আব্দুল আলীম নোবেল:

কক্সবাজার রামু উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কৃতিসন্তান, চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, পরিকল্পিত কক্সবাজার আন্দোলনের উপদেষ্টা, লেখক,গবেষক, প্রফেসর ড. শিরীন আখতারের সাথে কক্সবাজার বিষয়ে কথা বললে প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপ চারিতায় তিনি বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে পর্যটন জেলা কক্সবাজারকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে পরিকল্পিত নগরায়নের কোন বিকল্প নেই।

কক্সবাজারে আমার নাড়ির টান রয়েছে, নিঃসন্দেহে কক্সবাজারের প্রতি আমার ভালবাসা থাকাটা স্বাভাবিক। সেইতো বেশি দিন দুরের কথা নয়, আমার কিশোর জীবনে দেখেছি প্রাকৃতিক, নির্মল অন্য এক কক্সবাজারকে। আজ সেটির উল্টো হয়েছে, পরিবেশ প্রতিবেশের চরম বিপর্যয় । যেভাবে দ্রুত হারে অপরিকল্পিত নগরায়ণ হচ্ছে, আসলে এটি আমাদের ও আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য অনশিসংকেত। এটির উত্তরণের জন্য এখনই আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারের পাশাপাশি স্থানীয়দেরকেও দেশপ্রেমের তাগিদে এগিয়ে আসতে হবে। কিছু সমস্যাকে র্টাগেট করে এগোতে হবে যেমন, অপরিকল্পিত পর্যটন ব্যবস্থা ও অনুন্নত নগর উন্নয়ন, সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা ইস্যু সেটির উপর বেশি জোর দিতে হবে, কারণ এই জেলার প্রায় ৩০ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে আনুমানিক পনের থেকে বিশ লাখ রোহিঙ্গা জনসংখ্যা আমারদের উপর চেপে বসেছে, সব মিলিয়ে এত ছোট আয়তনের জেলায় অর্ধ কোটি মানুষের চাপ এখন। বরাবরে আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলছে প্রতিনিয়ত এই বিষয়টি। এই রোহিঙ্গা গুলোর প্রর্ত্যাবাসন প্রক্রিয়াও অনেকটা জটিলতার দিকে রয়েছে। বেশ কয়েক বছর থেকে মাদকের আগ্রাসন চলছে অত্যন্ত নির্লজভাবে কক্সবাজার সহ সারাদেশে।

এছাড়াতো রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটা ও গাছ পালা উজাড় করে অনেকটা মর ভূমিতে পরিণত হচ্ছি আমরা। সরকারী খাস জমি গুলো দখল হচ্ছে প্রতিযোগিতা দিয়ে। কোন কিছু বাদ যাচ্ছে না এমন কি নদীর পাড়ও উপকূলীয় এলাকায় প্যারা বন নিধন, সমুদ্র সৈকত দখল, অনুমতিবিহীন স্থাপনা নির্মান এখম মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর কক্সবাজার শহরের যানজট মারাক্ত আকার ধারন করেছে দিন দিন।

শহরে ড্রেইনেজের সংকট, ফুটপাত দখল ও সংকট, অব্যাহত বেড়ি বাঁধ ভাংঙ্গন, বেশিরভাগ সড়কে সড়ক বাতির অভাব, অপর্যাপ্ত সড়ক ব্যবস্থা, একটু অন্যভাবে বলতে গেলে এখানে অনুন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, প্রায় ডাক্তাদের ক্লিনিক বাণিজ্য, একটি সরকরী বিশ্ববিদ্যালয় না থাকা, শিক্ষকদের প্রাইভেট বাণিজ্য, নদী পথে যাতায়ত ব্যবস্থা চরম সংকট, অনুন্নত জেটি ব্যবস্থা ও বিশেষ করে কক্সবাজার শহরে পরিষ্কার পরিছন্নতা সবার আগে দেখতে হবে। উপরোক্ত বিষয় গুলো ধরে আমাদের এগোতে হবে ।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী বদন্যাতায় কক্সবাজারে বিশাল উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে। তবে সেখানে সরকারী সেক্টরের অনিয়ম,দুর্নীতির বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বে দিয়ে দেখতে হবে এই এলাকার সচেতন মহলের।