তারেক মিয়া
সৌদি আরব
যখন ছোট্ট ছিলাম তখনকার সময়ের কথাগুলো আজও মনে পড়ে। জীবনের যতটুকু আনন্দ ছিল সে সময়ই ছিল। এখন মনে হয় আনন্দ নামের শব্দটা হয়ত সময়ের আবর্তনে কালের বিবর্তনে বিলীন হয়ে গেছে। সেজন্যইত আমি বড় হতে চাইনি অথচ না চাওয়া ইচ্ছেটাই প্রকৃতির ধরাবাঁধা নিয়মে স্ববিরোধী হওয়া স্বত্বেও পূরন হয়ে গেল। জানিনা কেন এমন হলো। পরম করুনাময় কি আমাকে একটু করুনা করতে পারতেন না? তাহলে হয়ত পুকুরে সারাদিন পরে থাকা, স্কুল ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া, বৃষ্টির দিনে ফুটবল নিয়ে হৈচৈ করে মেতে থাকা সবকিছু ঠিক মতই চালানো যেত। হয়ত মাঝে মধ্যে একটু অসুবিধে হতো যেমন আব্বু আম্মুর একটু মিষ্টি বকুনি শুনতে হতো কিংবা হালকা পাতলা উত্তম মধ্যম। এতেও সমস্যা ছিল না। লাভের ভাগে সবসময় আমিই থাকতাম। আব্বু আম্মুর সাথে আভিমান করে নিজের অন্যায় আবদার গুলো হাছিল করে নিতে কি যে সুবিদে হতো । সেই কথা না হয় গোপন থাকাই ভালো।
এই বয়সেও যদি কেহ আমাকে প্রশ্ন করে আমি আমার জিবনের কোন সময়টাকে বেশি অনুভব করি তবে আমি এক সেকেন্ড পরিমান সময় কালক্ষেপণ না করে বলে দিব আমি আমার শৈশবের সেই স্বর্নালি সময়টাকেই বেশি অনুভব করি। কিন্তু ইচ্ছে করলেই যে আর সে সময়টাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। অনিচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়েই দেখতে দেখতে বড় হয়ে গেলাম। এখন জিবনে অনেক পরিবর্তন লক্ষ করতে পারছি। শৈশবেত এমন ছিলাম না অথচ এখন বুজতে পারছি বয়সের সাথে সাথে নিজেকে অঘোষিত অনেক দায়িত্ব নিয়ে পৃথিবীর বুকে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বেচে থাকতে হচ্ছে। জীবন ও জীবীকার তাগিদে ছুটে আসতে হয়েছে দূর প্রবাসে। পাশে নেই আপন কেহ।
যদি জীবনটা মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের বিখ্যাত কিশোর সাহিত্য দিপু নাম্বার টু কিংবা হাত কাটা রবিন উপন্যাসের দিপু কিংবা রবিনের চরিত্রের সাথে মিলে যেত তবেই বোধহয় বেশি সুবিধে হত। বড় হবার কষ্টটা দেখতে হতো না। আসলে ছোট্ট বেলায় এত দায়িত্ব নিয়ে চলতে হয় না কিন্তু বড় হলেই এত দায়িত্ব নিতে হবে কেন? বড় ছেলেদের বুঝি মায়ের বুকে মাথা রেখে সারাজীবন পার করে দিতে হচ্ছে হয় না? মায়ের আদর, বাবার ভালোবাসা, ভাই বোনদের সাথে উপভোগ্য সুখময় স্মৃতি, বন্ধুদের নিয়ে সারাদিন মেতে থাকা, স্কুলের শিক্ষকদের আন্তরিকতা সবই এখন কেবল দুঃবিষহ স্মৃতি। তাইতো মাঝে মধ্যে নিজেকেই প্রশ্ন করি আসলে কেন বড় হলাম?
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।