মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি:

রামুর গর্জনিয়া বাজারে অন্য মাসের ন্যায় রমজান মাসেও পণ্য বেচা-কেনায় নিয়ম-নীতির বালাই নেই। মানহীনপণ্য, মনগড়া মূল্যে বিক্রিতে ক্রেতাদের সাথে প্রতিনিয়ত বাক-বিতন্ডা নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় এ বাজারে। এ ছাড়া কোন দোকানেই পণ্যের মূল্য তালিকা না থাকায় বিভ্রান্তিতে ভোক্তা সাধারণ। সব মিলে হযবরল অবস্থা এ বাজারের সব কিছুতেই। ফলশ্রুতিতে জনগণ সরকারের প্রদেয় ভোক্তা অধিকার আইনের কোন সূযোগই পাচ্ছে না এখানকার ক্রেতারা। যাতে করে ভোক্তাদের বিষয়ে  সরকারী যাবতীয় আয়োজন মাঠে মারা যাওয়ার অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হচ্ছে এ বাজারে।

সরেজমিন গিয়ে আরো জানা যায়,এ বাজারের রয়েছে হাজারাধিক নানান পণ্যের দোকান। এতে খাবারের দোকান রয়েছে শতাধিক। আর কৃষি প্রধান এ এলাকার  বাজারটিতে বরাবরের মতো ৮০ শতাংশ সহজ- সরল কৃষক/কিষানী প্রতিনিয়ত পণ্য ক্রয় করে থাকে। গ্রামের দূর-দূরান্ত থেকে গ্রামের মানুষ গুলো যেন এ সব ব্যবসায়ীদের খেলার পুতুল।  যাদের অধিকাংশই অক্ষর-জ্ঞান ছাড়া বৈ-কি। এ কারনে এক শ্রেণির  ব্যবসায়ীরা এসব ক্রেতাদের সরলতার সুযোগে মানহীন,বিক্রয় অযোগ্য বা সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ পণ্য
নির্র্বিঘেœ বিক্রি করে কাড়ি কাড়ি টাকা বানিয়ে অল্প সময়ের মধে বনে যাচ্ছে লাখপতি বা কোটিপতি। এদের সংখ্যা ডজনাধিক। যারা পায়কারী দোকানীর বেনারে হাজার পতি থেকে ইতিমধ্যেই লাখপতি আবার অনেকে কোটিপতিও বনে গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এ বাজারের ভোক্তা মুহাম্মদ সাইফুল,মোহাম্মদ মেছলেম,আবদুল করিম এ প্রতিবেদককে জানান,তারা কেজি হিসেবে পেয়াজঁ কিনেছেন কেউ ৩০ টাকা দরে আবার কেউ ২৫ টাকা দরে। আর খুচরা হিসেবে অনেকে কিনেছে ১ পোয়া ১০ টাকা দরেই। তাদের একজন ১ কেজি রোশন কিনেছেন ১ শত টাকা দরে। সাইফুল কিনেছেন ৯০ টাকা দরে।  আর খুচরায় ১ পোয়া ৩০ টাকা করে এ রোশন  ক্রয় করে তাদের অপর একজন। অথচ পাশ্ববর্তী শহর গুলোতে পাইকারীতে এ পেয়াজের মূল্য মাত্র ১৬ টাকা। রোশন ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা। অথচ এ বাজারের পেয়াঁজ বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুন দরে। সরে জসিন গিয়ে জানা যায়, বাজারের সিরাজ-জাহাঙ্গিরের দোকান,ইমহাকের দোকান, ও আবদুল বারী/মামুনের দোকানের অধিকাংশ মালামাল নষ্ট বা মানহীন। এর উপর খোলা পাত্রের মালামালে মাছি ভনভন করছে কিন্তু মূল্য আদায়ের ক্ষেত্রে মনগড়া। কেউ কেউ এ বিষয়ে বললে তাদের বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে তারা। তবে এ প্রতিবেদক জাহাঙ্গির আলম ও মো: মামুন সওদাগরের সাথে বে আইনি এসব বিষয়ে জানতে চাইলেও তারা (এ দুজনই)এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।
এদিকে এ সব দোকানীদের  বোতলজাত তৈল/ খোলা তৈল বিক্রি হয় যার যার ইচ্ছা মাফিক। আইনিভাবে বাঁধা থাকলেও এ খোলা তৈলে তেলাপোকা সহ নানান পোকার বসবাস নিত্যদিনে ঘটনা এ সব দোকানে।  তাদের দাবী, গর্জনিয়া বাজারের কোন দোকানেই মুল্য তালিকা নেই।
অপর ক্রেতা,জসিম উদ্দিন,ফকির মিয়া,মো: তৈয়ব সহ অনেকে জানান, কাপড় কিনতে গেলে মনগড়া মূল্য হাঁকায় ব্যবসায়ীরা। চেহারা দেখে দাম নেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। এদের একাধিবজনের অভিযোগ
মাছবাজার, মাংসের বাজার, তরকারীর বাজার,দেশী-বিদেশী মুরগীর বাজার ও খাবার হোটেল বা খাবারের দোকান গুলোতে ভয়াবহ অবস্থা।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সহ সভাপতি মাষ্টার ফয়জুল হাসান জানান,গর্জনিয়া বাজারের এ করুণ দশা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভোক্তা সাধারনের যে সূযোগ-ষুবিধা দিয়েছেন এখান কেউই ভোগ করতে পারছেন না শুধু তদারকির অভাবেই। বর্তমানে নতুন ইউএনও সাহেব এসেছেন ওনি কী করে দেখা যাক !  পরে সব কিছু হবে।

এ বিষয়ে রামু উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: লুৎফর রহমান বলেন, এ বাজার নিয়ে ভোক্তা সহ অনেকের কথা রয়েছে। দেশের আইন না মানলে কাউকে রেহাই দেবে না প্রশাসন।

তিনি আরো জানান,ভোক্তাদের অধিকার অনেক। মান সম্পন্ন পণ্য,অনুপাত হারে মূল্যরেইট,ভদ্রব্যবহার, প্রতিটি দোকানে মূল্য রেইট টাংগানো সহ যাবতীয় বিধি প্রতিটি দোকানদারের পালন করা আইনি দায়িত্ব। তা না মানলে আইনী ব্যবস্থা। রেহাই নেই ।