নিজস্ব প্রতিবেদক:
জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত আসন্ন জেলা ফুটবল লীগের দলবদলসহ সকল কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের দাবী জানিয়েছে ডিএফএ অধিভূক্ত ১৬টি ক্লাবের মধ্যে ১৩টি ফুটবল ক্লাব। গত ০১ নভেম্বর পৃথক দু’টি আবেদনে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদীর হাতে আবেদন দু’টি তুলে দেন ১৩টি ক্লাবের স্বীকৃত প্রতিনিধিবৃন্দ। আবেদনে ১৩টি ক্লাবের প্রতিনিধিবৃন্দ বলেন- নভেম্বর পুরো মাসটাই জেএসসি, জেডিসি, পিএসসি ও বিভিন্ন স্কুল কলেজ, মাদ্রাসার বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া আগামী ডিসেম্বর মাসটায় বাঙ্গালী জাতির গৌরবের বিজয়ের মাস। বিগত ৪ বছর রানিং ডিএফএ কোন ফুটবল লীগ আয়োজন না করে বছরের শেষ সময়ে এসে তড়িগড়ি করে ফুটবল লীগ আয়োজন অনেকটা দূরভিসন্ধিমূলক। তাছাড়া আয়োজক ডিএফএ তাদের ঘোষিত সময়ে ভেন্যু কক্সবাজার বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম বরাদ্দ পায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার ডিএফএ সাধারণ সম্পাদক জ্যোর্তিময় বড়–য়া মঙ্গল বলেন- আমি ডিএফএ’র সাধারণ সম্পাদক। আমাদের আলাদা ফুটবল লীগ কমিটি আছে। কমিটিতে আলোচনা ব্যতিরেখে রাতারাতি আহবায়ক কমিটি গঠন করে এই ফুটবল লীগ আয়োজন বাফুফে বাইলজের পরিপন্থি। বর্তমান ডিএফএ’র অর্থ সম্পাদক ফরহাদুজ্জামান বলেন- আমার ফুটবল টিম টেকনাফ খেলোয়াড় সমিতি ডিএফএ’র প্রতিষ্ঠার পর থেকে কক্সবাজার ফুটবল লীগে অংশ গ্রহণ করে আসছে। এই টিমের প্রতিনিধি হয়ে আমি বর্তমানে ডিএফএ’র অর্থ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছি। আর্শ্চয্যজনক হলেও সত্য অনিয়মের প্রতিবাদ করায় যাদের হাত-পায়ে ফুটবল নাই তারাই অবৈধ আহবায়ক কমিটির ধোঁয়া তুলে আমাকে ডিএফএ থেকে বাদ দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কক্সবাজার ডিএফএ’র সাবেক সভাপতি জাহেদ উল্লাহ বলেন- আমার টিম ন্যাশনাল কক্স দু’বারের জেলা ফুটবল লীগ চ্যাম্পিয়ন। অথচ আমার ঐতিহ্যবাহী এই টিমসহ বিগত ২০১৮ সালে ডিএফএ’র অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা একই ব্যক্তিরা আমাদের ৪টি দলকে অন্যায়ভাবে বহিস্কারের চেষ্টা করে। পরে বাফুফে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের তদন্ত সাপেক্ষে আমাদের ৪টি দল প্রাণে বেঁচে যায়। মূলতঃ ফুটবল দল নাই এমন চক্রটি তাদের ভাগবাটোয়ারার ৬টি দলকে আইনতঃ সহায়তা দিতে তড়িগড়ি করে অনেকটা লোক দেখানো নীল-নকশার ডিএফএ লীগ আয়োজনের অবৈধ অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই অবৈধ আহবায়ক কমিটি। আমরা সহসা ক্লাব সমিতি বৈঠক করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কথিত আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করব। বাঁশকাটা খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সভাপতি সৈয়দ করিম, কোট বাজার খেলোয়াড় সমিতির সভাপতি শফিউল আলম, উখিয়া খেলোয়াড় সমিতির সভাপতি মাষ্টার সিরাজুল হক অভিন্ন সুরে জানান-ডিএফএ’র অভ্যন্তরে চলছে সাইক্লোন-ঘূর্ণিঝড়, কক্সবাজারের অগ্রসরমান ফুটবল বাঁচাতে বাফুফে এবং এএফসি’র হস্তক্ষেপ চান তারা। শহরের পাহাড়তলী ক্রীড়া পরিষদের সভাপতি মাস্টার জসিম উদ্দিন জানান- ডিএফএ কোন মিটিং, রেজুলেশন এবং ঘোষণা না দিয়ে এই রকম আয়োজন পৃথিবীর সপ্তম আর্শ্চয্যের মত। এটি কখনো মেনে নেয়া যায় না। কক্সবাজার টাউন ক্লাবের সভাপতি, বিশিষ্ট ফুটবল কোচ খোরশেদ আলম জানান- ডিএফএ-তে দল নেই এমন অসাধু ব্যক্তিরা ডিএফএ সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, অর্থ সম্পাদক ও নির্বাহী কমিটির অধিকাংশ সদস্যের মতামতকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অনেকটা পেশী শক্তির জোরে তারা দিনকে রাত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন- আমি যতটুকু জানি বাফুফে’র সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা রয়েছে পুরোনো ১৬টি দলকে নিয়ে ফুটবল লীগ আয়োজনের। অথচ মূর্খ ব্যক্তিরা বাফুফে’র নির্দেশনাও মানছে না। কক্স ক্রীড়া সংঘের সভাপতি সিরাজদ্দৌল্লা জানান- অপকর্মে তাদের পক্ষে নাই বলে চ্যাম্পিয়ন অল ষ্টার ক্লাব, ঢেমুশিয়া ক্রীড়া সংঘ ও আমার ক্লাবটি নিয়ে তারা অব্যাহত ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এদের মুখোশ সহসাই আমরা কক্সবাজারবাসীর সামনে তুলে ধরবো। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে- কক্সবাজার জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন- ডিএফএ’র ১৬টি নিবন্ধিত ক্লাবের মধ্যে ১৩টি ফুটবল ক্লাব ফুটবল লীগ আয়োজনের যাবতীয় কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের দাবী জানিয়েছেন। তাদের দাবী অবশ্যই যৌক্তিক। তবে আমি চাই সঠিক সময়ে এবং সঠিক জায়গায় জেলা ফুটবল লীগ আয়োজন হোক। যেহেতু ক্লাব সমূহ অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও হুমকির অভিযোগ এনেছে- অবশ্যই বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবো।