শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, ঈদগাঁও
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও বাজারের ডিসি সড়ক, হাসপাতাল সড়ক, ভুমি অফিস এলাকা। ব্যস্ততম এ সড়কের দুইপাশে রয়েছে সরকারী,বেসরকারি হাসপাতাল ব্যবসায়িক-বাণিজ্যিকসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। রাতদিন মানুষের নিত্য চলাচল এ সড়ক গুলোতে। ফলে দিনের বেশিরভাগ সময় লেগে থাকে যানজট। তবে এ যানজটকে অসহনীয় করে তোলে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং। যেন অবৈধ পার্কিংই বৈধ তাদের কাছে। ইচ্ছেমতো যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করেন কথিত শ্রমিক নেতা,গাড়ীর মালিক, চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। সৃষ্টি করেন যানজট। কিন্তু এ বিষয়ে কোন বিকার নেই তাদের। যেন অবৈধ পার্কিংই বৈধ তাদের কাছে। এমন কি সরকারী ডিসি সড়কটি যেন তাদের পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া সম্পত্তি। মঙ্গলবার বিকালে ডিসি রোড ঘুরে দেখা গেছে অবৈধ পার্কিংয়ের এমন চিত্র। সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার উভয়পাশে অবৈধভাবে পার্কিং করে রাখা হয়েছে সিএনজি, ইজিবাইক (টমটম), রিক্সা,অটো রিক্সা, ভ্যানসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি। এছাড়া আছে টংসহ ছোটখাট কিছু দোকানপাট। এই সড়কের দুইপাশে রয়েছে বিভিন্ন ফল-ফ্রুট, ক্রোকারিজ, চালের, রড সিমেন্ট, ঔষুধের দোকান। এসব দোকানের কর্মচারীরাও দোকানের ভেতর বিক্রি না করে রাস্তা দখলে নিয়ে ক্রয় বিক্রয় করে। এছাড়া সরকারী বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেরও নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা রাস্তার ওপর গাড়ি পার্কিং করেই মালামাল আনলোড করে থাকে। ফলে দিনের বেশিরভাগ সময় এসব অবৈধ পার্কিং দখল করে নেয় অর্ধেক রাস্তা। কিন্তু এধরনের পার্কিংকে অবৈধ বলে মানছেন না পার্কিংকারীরা। এতে বেকায়দায় পড়েছেন রাস্তার পাশে দোকান-শোরুম থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা। এক প্রকার পার্কিংকারীদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা। তবে এজন্য রাস্তার পাশে থাকা চাল, রড সিমেন্ট, ক্রোকারিজ দোকানিদের দায়ী করছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ পথচারীরা। ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এভাবে গাড়ি পার্কিংয়ে বাধা দিলেও কোন লাভ হয় না। জোরপূর্বক তারা পার্কিং করে। অবৈধ পার্কিংয়ে নিষেধ করলে তারা দোহাই দেয়, ট্যাক্স দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। মো.আবদুল্লাহ, মমতাজ আহমদ, ফারুক আহমদসহ স্থানীয় অনেক বাসিন্দা সকালের কক্সবাজারকে বলেন, অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং করতে মানা করলেও তারা শুনে না। অনেক সময় পার্কিংকারীদের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদ ঝামেলাও হয়। এভাবে পার্কিংয়ের ফলে সাধারণ মানুষের চলাফেরা নিরাপত্তার হুমকির মুখে পড়ছে। সেইসঙ্গে আমাদের ব্যবসারও ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু কি আর করা, বিষয়টি মেনে নিতে হচ্ছে। কালি মন্দির সড়কের পুর্বে পাশে পুরাতন বটগাছ তলা এলাকায় একটি চাল আমদানী প্রতিষ্ঠানের গাড়ি অবৈধভাবে রাস্তার ওপর পার্কিং করে রেখেছেন সিরাজগঞ্জের চালক রহিম পাটোয়ারী। এভাবে কেন পার্কিং করে রেখেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাইতো এভাবেই গাড়ি রাখে। তাই আমিও রেখেছি। কাজ শেষ হতে পাঁচঘণ্টা লাগবে। ততক্ষণ গাড়িটি রাস্তার ওপরই থাকবে। এজন্য কাউকে কোন উৎকোচ দিতে হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় চাল মজুদকারীরা এবং ব্যবসায়ীরাই ভালই জানবে বলে জানায়। এভাবেই নিয়ম না মেনে পুরো ডিসি সড়কের যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করছেন চালকরা। অবৈধ পার্কিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়া বলেন, রাস্তায় গাড়ি পার্কিং না করার জন্য তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। ডাবল পার্কিং করতে মানা করেছেন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজকে ডেকে যানজট নিরসন ও সহনীয় পর্যায়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এদিকে বাজারের এক চাল ব্যবসায়ী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানায়, এই রোডের গাড়ীর পার্কিং করে মালামাল লোড করতে আমরা সব কিছু ম্যানেজ করি। রাস্তার ওপর গাড়ির পার্কিং এর জন্য টমটম, সিনএনজি,রিক্সার মালিক ও চালকদের দায়ী করে তিনি বলেন, এসব পার্কিং এর কারনে দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। নিদিষ্ট পার্কিং এ নিয়ে গাড়িতে যাত্রী উঠা নামা করাতে হয়। কিন্তু গাড়ি মালিক ও চালকরা যাত্রী নিতে সুবিধা হতে রাস্তার উপর যত্রতত্র পার্কিং করে থাকে। এভাবে রাস্তার ওপর যাত্রী উঠানামা হোক তা আমরাও চাই না। কেননা এটাতে যানজট সৃষ্টি হয়। আমাদের ব্যবসারও ক্ষতি হয়। ছাত্র- ছাত্রীদের সমস্যা তো আরো বেশি। এ ব্যাপারে নবাগত কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসানের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানায়।
যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং, শ্রমিক নেতাদের জমিদারি
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।