তাওহীদুল ইসলাম নূরী:
“A drowning man catches at a straw”
শিরোনামে ইংরেজিতে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে। যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় ডুবন্ত লোক খড়কুটোর সাহায্যেও বাঁচতে চায়। মানুষের জীবন বড়ই বৈচিত্র্যময়। নানান ঘাত-প্রতিঘাত, বিপদ-বাধার সম্মুখীন হতে হয় জীবনে। প্রতিযোগিতার এই পৃথিবীতে যতক্ষণ বেঁচে থাকে ততক্ষণ তাকে সংগ্রাম করে যেতে হয়। কোন একটা বিপদ-বাধার সম্মুখীন এমনকি শরীরের কোন অঙ্গহানি হলেও মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত সামনের দিকেই অগ্রসর হতে হয় মানুষকে। মানুষ জীবনের যেখানেই পরাজয় স্বীকার করে হাত পা গুড়িয়ে বসে থাকবে সেখান থেকেই সে সমাজ,দশ এবং দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। জীবনে চাই সংগ্রাম, সাধনা, দৃঢ়তা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলা। কারণ, মানুষকে মূল্যায়নের সময় তার বিজয়গুলোর সাথে সাথে পরাজয়ের দিকসমূহও নিয়ে তাকে মূল্যায়ণ করা হয়। এক্ষেত্রে ভারতের অরুণিমা সিনহা নামে সেই তরুণীর নামটা উল্লেখযোগ্য। ২০১১ সালের ১২ এপ্রিল রাতে ট্রেনে আরোহনকালীন সময়ে ডাকাতের কবলে পড়ে চলন্ত ট্রেন থেকে নিচে ছিটকে পড়েন তিনি। বলা হয়ে থাকে যে, সেই রাতে ৪৭ কিংবা ৪৯ টি ট্রেন তার উপর দিয়ে অতিক্রম করে। ফলশ্রুতিতে একটি পা হারান তিনি। দেয়া হয় তাকে হুইল চেয়ার৷ আর, অরুণিমা সিনহা সেই হুইল চেয়ার থেকেই স্বপ্ন দেখেন এভারেস্ট বিজয়ের। যেই স্বপ্ন, সেই কাজ। দুর্ঘটনার মাত্র দুই বছরের অল্প সময় পরেই ২০১৩ সালের ২১ মে তার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করে যেখানে তিনি পরিবারের জন্য বুঝা হতেন, সেখানে নিজ দেশের জন্য অহংকারের পাশাপাশি সমগ্র বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন৷ আসলে, মরে যাওয়া সহজ, বেঁচে থাকা কঠিন। আর, বেঁচে থাকতে হলে “হার মানার নাম জীবন নয়, বরং লড়াই করে প্রতিযোগিতার বিশ্বে টিকে থাকার নামই জীবন” এটা ধারণ করেই বাঁচতে হয়। তাইতো, যত কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হই না কেন দৃঢ় মনোবল নিয়ে এগুতো হবে সামনে। মনে রাখতে হবে
“Life is not a bed of roses”.

লেখকঃ
তাওহীদুল ইসলাম নূরী
শাহারবিল সদর, চকরিয়া, কক্সবাজার।