প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’র কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন পবিত্র রমজান মাস মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও প্রশিক্ষণের মাস হিসেবে প্রতি বছর আমাদের নিকট এসে হাজির হয়। এ মাসটির আগমন মুমিন-মুসলমানের জীবনে অধিক পরিমাণ সংযম ও ভাল কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে বহু গুণে। বরকতময় এ মাস থেকে নেয়া শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পুরো বছর জুড়ে নিজ জীবনে লালন করাই হবে আমাদের অন্যতম প্রধান কাজ। কেননা রোজার মাধ্যমে বান্দা আত্মশুদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়। আমাদের সমাজে কেউ বেশি ধনী, কেউবা একেবারেই না খেয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে বহু কষ্টে তাদের জীবন পার করছে। সমাজের বিত্তবান অধিকাংশ মানুষ কখনো না খেয়ে থাকা অসহায় মানুষের দিকে দৃষ্টিপাত না করায় সমাজে প্রচলিত পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছে। রাষ্ট্রে প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাগুলো মানুষের আর্থিক দূরাবস্থা থেকে মুক্তি দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বিপরীতে ইসলামী অর্থব্যবস্থা মানুষকে এ ধরণের চরম বৈষম্য থেকে মুক্তি দিতে পারে। কেননা ইসলামী বিধানের অন্যতম রোজা মানুষকে গরিব-দুঃখীর কষ্ট অনুধাবনের শিক্ষা লাভে সহায়তা করে। রোজার মাধ্যমে সহমর্মিতা ও সহনশীলতার প্রশিক্ষণ অর্জিত হয়। একই সাথে মানব জাতির হেদায়তের জন্য কুরআন নাযিলের মাস- পবিত্র রমযান মানুষকে ধৈর্য্য ধারণের শিক্ষা দিয়ে থাকে। ধৈর্য্যরে প্রতিফল হিসেবে আল্লাহর নিকট থেকে জান্নাত লাভ করা সম্ভব। কিন্তু সমাজের অসহায় দুঃখী মানুষ ধণিক শ্রেণির খাবারের আনন্দ দেখে তাদের দিন পার করে। আর্থিক দৈন্যতার কারণে তারা তাদের জীবনের আনন্দ উপভোগ থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। এজন্য তিনি সমাজে বসবাস করা অসহায়-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে বিত্তবান মানুষদের প্রতি আহ্বান জানান।

চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর শিবিরের উদ্যোগে অসহায়-দুঃস্থদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আজ (১৬.০৫.’১৮) এসব কথা বলেন। নগর উত্তর সেক্রেটারী আ স ম রায়হান’র পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন নগর উত্তর সভাপতি আহমেদ সাদমান সালেহ, শিবির নেতা কামাল হোসাইন, আমান উল্লাহ, আহসান উল্লাহ, মোস্তফা মাহমুদ দিদার প্রমুখ।

নগর উত্তর সভাপতি আহমেদ সাদমান সালেহ বলেন জাতি হিসেবে আমরা সত্যিই দুর্ভাগা। কেননা মানব জাতিকে মহান আল্লাহ দিক নির্দেশনার জন্য জীবন বিধান হিসেবে যে আল-কুরআন দিয়েছেন তার বিধি নিজেদের জীবনে অনুশীলন, বাস্তবায়ন না করার ফলে মুসলমানরা সর্বত্র নির্যাতিত হচ্ছে। যে গ্রন্থ আমাদের পথ চলতে সহায়তা করে তাকে কয়েকটি নির্দিষ্ট গন্ডিতে আবদ্ধ রাখায় আমরা আমাদের কাঙ্খিত মুক্তি পাচ্ছি না। তাইতো সাময়িক আর্থিক মুক্তির জন্যে যাকাত কিংবা ইফতার সামগ্রী নিতে গিয়ে দুঃখী নারী-শিশুকে অকালে তাদের মূল্যবান জীবন দিতে হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সুনির্দিষ্ট নিয়ম-নীতির অভাবেই আজ এহেন করুণ দশায় আমরা আবর্তিত হচ্ছি। তিনি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে রাসূল (স) এর দেখানো পদ্ধতি পরিপালনে রাষ্ট্রকে যথার্থ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। অন্যথায় এরকম দুর্দশা থেকে জাতি কখনোই মুক্তি পাবেনা বলে হুঁশিয়ার করেন। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ উপস্থিত দু’শতাধিক অসহায় দুঃখী মানুষের হাতে বিভিন্ন রকমের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও ইফতার সামগ্রী তুলে দেন।