আবদুল মজিদ,চকরিয়া :

চকরিয়ার কাকারা ইউনিয়নের মাইজকাকারা ও মধ্যম লোটনী গ্রামে মনোয়ারা বেগম ও জয়নব বেগম নামে দুই নারী ভন্ড ফকিরের আবির্ভাব ঘটেছে। তাদের খপ্পরে পড়ে এলাকার নিরীহ অনেক মহিলা সংসারও ভেঙ্গেছে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে গতকাল ২৩ জুলাই বেলা ২টায় স্থানীয় এলাকাবাসী ভন্ড দুই নারী ফকিরের গ্রেপ্তারের দাবীতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। এমনকি ওই বিক্ষোভে স্থানীয়দের সাথে অংশ নিয়ে বিক্ষোভের সমর্থন জানিয়েছে মনোয়ারা বেগমের দুই পুত্র ও জয়নাব বেগমের স্বামীও। ভন্ড নারী ফকির মনোয়ারা বেগম (৫৫) কাকারা ইউপি ৪নং ওয়ার্ডের মাইজপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী এবং অপর ভন্ড নারী ফকির জয়নাব বেগম (৩৫) একই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মধ্যম লোটনী গ্রামের গ্রামের আবদুল হামিদের স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নারী ভন্ড ফকির মনোয়ারা বেগম বিগত প্রায় ৫বছর ধরে এবং জয়নব বেগম বিগত ৩ বছর ধরে এলাকার মহিলাদের মাঝে ঝাড়-ফুক,পানি-তৈল পড়াসহ ধর্মীয় অপব্যাখা দিয়ে আসছে। তারা এসব ঝাড়-ফুক দিয়ে নারীদের মাঝে নানাভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে যাচ্ছে। এমনকি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ও বিবাহ বিচ্ছেদসহ সাংসারিক বিভিন্ন ধরণের কলহ সৃষ্টিতে কাজ করছে এই দুই ভন্ড নারী ফকির। তারা নিজেরাই দাবী করেছেন, মনোয়ারা বেগম ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার শরীফের দরবার থেকে স্বপ্নেপ্রাপ্ত এবং জয়নাব বেগম আল্লাহ’র তরফ থেকে সরাসরি স্বপ্নেপ্রাপ্ত হয়ে এসব কাজে নেমেছেন। এলাকাবাসী আরো জানান, মনোয়ারা বেগম প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২ থেকে বিকাল ৫টা পযর্ন্ত আসর বসিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ধশতাধিক নারী ভক্তকে জমায়েত করে নিজেকে বড় সাধক দাবী করে মারফতি আলোচনা এবং বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নারীদের ঝাড়-ফুক চালায়। যার কারণে এলাকার সহজ সরল ধর্মপ্রাণ নারীরা বিভ্রান্ত হচ্ছে। ধর্ম নিয়ে মনোয়ারা বেগমের এধরণের অপপ্রচার এলাকায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এসব প্রতিবাদ করতে গিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকিও দেয় মনোয়ারা বেগম। তার এমন আচরণে ক্ষুদ্ধ খোদ তার দুই পুত্র। সরে জমিনে গেলে স্থানীয়দের সাথে মনোয়ারা বেগমেনের সন্তানরাও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ধর্ম বিরোধী এসব কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে প্রতিবাদ জানায়।

অপরদিকে মনোয়ারা বেগমের শিষ্য অপর ভন্ড নারী ফকির জয়নাব বেগম নিজেকে আল্লাহ প্রদত্ত ও স্বপ্নেপ্রাপ্ত ফকির দাবী করে এলাকার মানুষের কাছে জাহির করতে নিজের ১০ম শ্রেণিতে পড়–য়া মেয়েকে লেখা-পড়া থেকে বাদ দিয়ে দুসর্ম্পকীয় দুই সন্তানের জনক এক খালাতো বোনের স্বামীর সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য স্বপ্নে পেয়েছেন বলে স্থানীয়দের জানায়। ফলে বানোয়াট স্বপ্নের বিষয়টি জানতে পেরে ওই বিয়েতে বাধা সৃষ্টি করে মেয়ে। কিন্তু অবাধ্য মা স্বপ্নে পাওয়ার কথা বলে জোর পূর্বক দুই সন্তানের জনকের সাথে বিয়ে দিতেই মশগুল পড়েছে। ভন্ড ফকির জয়নাব আরো দাবী করেন, তাকে বিশ্বাস করলে দুনিয়াতেই সহজেই বেহেস্তে যাওয়া যাবে এবং তার বাড়িতে কেউ ঢুকলে সকল গুনা মাফ হয়ে যাবে বলে দাবী করেন এই ভন্ড ফকির। তার এসব কর্মকান্ড বিরোধী অবস্থান নিয়েছে খোদ জয়নাবের স্বামী আবদুল হামিদ ও শ্বাশুড়ী সৈয়দা খাতুন। স্থানীয়রা এনিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেছেন। তাদের ধর্মবিরোধী কর্মকান্ডে স্থানীয়রা অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপপূর্বক দুই ভন্ড ফকিরের আস্তানায় অভিযান পূর্বক গ্রেফতারী দাবী করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দিন মো: শিবলী নোমান জানিয়েছেন, বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে খবরা-খবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এর সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।