বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম:
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে আনার ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ নেবে না আওয়ামী লীগ। এতে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে দলটিকে ছাড়াই নির্বাচনে প্রস্তুত ক্ষমতাসীনরা।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি যেসব দাবি করে আসছে সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগ কোনো ছাড় দেবে না। বিএনপি নির্বাচন না করলেও বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও যথানিয়মে অনুষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হবে না।
এদিকে সংবিধান থেকে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে তার অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। এরপর দলটি কিছুটা অবস্থান পরিবর্তন করে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তোলে। যদিও সহায়ক সরকারের ধারণা বা রূপরেখা এখনও বিএনপি তুলে ধরতে পারেনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে ৫ বছরের সাজা নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। এখন বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক বা সহায়ক সরকারের দাবির সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিটি যুক্ত হয়েছে। খালেদা ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে দলটির নেতারা প্রতিনিয়তই বলে আসছেন।
তবে বিএনপির এসব দাবির ব্যাপারে সরকার বা আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানেই রয়েছে। এসব বিষয়ে কোনো ছাড় বা নমনীয়তা দেখাবে না আওয়ামী লীগ। বিদ্যমান বাস্তবতা মেনে নিয়ে বিএনপি নির্বাচনে না এলে তাদের ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগ শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে।
গত ২ মে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো দল নির্বাচনে আসবে কি আসবে না সেটা তাদের ব্যাপার। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্র। কেউ না এলে তো বলতে পারি না, ধরে জেলে নেবো। কোন পার্টি নির্বাচন করবে আর কোন পার্টি নির্বাচন করবে না, সেটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। একজনের দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর আমরা তো আর চাপিয়ে দিতে পারি না যে, তোমাদের নির্বাচন করতেই হবে। না করলে তোমাদের ধরে নিয়ে যাবো জেলে।
এদিকে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, নির্বাচন সংবিধানের বর্তমান পদ্ধতি অনুসরণ করেই হবে। নির্বাচনের সময় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই থাকবে। আর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি সম্পূর্ণ আইন-আদালতের ওপর নির্ভর করবে। নির্বাচনের আগে তিনি মুক্তি পাবেন কি না বা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না সেটা আওয়ামী লীগের দেখার কোনো বিষয় না। খালেদা জিয়া মুক্তি না পেলে এবং তাতে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও নির্বাচন যথাসময়ে যথানিয়মে অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি নির্বাচন করলে ভালো না করলে কারো কিছু করার নেই। আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতে খালেদা জিয়া যদি মুক্ত হয়, তাকে নিয়ে যদি বিএনপি নির্বাচনে আসতে পারে আসবে। মুক্তি না হলে খালেদা জিয়াকে ছাড়াই যদি নির্বাচনে করতে চায় করবে। নির্বাচন না করলেও সেটা তাদেরই সিদ্ধান্ত। আসলে বিএনপি অসম্ভবকে সম্ভব করতে চাচ্ছে সেটা হবে না। তাদের জন্য অপেক্ষা করা হবে সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, আমি মনে করি বিএনপি নির্বাচনে আসবে। যদি না আসে, বিশ্বের কোনো দেশে এই নজির নেই একটি দল নির্বাচনে না আসলে নির্বাচন হবে না। আর পৃথিবীর কোনো দেশে সহায়ক সরকার বলে কিছু নেই। গণতন্ত্রের যে নিয়ম সেভাবেই নির্বাচন হয়। খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে কি হবে না সেটা আইনের বিষয়। এসব কারণে বিএনপি নির্বাচনে না এলে কিছু করার নেই। নির্বাচন যথাসময়ে যথানিয়মেই হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।