ডেস্ক নিউজ:
বিস্তৃত সংরক্ষিত বনাঞ্চল, উপত্যকা, নদী আর পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে ঢেউ খেলানো সৌন্দর্য আর ঝর্ণা নিয়ে বাংলাদেশের রূপময় ভূ-খণ্ড পার্বত্য চট্টগ্রাম। পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানামুখী সম্ভাবনা। যার অন্যতম হচ্ছে পর্যটন শিল্প।
খাগড়াছড়ির চারদিক ঢেউতোলা সবুজ উঁচু পাহাড়ের দেয়াল। মাঝে মাঝে ব্যস্ত ছোট ছোট শহর ও উঁচু-নিচু সর্পিল রাস্তা। অনেক পর্যটকই খাগড়াছড়ি শহরকে ছবিতে দেখা নেপালের কাঠমুন্ডু শহরের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা থাকলেও অবকাঠামো, নিরাপত্তাহীনতা, অপ্রতুল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে অগ্রগতি নেই পাহাড়ের পর্যটনে। নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও সাফল্যের মুখ দেখছে না সম্ভাবনাময় এ খাতটি।
তবে সম্প্রতি পাহাড় ঘিরে পর্যটন পিপাসু মানুষের আর্কষণ বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা। নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেক পর্যটকই এখানে আসার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী নয়।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পর পাহাড়ে তুলনামূলক স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজমান থাকলেও পর্যটনের সুফল ঘরে তুলতে পারছে না স্থানীয়রা। সরকার এই খাত থেকে খুব বেশি লাভের মুখও দেখছে না।
আশার কথা হচ্ছে সময়ের ব্যবধানে আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গ, রিছাং ঝর্ণা, তৈদুছড়া ঝর্ণা, হর্টিকালচার সেন্টার, মায়াবীনি লেক, শতবর্ষী বটবৃক্ষসহ খাগড়াছড়ির অরণ্যঘেরা সবুজ প্রকৃতির টানে আজকাল পর্যটকরা ছুটছে পাহাড়ের পথে। মাত্র ৫/৭ বছরের ব্যবধানে বদলে গেছে পার্বত্য খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্প। সময়ের ব্যবধানে সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্প। পর্যটনের রাণী খ্যাত বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির পরে পর্যটনের তীর্থ ভূমিতে পরিণত হয়েছে খাগড়াছড়ি।
পর্যটকদের আনাগোনাকে কাজে লাগিয়ে সরকারি উদ্যোগের বাইরেও ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠছে পর্যটন কেন্দ্র। সরকারি উদ্যোগের কমতি থাকলেও ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রীক একাধিক হোটেল-মোটেল।
খাগড়াছড়ির আলুটিলা সুড়ঙ্গ ও রিছাং ঝর্ণাকে ঘিরে পাহাড়ের বিশাল এলাকায় ‘ইকো ট্যুরিজম জোন’ গড়ে তোলা হলে শুধুমাত্র পাহাড়ের পর্যটন শিল্পেরই বিকাশ হবে না, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণও বাড়বে বলে মনে করেন পাহাড়ের সচেতন মহল। তাদের মতে ‘ইকো ট্যুরিজম জোন’ পাহাড়ের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিতে পারে।
জনবান্ধব পর্যটন শিল্প গড়ে তুলতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহনের কথা জানিয়ে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী বলেন, নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্প অনেকদূর এগিয়েছে। খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র থেকে হর্টিকালচার সেন্টার পর্যন্ত ক্যাবল কার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। যা খুব শিগগিরই আলোর মুখ দেখবে। এছাড়াও আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র থেকে জিরো মাইল পর্যন্ত স্ট্রিট লাইটের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ দুটো উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্প নতুন মাত্রা পাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।