
মডেল মসজিদ উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামের নাম নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে ধর্মের মূল শিক্ষা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেয়া এবং নিরীহ মানুষ হত্যা করে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টির মাধ্যমে ইসলামের সুনাম নষ্ট করা হচ্ছে।
“আমরা চাই- ধর্মের মর্যাদা সমুন্নত থাকবে। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাটা যেন মানুষ পায় এবং ইসলামী সংস্কৃতিটা মানুষ যেন ভালভাবে রপ্ত করতে পারে, চর্চা করতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।”
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব আনিসুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, “এসব মসিজদ থেকে জঙ্গিবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করা হবে। সেইসাথে মাদকের বিরুদ্ধেও সচেতন করা হবে।”
“জঙ্গিবাদ বিরোধী, মাদক বিরোধী, যৌতুক, বাল্য বিবাহ এসবের বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রচার করা হবে। এসব বিষয় এখনো বলা হচ্ছে তবে সামনের দিনগুলোতে এই মসজিদগুলোর মাধ্যমে ব্যাপকভাবে তা ছড়িয়ে দেয়াই উদ্দেশ্য।”
তিনি বলেন, মডেল মসিজদ বলা হচ্ছে এজন্য যে সবাই এই মসজিদকে অনুসরণ করবে। বিভিন গুরুপূর্ণ সামাজিক এবং ধর্মীয় বিষয়ে সেখানে প্রশিক্ষণও দেয়া হবে ।
কেমন হবে এই মসজিদ?
দেশের প্রতি জেলায় ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্প রয়েছে সরকারের। তবে এসব মসজিদ শুধুমাত্র মসজিদই হবে না সেগুলো ‘ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঝালকাঠি, খুলনা, বগুড়া, নোয়াখালী এবং রংপুরে এই মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার নির্মাণ করা হবে।
ধর্ম সচিব মি: রহমান বলেন, আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত মসজিদ হবে এগুলো।
“এই মসজিদে নারী পুরুষের জন্য আলাদা ওজু এবং নামাজের ব্যবস্থা থাকবে। মক্তব, গ্রন্থাগার,গবেষণা কক্ষ, কনফারেন্স রুম, ইমাম ও হাজীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। সেইসাথে বিদেশী মুসুল্লিরা বা পর্যটকরা এলে তাদের থাকার ব্যবস্থা থাকবে।”
তিনি বলেন, “এরকম একেকটি মসজিদের জন্য গড়ে ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকা করে খরচ হবে। আর এসব মসজিদ পুরোটাই হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।”
জেলা পর্যায়ের মসজিদগুলো হবে চারতলা বিশিষ্ট এবং উপজেলা পর্যায়ে হবে তিন তলা বিশিষ্ট।
এসব মসজিদ নির্মাণের জন্য সৌদি সরকারের সাহায্যে অর্থায়নের কথা মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে লেখা থাকলেও, ধর্ম সচিব জানান, একেকটি মসজিদ নির্মাণের জন্য ১৫/১৬ কোটি টাকা লাগবে এবং তা সবই সরকারের নিজস্ব খরচে করা হবে।
একসাথে এত সংখ্যায় আধুনিক মসজিদ নির্মাণের এই উদ্যোগ ‘ইউনিক’ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
“অনেক দেশে এরকম দৃষ্টিনন্দন একটা-দুইটা আইকনিক মসজিদ আছে। কিন্তু এখানে সবই একরকম হবে। দেখেই বোঝা যাবে যে এটা সেই বিশেষ মসিজদ। সারা বিশ্বে কোনও মুসলিম দেশে একসাথে এরকম কর্মযজ্ঞ শুরু হয়নি।”
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।