ডেস্ক নিউজ:
কুষ্টিয়ায় মানহানি মামলায় জামিন নিতে এসে আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ জড়িত নয় বলে দাবি করেছে কুষ্টিয়া ছাত্রলীগ।

একইসঙ্গে এ হামলার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় শহরের একটি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এসব কথা জানান কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষার।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ছাত্রলীগ জড়িত নয়। তদন্তে দোষী বের হয়ে এলে বোঝা যাবে আসলে এর সঙ্গে কারা জড়িত। এ হামলার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইয়াসির আরাফাত। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ। তারা সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দেন।

ইয়াসির আরাফাত বলেন, এ ঘটনার পর আমরা প্রশাসনকে বলেছি, আপনারা খুঁজে বের করেন কে দোষী। আমরা তো এই ন্যক্কারজনক ঘটনা চাই না। কারা হামলা করেছে, দোষী বের হয়ে আসুক। দোষী বের হয়ে এলে বোঝা যাবে, কারা এর সঙ্গে জড়িত। আমরা চাই সুষ্ঠু বিচার হোক।

মূলত জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম ও বর্তমান সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের ধরে তারা নিজেরাই এ হামলা চালিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি।

তুষার বলেন, আমি মামলার বাদী। ঘটনার দিন একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিকেল ৩টার দিকে নেতাকর্মীদের নিয়ে আদালত চত্বর ত্যাগ করি। এরপর জানতে পারি, আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে মাহমুদুর রহমানের প্রাইভেটকারটি ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই ছাত্রলীগ জড়িত নয়। জামায়াত-বিএনপি নিজেদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে ছাত্রলীগকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ বলেন, বিএনপির মধ্যে একটা মতবিরোধ আছে। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও বর্তমান সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীর মধ্যেই দ্বন্দ্ব চলছে। বিএনপির কোনো দুষ্কৃতকারী এটা করেছে। সামনে নির্বাচন তাই আমাদের ওপর দায়ভার দিতে চাইছে।

তিনি বলেন, আদালত চত্বরে মাহমুদুর রহমান বিএনপিপন্থী আইনজীবী ও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক শেষ করে আদালত চত্বর থেকে বের হয়ে যান। তারপর দুর্বৃত্তরা মুখে গামছা বেঁধে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা চালায়। তিনি দাবি করেন, ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। ছাত্রলীগ কখনও মুখে গামছা বেঁধে হামলা করে না। এটা বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের।

তিনি প্রশ্ন ছোড়ে বলেন, হামলায় তো কোনো বিএনপিপন্থী আইনজীবী আহত হতে দেখা যায়নি। এটাই প্রমাণ করে যে, বিএনপি-জামায়াত নিজেদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে মুখে গামছা বেঁধে হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমরা প্রশাসনকে বলেছি, যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।

এদিকে, জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী দাবি করেন, রোববার প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত লোকের সামনে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এখন দোষ ঢাকার চেষ্টায় নেমেছে তারা।

প্রসঙ্গত, গত রোববার বিকেলে মানহানির মামলায় জামিন নিতে কুষ্টিয়ায় গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান।

আদালত চত্বরে তার ওপর তিন দফায় এ হামলা হয়। ইট, পাথর ও লাঠির আঘাতে তার গাল, কপাল ও মাথার পেছনে কেটে যায়। পরে যশোর থেকে উড়োজাহাজে করে ঢাকায় এনে তাকে রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।