তারেক মিয়া, সৌদি আরব :

হিরোশিমা জাপানের একটি নগর। এটি হিরোশিমা প্রশাসনিক অঞ্চলের রাজধানী এবং জাপানের মূল দ্বীপ হোনশুর চুউগোকু অঞ্চলের সবচেয়ে বড় নগর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে জাপানের হিরোশিমা শহরে ফেলা হয় বিশ্বের প্রথম পরমাণু বোমা। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল ৮টা বেজে ১৫ মিনিট। হঠাৎই দানবের মতো হিরোশিমার আকাশে পরিলক্ষিত হয় মার্কিন বি টুয়েন্টিনাইন বোমারু বিমান এনোলা গ্রে।

রূপকথার হিংস্র দানবের মতো সেখান থেকে হিরোশিমার একটি হাসপাতালের ১ হাজার নশো ফুট ওপর বিস্ফোরিত হয় বিশ্বের প্রথম আণবিক বোমা লিটল বয়।কিছু বুঝে ওঠার আগেই আণবিক বোমার বিষাক্ত ছোবলে মারা গেল ৮০ হাজার মানুষ। আহত হল আরও ৩৫ হাজার। মুহূর্তের মধ্যে যেন এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হল ছবির মতো সুন্দর জাপানের ছোট্ট শহর হিরোশিমা। এখানেই শেষ নয় তিন দিন পর জাপানের নাগাসাকি শহরের ওপর ফ্যাট ম্যান নামের আরেকটি নিউক্লীয় বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। নাগাসাকিতে প্রায় ৭৪,০০০ লোক মারা যান এবং পরবর্তীতে এই দুই শহরে বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরও ২১৪,০০০ জন।

কেন চালানো হল এই হামলা ? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যানের আত্মসমর্পণের আহ্বানে জাপান সাড়া না দেওয়ায় তাঁর নির্দেশেই ঠান্ডা মাথায় হিরোশিমায় চালানো হয় নারকীয় এই হামলা। এর উদ্দেশ্যে ছিল দু’টি। এক হল জাপানিদের জব্দ করা, আরেক হল যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে জাপানকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা।

এখনও সে দিনের সেই হামলার দু:সহ স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে হিরোশিমার মানুষ। আণবিক বোমা হামলার এত বছর পরও শহরে জন্ম নিচ্ছে বিকলাংগ শিশু, ক্যনসারসহ দুরারোগ্য ব্যধিতে ভুগছে বহু মানুষ। হিরোশিমা দিবস এলেই তাই পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষের প্রত্যাশা –আর নয় যুদ্ধের নামে মারণাস্ত্রের ঝনঝনানি আর নয় কোনও ঠান্ডা মাথার হত্যাযজ্ঞ।

সূত্র: surjonews.wordpress.com, উইকিপিডিয়া, বি বি সি বাংলা।