ইমাম খাইর, সিবিএন:
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে আইনজীবীদের আহবান করেছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম।

তিনি বলেন, শুধু মামলার জন্য নয়, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতেই কাজ করুন। সেবার মন মানসিকতায় কাজ করলে মানুষ শান্তি পাবে। মামলা জট কমে আসবে।

তিনি বলেন, মামলা জট কমাতে কক্সবাজার আদালতকে এ গ্রেড মানে উন্নীত করতে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে।

শনিবার (১১ আগষ্ট) সকালে কক্সবাজার বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম কথাগুলো বলেন।

তিনি বলেন, দেশের জন্য বড় বোঝা মাদক। সর্বত্র মাদকের ভয়াবহতা লাভ করছে। মাদকের মামলায় কোন দূর্বলতা দেখাতে নেই। মাদক সংশ্লিষ্টদের বিষয়ে সবাইকে কঠোর হতে হবে।

সভায় জেলা জজ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে যথাসময়ে মেডিকেল সার্টিফিকেট (এমসি) দিতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জেলা জজশীপের আয়োজনে জেলা দায়রা জজের সম্মেলন কক্ষে সভায় বক্তৃতা করেন- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোঃ নুর ইসলাম, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক বেগম জেবুন্নাহার আয়শা, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (১ম আদালত) ছৈয়দ মুহাম্মদ ফখরুল আবেদিন, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (২য় আদালত) মাহমুদুল হাসান, সিনিয়র সহকারী জজ আলাউল আকবর, বেগম খাইরুননেছা, মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিদ্দিকী, সহকারী জজ মোছাম্মৎ নুসরাত জামান, সাজ্জাতুন নেছা, ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্নাহ ফারাহ্, সুশান্ত প্রসাদ চাকমা, মোহাং হেলাল উদ্দিন, রাজীব কুমার দেব, মোঃ তারেক আজিজ, মোহাম্মদ রেজাউল হক, পুলিশ সুপার ডঃ একেএম ইকবাল হোসেন, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আবদুস সালাম, ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মোঃ জিল্লুর রহমান, জেলা বারের সাবেক সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, এডভোকেট মোহাম্মদ ইছহাক (জিপি), পিপি এডভোকেট মমতাজ আহমদ, জেলা বারের সভাপতি এডভোকেট মোঃ নুরুল ইসলাম, সিনিয়র আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ, কামরুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর আদিবুল ইসলাম, সাবেক পিপি জাহাঙ্গীর আলম, এডভোকেট নুরুল মোস্তফা মানিক, এডভোকেট মোহাম্মদ আখতার উদ্দিন হেলালী, জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম মঈন উদ্দিন প্রমুখ।
বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে সিনিয়র আইনজীবী জেলা বারের সাবেক সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ইয়াবা ধরা নিয়ে কেন প্রশ্ন আসে? বদনাম নিয়ে আমাদের আর কত দিন চলতে হবে?
বিচার বিভাগের দোষ দিয়ে লাভ নাই। আমাদের আরো বেশি সজাগ সচেতন হতে হবে। মাদক বন্ধ করতে পারলে সমস্ত অপরাধ দূর হবে। সমাজ ও দেশ শান্ত হবে।
সরকারের অধিগ্রহণ বিষয়ে সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ৭ ধারা নোটিশের পর কোন মামলা হলে মৌলিক ডকুমেন্ট না থাকলে আমলে না নেয়াই ভাল। দালালদের কারণে জমির মালিকরা কষ্ট পাচ্ছে। ক্ষতিপূরণ পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
পিপি এডভোকেট মমতাজ আহমদ বলেন, যেভাবে মাদকের সয়লাভ, তা দেখে কক্সবাজারবাসী হিসেবে লজ্জায় মাথা হেড হয়ে যায়। কলা কৌশল দিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের জামিনের চেষ্টা করবেননা। মাদকের ব্যাপারে সরকারের কঠোর প্রদক্ষেপের প্রতি নজর রাখুন। যে যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করতে হবে।
জেলা বারের সভাপতি এডভোকেট মোঃ নুরুল ইসলাম বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে শিশু আদালতের দাবি তুলে বলেন, কক্সবাজারে শিশু আদালতের প্রয়োজন। অনেক দিন ধরে আবেদন করা হচ্ছে। এবার কার্যকরী পদক্ষেপ চাই। দীর্ঘসুত্রিতায় বিচারপ্রার্থীরা হয়রানির শিকার। নারী ও শিশু আদালতের মিস মামলাগুলো নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের একটি মামলা এখনো চলমান। সব প্রক্রিয়া শেষ হলেও মামলা এগুচ্ছেনা। দুঃখজনক বিষয়। এরকম বিচারে মানুষ বিচারালয় সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলা শুরু করে।
কক্সবাজারের বিচার বিভাগীয় সভায় বিচারক, আইনজীবী, পুলিশের বিভিন্ন থানার ওসি, কারা কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় অধিবেশন শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রত্যেক আদালতের সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিচারকরা।
সভায় উপস্থাপিত প্রতিবেদনসহ দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালতের কার্যক্রম পরিচালনায় উদ্ভুত সমস্যাসমূহ চিহ্নিতকরণ ও সমাধানে উন্মুক্ত আলোচনা হয়।