সাইফুল ইসলাম 

সারা বিশ্বে বছরের নিদিষ্ট একটি দিনে বাবা দিবস পালিত হলেও আমার জন্য প্রতিটি দিনই বাবা দিবস। তবে যাদের বাবা আছে তাঁদের জন্য দিনটি কতো যে আনন্দের আর যাদের নেই তাঁদের জন্য কতো যে বেদনার! যার বিবরণ অবর্ণনীয়। আমিও বাবা হারা এক এতিম। দীর্ঘ দুই বছর নয় মাস পার হয়ে গেল প্রিয় বাবাকে হারিয়েছি। তিন তিনটি ঈদুল ফিতর বাবা বিহীন কীভাবে কাটিয়েছি তা আমি ও আমার পরিবার ছাড়া অন্যে কারোর পক্ষে তেমন জানার বিষয় নই। একজন নিখুঁত সাদামনের মানুষ ছিলেন। দীর্ঘ ২২ বছর প্রবাসে কাটিয়ে আমাদের তিন ভাই ও দুই বোনকে মানুষ করতে তিনি নিজের সুখকে অকাতরে বিসর্জন দিয়েছিলেন। একজন নি:স্বার্থ মানুষ ছিলেন। পৃথিবীর সকল বাবারা তাঁদের নিজ নিজ সন্তানদের জন্য কতোই না কষ্ট করে। আমার বাবাও তাঁদের মধ্যে একজন। কষ্ট করেছেন, ঘাম জড়িয়েছেন বিনিময়ে আমাদের কাছ থেকে চেয়েছেন ভালো মানুষ হওয়ার নিশ্চয়তা। আজ আমরা স্ব- স্ব ক্ষেত্রে সফল যা বাবার নিদারুণ কষ্টের ফসল। বাবা তুমি নেই তবে তোমার দেওয়া আদেশ,নিষেধ,উপদেশ মেনে আমরা সফল হয়েছি ঠিকই কিন্তু তুমি তা দেখার জন্য এই ধরণীতে নেই। বাবা তোমাকে খুব মনে পড়ে যখন আমার মেয়ে আমাকে বাবা বলে ডাক দেয়। তখন আমার দুই নয়ন দিয়ে অনবরত নোনা জল জড়তে থাকে। মেয়ে বলে বাবা তুমি কাঁদছ কেন? আমি মেয়েকে বলি তুমি তো আমাকে বাবা বলে ডাক আমি কিন্তু বাবা বলে ডাক দিলেও বাবা আমার ডাক শুনেন না। কারণ আমার প্রিয় বাবা এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে আজীবনের জন্য চলে গেছে। হয়তো মহান আল্লাহ তায়ালা চাইলে আখিরাতে বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারবো। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুধু একতাই ফরিয়াদ আল্লাহ যেন আমার বাবার সকাল জানা ও অজানা গুনাহ মাফ করে দিয়ে তাঁকে জান্নাতুল ফৈরদাউস দান করুন।
লেখক: সাইফুল ইসলাম , শিক্ষক