মো: ফারুক, পেকুয়া:

পেকুয়া উপজেলার কুতুবদিয়া চ্যানেলের কূলবর্তি মগনামা ইউনিয়নের পাউবো নিয়ন্ত্রিত বেড়িবাঁধের কাকঁপাড়া পয়েন্টে গত ঘুর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে বিলীন হওয়া ৪০ চেইন বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সাগরের পানিতে আবারো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছে মগনামাবাসী। ফলে চরম আতঙ্কে দিনাপাত করছে এলাকার ৩০ হাজার সাধারণ জনগণ। বসতবাড়ি, জিনিসপত্র পুনরায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা রয়েছে। এ বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় চরম হুমকির মুখে পড়েছে কাকঁপাড়ার একটি আশ্রয় কেন্দ্র ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন।

গত বর্ষা মৌসুমেও কাঁকপাড়ায় বিলীন পাউবোর ওই বেড়িবাঁধের অংশ দিয়ে সাগরের জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মগনামার ইউনিয়নের শত শত ঘরবাড়ি ও স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই বেড়িবাঁধ সংস্কার করা না হলে আবারো সাগরের পানিতে ভাসতে হবে মগনামাবাসীকে। স্থানীয় চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে কাকঁপাড়া বেড়িবাঁধ অংশ সরেজমিন পরিদর্শন করে কাজ দ্রুত শুরু না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের জনপ্রতিনিধি, উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় মগনামা, উজানটিয়া আর রাজাখালীর বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করে। যার কারণে সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপকূলবাসীর দুঃখ লাগবে বিশেষ বরাদ্ধ দিয়ে ওই বেড়িবাঁধগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। যেমন উদ্যোগ তেমনভাবে কাজও শুরু করে। একপর্যায়ে মগনামা, রাজাখালী আর উজানটিয়ার বেশিরভাগ বেড়িবাঁধের কাজ শেষ পর্যায়ে হলেও মগনামার কাঁকপাড়া অংশের কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। যার কারণে বিগত বর্ষা মৌসুমে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে মগনামার পশ্চিমাংশে পুরোবেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাঁকপাড়া অংশে। এ অংশটি আরো বেশি ক্ষতসৃষ্টি করে এলাকাবাসীর জন্য চরম আতংক হিসাকে দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত কাজ শুরু করার দাবী জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা হারুণুর রশিদ মানিক, দেলোয়ার হোসেন, লবণ চাষী তোফাইল আহমদ, মৎস্যচাষী জয়নাল আবদীন জানান, বর্তমান সরকারের আমলে মগনামার বেশিরভাগ এলাকায় বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ পর্যায়ে হলেও কাঁকপাড়া অংশের বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ বন্ধ রয়েছে। যার কারণে বিগত রোয়ানুর ভাগ্য বরণ করতে হবে আমাদের। বেড়িবাঁধ সংস্কার সফলতা স্লান হয়ে যাচ্ছে অল্প কাজ না হওয়ায়। আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য।

মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম জানান, কাকঁপাড়া এলাকার বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। সামনের বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গা ওই বেড়িবাঁধ পয়েন্ট দিয়ে আবারো সাগরের পানি প্রবেশ করে পুরো মগনামা ও উজানটিয়ার একটি অংশ প্লাবিত হবে। এতে মগনামা এলাকার একমাত্র ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়ন কেন্দ্র ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের অসংখ্য বসতঘর সাগরগর্ভে চলে যেতে পারে। এছাড়াও হাজার হাজার একর মৎস্য প্রজেক্ট সাগরে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিনি বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেওয়ার জন্য পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছেন।

উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল এর প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার নেজহাম উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, পুরো মগনামার বেড়িবাঁধ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কাঁকপাড়া অংশে ৫শ মিটারের মধ্যে ১শ মিটার কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৪শ মিটারের কাজ দ্রুত শুরু করার চেষ্টা করতেছি।