শাহিদ মোস্তফা শাহিদ,কক্সবাজার সদর:

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের আওতাধীন ঈদগাঁও মেহের ঘোনা বিটের রিজার্ভ জমিতে ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে এক যুবকের উপর গুলি চালিয়েছে বিট কর্মকর্তা।এ ঘটনায় আহত হয়েছে বনবিভাগের ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী। ভাংচুর ও লুট করা হয়েছে রাইফেল। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।ঘটনায় জড়িত কেউ আটক হয়নি।১৭ আগষ্ট সকাল আনুমানিক ১১ টার দিকে ঘটনাটি ঘটে চাঁন্দের ঘোনা উছিন্না মোরা এলাকায়। নিহত মোস্তাক আহমদ (৩৪) একই এলাকার মৃত মোহাম্মদ হোছেনের পুত্র বলে জানা গেছে।

সরেজমিন ঘটনাস্থল ঘুরে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিহত মোস্তাকসহ আরো ৪/৫ জন লোক উচিন্না মোরা এলাকায় একটি পলিথিন দিয়ে ঝুঁপড়ি ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালায়।খবর পেয়ে ঈদগাঁও মেহের ঘোনা বিট কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ খাঁনের নেতৃত্বে একদল বন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌছে ঝুঁপড়ি নির্মাণে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে।এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।কথা কাটাকাটির মধ্যেই মোস্তাককে লক্ষ করে গুলি বর্ষন করে বিট কর্মকর্তা। তাৎক্ষনিক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।মৃত্যুর বিষয়টি চাউর হলে বনবিভাগের লোকজনকে ধাওয়া দেয় উত্তেজিত জনতা।এ সময় এলাকাবাসী ও বন কর্মকর্তাদের সাথে ২য় দফা সংঘর্ষ হয়।এ সংঘর্ষে বিট অফিসের ৭জন কর্মকর্তা – কর্মচারী আহত ও অস্ত্র লুট ও ভাংচুর করেছে বলে দাবী করেন মেহের ঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মানুন মিয়া।

আহতরা হল মামুনর রশিদ খাঁন,শহিদুল ইসলাম সোহাগ,আবদুল মান্নান,মোহাম্মদ ছবুর আলী, আনদু রশিদ,কাজী আবদুল মালেক,সমির চন্দ্র কর। আহতরা সবাই বন বিভাগের কর্মকর্তা। আহতরা বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

খবর পেয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহত মোস্তাকের লাশের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরী করে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।পরিস্থিতি উত্তাপ্ত হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকায়।

ঈদগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ছৈয়দ আলম জানান,তুচ্ছ বিষয় নিয়ে গুলি করে মানুষ মেরে পেলা কোন ভাবে মেনে নেওয়া যায় না।ঘটনা যেহেতু ঘটে গেছে নিহত মোস্তাক আর ফিরে আসবে না।এই মুহুর্তে তার গর্ভবতী স্ত্রী ও পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বনবিভাগের কাছে অনুরোধ জানান।এবং তিনি নিহত মোস্তাকের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগীতা করে যাবেন বলে জানায়।

ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়া সিবিএনকে বলেন, খবর পেয়ে লাশের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরী করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।তার শরীরের গলা,হাতে বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।বিট অফিস ও নিহত ব্যক্তির এলাকা পাশাপাশি হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে নিহতের স্বজনরা মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায়।একই ভাবে সরকারী দায়িত্ব পালনে বাধা ও অস্ত্র ভাংচুরের ঘটনায় মামলা করবেন বলে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মামুন মিয়া।

অপরদিকে এলাকাবাসীর দাবী তুচ্ছ ঘটনায় সরাসরি গুলি করে মোস্তাককে খুন করা দায়ে অভিযুক্ত বিট কর্মকর্তা মামুন অর রশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।