জাহাঙ্গীর আলম , ইনানী :
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটন স্পট ইনানীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত শতশত দেশী বিদেশী পর্যটক ছুটে আসে। পাটোয়ারটেক দৃশ্যমান পাথরে বীচে নীল জলরাশির সাথে খেলা করে কতই না আনন্দ পাচ্ছে তা দেখার বিষয়। অথচ এ ফাঁকে সৈকত জুড়ে বিচরণ করা এক শ্রেনীর পেশাদার টোকাই ছিচকে চোর পর্যটকদের মূল্যবান মালামাল চুরি, ছিনতাই করে পর্যটনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। এসব দুর্বৃত্তদের অসদাচরনে পর্যটকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন ইনানী বীচ ঘুরে বেশ কয়েকজন পর্যটকের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অভয়ারন্য খ্যাত ইনানী বীচে থাকা, খাওয়া ও অবকাশ যাপনের মত মধ্যবিত্ত পর্যটকদের জন্য তেমন কোন সুবিধাদি না থাকলেও ইনানী দেখার জন্য সবাই ব্যাকুল। কিন্তু এখানে এসে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।
ঢাকা গাজীপুর থেকে আসা পর্যটক সুমন দুঃখ করে বলেন, তারা স্বপরিবারে কক্সবাজারে হোটেলে উঠেছেন। বিকালে ইনানী বীচের বালুচরে মালামাল রেখে সাগরে গোসল করতে নামার ফাঁকে দুর্বৃত্তরা ১৮ হাজার টাকাসহ মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। তিনি জানান বিষয়টি স্থানীয় ট্যুরিষ্ট পুলিশকে জানানো হলেও মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ইনানীর হোটেল ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম জানান, ইনানী বীচে পর্যটকদের ছবি তোলা ব্যবসা করতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হয়। তিনি জানান, ইনানী বীচ জুড়ে দেড় শতাধিক ক্যামেরাম্যান অবাধ বিচরন করলেও অধিকাংশ ক্যামরাম্যানের কোন অনুমতি নেই। ওই সব ক্যামেরাম্যানরা সুন্দর ও প্রকৃতি নিয়ে ছবি তোলার কথা বলে পর্যটকদের নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ছুরি ও হাতুড়ির ভয় দেখিয়ে পর্যটকদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।
তিনি আরো বলেন, এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় গত বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে ৪/৫ জন ক্যামেরাম্যান নামধারী দুর্বৃত্ত তার হোটেলে ঢুকে তার ভাই আবু নাছেরকে অপহরণ করে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে দুর্বৃত্তরা তাকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় একদল পর্যটক সেদিকে যেতে দেখে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এঘটনায় জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে শনিবার উখিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন এঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ইনানী বীচে দুর্বৃত্তায়ন, চুরি, ছিনতাইসহ অপরাধমূলক কর্মকান্ড বেড়ে যাওয়ার কারনে পর্যটন পরিবেশের উপর প্রভাব পড়ছে। এ প্রভাব প্রতিরোধ করা না হলে পর্যটকের সংখ্যা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকবে। ফলে হোটেল মোটেল ও বিভিন্ন পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ইনানী ট্যুারিষ্ট পুলিশের ইনচার্জ সাখাওয়াত হোসেন জানান, তারা পর্যটন পরিবেশের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রেখে পর্যটকদের নিরাপদ অবকাশ যাপনের জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে ছোট খাট ঘটনা ঘটতেই পারে। তবে পর্যটক হয়রানিরমত কোন অভিযোগ তিনি পাননি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
ইনানী বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জআমান জানান, ইনানীর পর্যটন পরিবেশের আরো উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখানে পর্যটকদের কোন ভাবে হয়রানি করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।