জুবাইর উদ্দিন, চবি
মৌসুমী ভৌমিক। পড়ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের মাস্টার্সে।
মৌসুমির জন্মস্থান ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া । বাবার নাম মিন্টু রতন ভৌমিক, মায়ের নাম প্রতিমা ভৌমিক। বাবা অবসরপ্রাপ্ত কাস্টম অফিসার। পরিবারের দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে মৌসুমী সবার বড়।
২০০৯ সালে এসএসসি এবং ২০১১ সালে এইচএসসি পাস করেছেন সীতাকুণ্ড গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে। ২০১২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগে ভর্তি হন। ক্যারিয়ারে ক্লিনিক্যাল নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা এবং এ পেশার মাধ্যমেই পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য অবদান রাখতে চান বলে জানিয়েছেন মৌসুমী।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সের অধীনে থিসিস করছেন। এখন তিনি ক্লিনিক্যাল বিষয়ে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
মৌসুমি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত জীবপ্রযুক্তি বিষয়ক থ্রি মিনিট থিসিস প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেন।অস্ট্রেলিয়ার দি ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের সহযোগিতায় আয়োজিত এই বিখ্যাত প্রতিযোগিতায় দেশের ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এর আগে থ্রি মিনিট থিসিস প্রতিযোগিতাটি বিশ্বের ৯০টি দেশে অনুষ্ঠিত হত।মূলত মাস্টার্স, পিএইচডি ও এমফিলে যারা গবেষণা করে তাদের জন্যই এটি।এই গবেষণাটি তিন মিনিটের মধ্যেই এমনভাবে উপস্থাপন করতে হয় যাতে সর্ব স্তরের লোকজন বুঝতে পারে।যেখানে কোন ভাবেই সায়েন্টিফিক ও টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহার করা যায় না।
মৌসুমী বলেন,আমি ফোর্থ ইয়ার পর্যন্তই গবেষণা নিয়ে ভাবি নি। ইচ্ছে ছিলো, এম এস দেশের বাইরে করবো। আবেদন করে জার্মানি এবং লন্ডনে সুযোগ পাই।
আরও বলেন, এমন কিছু করা দরকার যা করলে মানুষজন আমাকে চিনবে আমার কাজের মাধ্যমে। পরে সব বাদ দিয়ে দেশে থিসিসে মনোযোগ দিলাম। যা হবে, দেশ থেকেই হবে। আমার ইচ্ছে আছে, বাইরে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে যাওয়ার। কিন্তু, কখনো ইচ্ছে হয় নি, বাইরেই স্যাটেল হবো। কিছু করলে, দেশেই করবো।
তিনি গবেষণার বিষয়ে বলেন,আমার এই গবেষণার ফলাফল যদি জিনটার সাথে কোনো সংযোগ পাই, তাহলে এই জিনকে টার্গেট করে, anti- diabetic ড্রাগ ডিজাইন করা সম্ভব। এবং যাদের ডিএনএ তে এই জিনটির পলিমরফিজম আছে, কিন্তু ডায়াবেটিস নেই, তাদেরও মলিকুলার ডায়াগনোসিস এর মাধ্যমে টেস্ট করে প্রিডিক্ট করা যাবে, যাদের ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি আছে। এবং ডাক্তার তাদেরকে সেভাবে প্রেস্ক্রাইব করতে পারবেন বা তাদের সাজেশন দিতে পারবেন, কিভাবে লাইফ স্ট্যাইল মেইন্টেইন করলে, ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি এড়িয়ে চলা যাবে।
গবেষণায় কে কে সহায়তা করছেন জানতে চাইলে বলেন, আমার গবেষণা তে আমার দুই সুপারভাইজার ছাড়াও যে মানুষটার নাম না বললেই নয়, মামুন মিয়া, Bangladesh university of health sciences, BUHS এর লেকচারার। ওনি সর্বাক্ষনিক আমাকে যে কোনো ধরণের পরামর্শ দেন কাজের ব্যাপারে। যদিও কাজটা আমার, কিন্ত ল্যাবমেটরা সবসময় আমার কাজে সাহায্য করেন।
সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত আছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি কোনো কিছুতে যুক্ত ছিলাম না, এইটাই আমার প্রথম কোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ, এবং এই প্রথম প্রচেষ্টাতেই আমি কিছু একটা অর্জন করে পেরেছি। এইটা আসলেই অনেক বড় পাওয়া। কিন্তু, এই অর্জন সামনে আমাকে আরো ভালো কিছুতে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করবে।
জীবনের স্বপ্ন কি জানতে চাইলে মৌসুমী বলেন, ইচ্ছে আছে মলিকুলার বায়োলজি নিয়ে কাজ করার, জিন, ডিএনএ, এসব। এমন কিছু করার, যা দিয়ে মানুষ কিছুটা হলেও উপকৃত হয়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।