আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
কাপ্তাই হ্রদের কাতল মাছ বিক্রি হয়েছে অর্ধলক্ষ টাকায়। রাঙামাটি বিএফডিসি ঘাটে বিক্রি হওয়া বিশালাকার এই মাছটির ওজন হয়েছে ৩০ কেজি। শুক্রবার সকালে কাপ্তাই হ্রদের কুরকুটি ছড়া এলাকায় স্থানীয় জেলেদের জালে ধরা পড়া এই মাছটির দৈর্ঘ্য ৪১ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ছিলো ৩৯ ইঞ্চি।

রাতে মাছটি রাঙামাটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে নিয়ে আসেন মৎস্য ব্যবসায়ি ওমর ফারুক। পরে চট্টগ্রামের একজন ব্যবসায়ি ১৬শ টাকা কেজি ধরে ৪৮ হাজার টাকায় এই মাছটি ক্রয় করে নিয়ে যান। বিশালাকার এই মাছের বাবদ ১২শ টাকা রাজস্বও আদায় করেছে রাঙামাটি বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে গত পহেলা আগষ্ট থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা মৌসুম শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ ওজনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়লো। শহরের মৎস্য ব্যবসায়িরা জানিয়েছে এই মৌসুমের শুক্রবার পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদ থেকে ২৭ কেজি, ২৫ কেজি, ২৩ কেজি ও ২০ কেজি ওজনের ৭টি কাতলা মাছ ধরা পড়লো স্থানীয় জেলেদের জালে।

মৎস্য ব্যবসায়ি ও স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছে, বিগত কয়েক বছরে কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় অত্রাঞ্চলের প্রশাসনসহ হ্রদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন বিএফডিসি’র নানামুখি পদক্ষেপের ফলে এবছর কাপ্তাই হ্রদে দেশীয় কার্প প্রজাতির মাছের উৎপাদন বেড়েছে অনেকগুণ। মাছের উৎপাদনের ফলে বিগত বছরগুলোর ন্যায় এবছর কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণের শুরুতেই রাজস্ব আয় প্রায় দেড়গুণ বেশি পেয়েছে রাঙামাটি বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় লেকের ৭টি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে অভয়াশ্রম হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। এলাকাগুলো হচ্ছে শহরের জিরো মাইলে ডিসি বাংলো সংলগ্ন হ্রদ এলাকা, রাঙামাটি বিএফডিসি অফিস সংলগ্ন ফিসারী বাঁধ এলাকা, লংগদু উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকা, ছয়কুড়ি বিল, নানিয়ারচর এলাকা, রাঙামাটি রাজবন বিহার এলাকা, কাপ্তাই উপজেলার নৌবাহিনী ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা এবং বিলাইছড়ি রিয়ংখিয়ং চ্যানেল সংলগ্ন লেক এলাকা। এছাড়াও কাপ্তাই হ্রদে রুই জাতীয় মাছের প্রধান প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে ৪টি। এছাড়া, ঝর্ণা ও ছড়ার মুখে রুই জাতীয় ছোট মাছের প্রজনন হয়ে থাকে এ ধরনের প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে আরও প্রায় ৩৪৬টি। সংখ্যা ও আয়তন উভয় বিবেচনাই অভয়াশ্রম অপ্রতুল। অভয়াশ্রমের সংখ্যা ও আয়তন বৃদ্ধির পাশাপাশি সারা বছর পানির থাকে এমন স্থানে অভয়াশ্রম ঘোষণা ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য প্রজাতির উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও বৃদ্ধি পাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে স্থানীয় সচেতন মহল।