শাহেদ মিজান, সিবিএন:
মানবপাচার থেমে গেলেও নিস্তার পাচ্ছে না সেই ‘ভয়ংকর’ মানবপাচারকারীরা। তাদের বিরুদ্ধে সিআইডির অ্যাকশন অব্যাহত রয়েছে। এর অংশ হিসেবে পর্যটক সেজে ফাঁদ পেতে টেকনাফের ‘ভয়ংকর’ মানবপাচারকারী রফিককে (২৮) গ্রেফতার করেছে ঢাকা থেকে আসা সিআইডির ‘ইক্যুনোমিক্যাল ক্রাইম স্কোয়ার্ড’ একটি দল। বুধবার বিকাল সাড়ে (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের নয়াবাজার থেকে মানবপাচারকারী রফিক গ্রেফতার করতে করা হয়। রফিক সিআইডির ‘ইক্যুনোমিক্যাল ক্রাইম স্কোয়ার্ড’ এর দায়ের করা মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের একটি মামলা আসামী। তিনি সাবরাংয়ের কচুবনিয়া এলাকার মোঃ ছিদ্দিকের পুত্র। অভিযানে অংশ নেয়া সিআইডির ‘ইক্যুনোমিক্যাল ক্রাইম স্কোয়ার্ড’র পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম খান জানান, ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর ‘ইক্যুনোমিক্যাল ক্রাইম স্কোয়ার্ড’র উপ-পরিদর্শক তাপস বিশ্বাস বাদি হয়ে টেকনাফের পাচার সিন্ডিকেটের গড়ফাদার মোঃ ছিদ্দিককে প্রধান আসামী তার দু’পুত্র শফিক, রফিক (গ্রেফতারকৃত) ও হামিদ নামে আরেক গড়ফাদারের নাম উল্লেখ আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা সেই থেকে কয়েকজন তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত চালিয়ে এসেছেন। সর্বশেষ তদন্তভার পেয়েছেন পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম খান।

পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম খান বলেন, মামলাটির তদন্ত একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। এই পর্যন্ত তদন্তে উঠে এসেছে হামিদ নামের একজন ও মোঃ ছিদ্দিকের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিটেকটি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোক এনে মালয়েশিয়ায় পাচার করতো। তারা প্রথমে ওই লোকগুলোকে এনে ছিদ্দিকের আস্তানায় জমায়েত করতো। সেখান থেকে নৌকায় করে জাহাজে উঠিয়ে তাদের জিম্মি করতো। তারপর ফোনের মাধ্যমে জিম্মি লোকদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করেছে। তবে ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে, যারা টাকা দিতে পারতো না তাদের অনেককে সাগরে নিক্ষেপ ও থাইল্যান্ডের গণকবরে পুঁতে ফেলেছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা তদন্তে করে পেয়েছি ছিদ্দিকের পাঁচটি ব্যাংক একাউন্টে মানবপাচারের আড়াই কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। টাকাগুলো সব বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

তদন্তের স্বার্থে কিছু বিষয় গোপন রেখে অভিযানে নেতৃত্বাদানকারী সিআইডির ‘ইক্যুনোমিক্যাল ক্রাইম স্কোয়ার্ড’ সহকারী পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দীন বলেন, হামিদ ও ছিদ্দিকের ১০/১২ সিন্ডিকেটটি মানবপাচারের বড় বড় সিন্ডিকেটগুলোর একটি। এরমধ্যে রয়েছে ছিদ্দিকের দু’পুত্র ও মেয়েজামাই তালেবও। তালেবসহ সিন্ডিকেটের অধিকাংশই এখন মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে। ইন্টারপোলের সহায়তা নিয়ে মালয়েশিায় তাদের ধরতে অভিযান চালানো হবে।