অধ্যাপক রায়হান উদ্দিন:
পাবলিক নুইছেন্স নিয়ে গত ৫ ই মার্চ ২০১৬ সালে আমি একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম।ভাবছিলাম কিছু না কিছু মানুষের বোধোদয় হবে। এখন দেখি বিধি বাম । ঠিক তার উল্টোটাই হচ্ছে।পাবলকি নুইসেন্স র্বতমানে আমাদের দেশে অবহলেতি একটি বিষয়। কারণ এ নিয়ে সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চিন্তা-ভাবনা প্রজ্ঞাপন দিয়েও কোন কাজ হয়নি।বিষয়টি যারা আইন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেন তারা খুব ভালো করে বুঝবেন। পাবলকি নুইছেন্স এর অনেক ধারা উপধারা থাকতে পারে। থাকাটাই স্বাভবিক। কিন্তু এই আইনের কোন প্রতিফলন হয়েছে কিনা তা আইনবিদরা বলতে পারবেন কিনা আমার সন্দেহ।
সম্প্রতি উচ্চশব্দ ব্যবহারে জনদুর্ভোগ লাঘবে সরকারি নির্দেশনায় ব্যবস্থা নিচ্ছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসিদের নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জনদুর্ভোগ নিয়ে বিশ্বের উন্নত দেশে যে আইন অনুসৃত হচ্ছে তা দেখলে আশ্চর্য হতে হয়।দেশে পাবলিক নুইছেন্সের কারনে বড় ধরনের ঘটনা যে হয়নি তা নয়। কিছুদিন আগে ঢাকার এক পত্রিকায় দেখলাম বিয়ের অনুষ্টানে উচ্চস্বরে গানের শব্দ যন্ত্র বাজাতে গেলে পাশের ঘরের বুড়ো বাপ এবং ছেলে শব্দ কমানোর অনুরোধ করতে যায় ঐ অনুষ্টানের আনন্দবাজরা বুড়োকে বেধড়ক পিটিয়ে মেরে ফেলে, ছেলেকে আহত করে।
সুইজারল্যান্ডে রাত দশটার পর কোন বহুতল ভবনে গোসলখানায় পানির আওয়াজে অন্য ফ্লাটের মানুষের ঘুমের অসুবিধা হওয়ায় ফ্লাটের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের দেশে বললে অনেকে হেসে উড়িয়ে দেবেন।প্রতিনিয়তন দেখি ভেজাল খাবারের দোকানে সাড়াসী অভিযান চালানো হয়।কারাদন্ড, জরিমানা করা হয়। কিন্তু আমি আমার দেশের র্বতমান সমস্যার ক্ষতিতে যা বলার তা নিয়ে সম্মানীত পাঠককুলকে অবহিত করতে চাই। আমি আগইে বলে রাখি আমার প্রসঙ্গের অর্পূণতা, কিংবা অসারতা কিছু থাকলে আপনারা এ নিয়ে বিষদ আলোচনা করতে পারবেন। সম্প্রতি আমাদের দেশেও শব্দ দুষণ বলে একটি কথা অনকেদিন ধরে বলে আসছেন সুশীল সমাজ। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। বরঞ্চ দিনের পর দিন তা বড়েইে চলছে। যেমন গাড়ীর আওয়াজ, র্হণ, উচ্চমানরে শব্দ যন্ত্র যা বিভিন্ন সভা সমিতিতে, রাজনৈতিক মঞ্চে,রাস্তার পাশে মন্দিরে মন্দিরে উচ্চস্বরে ব্যান্ড সঙ্গীত বাজিয়ে, রাস্তাঘাটে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করে ওয়াজ মাহফিল করে নিয়ন্ত্রনবিহীন দুরত্বে শব্দযন্ত্র নিয়ন্ত্রনের বাইরে আওয়াজ করে মানুষকে অসুস্থ করে তোলছে।আমাদের মাননীয় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বারে বারে একটা কথা বলেন, “রাস্তাঘাটে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করে আর সভা সমিতি নয়, কোন বাজার নয়”। তা সত্বেও কেউ মানছেনা তাঁর কথা। আমার প্রশ্ন হলো ধর্মীয় এই সব ওয়াজ মানুষকে সু-পথে আনার জন্য প্রয়োজন।ঠিক তেমনি রাজনৈতিক বত্তৃতা মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত করার জন্য। একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু এভাবে পিক আওয়ার এ রাস্তা ঘাট বন্ধ করে গাড়ি ঘোড়া চলতে না দিয়ে , এক কিলো দু কিলোমিটা র দুরত্বে মাইক লাগিয়ে মানুষের চলাচলের বিঘ্নতার সৃস্টি করে কি ভাবে জনগনকে কল্যাণের পথে আপনারা নিয়ে আসবেন! হতে পারে একজন মৃত্যুপথযাত্রী মানুষ রাস্তায় প্রতিবন্ধকতার জন্য এমবুলেন্স নিয়ে হসপিটালে যেতে পারছেননা। হতে পারে সে একজন আপনার মা বোন, পরম আত্মীয়। ককসবাজারে এভাবে রাস্তা বন্ধ না করে ইদগাহ ময়দানে পাঁচ দশহাজার মানুষকে দাওয়াত দিয়ে মাহফিল করা যায়। আপনি ব্যাবসা করবেন। রাত দশটায় দোকান বন্ধ করে ওয়াজ মাহফিল শুনতে আসবেন। কিন্তু বিকেল চারটা থেকে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করবেন। এটা কি করে হয়! আপনারা রাসুলের সা: সুন্নাত ব্যাবসা করছেন। বলুন এতে কি মানুষের ক্ষতি হচ্ছে না?আমি শুধু ওয়াজ মাহফিল নয়। রাজনীতি মঞ্চের কথাও বলছি। তারা মানুষকে সুন্দর সুন্দর কথা শোনান , মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আগামী প্রজন্ম গড়ে তোলেন। কিন্তু এভাবে রাস্তার পর রাস্তায় মাইক লাগিয়ে কি মানুষকে সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা যায়? হতে পারে আপনার ছেলেও একজন পরীক্ষার্থী । আপনার বৃদ্ধ মা বাবা অসুস্থ ।তাঁর কানের কাছে এভাবে শব্দ বোমা হর্ণ লাগিয়ে কিভাবে ধর্ম হয়। কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আসে আপনারাই বলুন। আমাদের ককসবাজারে একটাই রাস্তা । কোন বিকল্প রাস্তা নেই। তদুপরি রাস্তার পার্শ্বে কোন ভাল পার্কিং সাইট নাই যে রাস্তায় উন্নয়নের কাজ চলছে ,জনসাধারনের ভোগান্তি হলেও মানুষ তা নীরবে মেনে নিয়েছে। রাস্তার দুপাশে এলোমেলো স্লেভগুলো তারা চাইলে সুন্দর করে বিছিয়ে দিয়ে মানুষের হাটার ফুটপাত তৈরি করে দিতে পারে। অথচ তা নেই গরু মানুষ ছাগল,গাড়ী সব একসাথে একটি রাস্তার উপরদিয়ে হাটাচলা করছে। এমনও দেখা গেছে দুই জায়গায় রাস্তা বন্ধ করে ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে। আগে যে ট্রাফিকরা যানজট এড়াবার জন্য বিকল্প গলি ব্যাবহার করতে দিতেন তাও ওয়াজ মাহফিল এর জন্য বন্ধ । রাস্তাঘা্ট এভাবে নিয়ন্ত্রন বিহীন শব্দ বানিজ্য জেলা প্রশাসক চাইলেই বন্ধ করতে পারেন। যেমনটি বেশ কয়েক বছর আগে পিকনিকে আসা গাড়ীর মাইক বাজানো প্রশাসন বন্ধ করতে নিয়ম বেধে দিয়েছিলেন এবং তা যথারীতি অনুসৃত হয়েছিল। কিন্থু প্রশাসনের পালাবদলে এসব কিছুই থাকেনা।আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ কলকাতায় পুজার সময় শব্দ যন্ত্রে আওয়াজ কত ডেসিবেল(ডেসিবেল শব্দের পরিমাপ) তা দেখার জন্য পুলিশ সচেতন থাকে।রাস্তায় ভারি যানবাহন কতটুকু মাত্রায় ভার নিয়ে চলাচল করবে তার বিষয়ে সরকারকে ওয়াকিবহাল হতে হবে। এই পরিমাপ যন্ত্র নিশ্চই আমাদের দেশেও থাকতে পারে। না থাকলে আনার ব্যবস্থাও সরকার করতে পারে। রাস্তা ঘাটে সিসি ক্যামেরা , ভারি ওজন নিয়ন্ত্রনের জন্য পরিক্ষন যন্ত্র,বার কোড রীডার সব এদেশে আছে। শব্দ যন্ত্র নিয়ন্ত্রক না থাকার কথা তো নয়। | এখানে আমার প্রশ্ন হলো গাড়ির হর্ণ নিয়ে ট্রাফিক অনেক কিছু করেও কিছু করতে পেরেছেন বলে আমার মনে হয়না। বিভিন্ন হাইওয়েতে ব্যবহারের কথা বলে শহরের ছোট সরু গলি থেকে যেকোন সড়কে বহাল তবিয়তে বাজানো হয় এই হর্ণ । অবশ্য বিষয়টি হলো সচেতনতার অভাব। মনে হয় ড্রাইবার এসব বিষয়ে সম্পূর্ণওয়াকিবহাল নন। প্রেসার হর্ণ এর জন্য কোন মুমূর্ষু রোগী অসুস্থ হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চেন্সেলর ও বিশিষ্ট নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক প্রাণ গোপাল বলেছেন, সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের হাইড্রোলিক হর্ণ শব্দ দুষণের অন্যতম কারণ এবং এটি বিশেষভাবে শিশুদের ক্ষতি করে। তিনি বলেন তিন ছরের বম বয়সের একটি শিশুর কাছাকাছি স্থানে যদি হইড্রোলিক হর্ণে ১০০ ডেসিবেল ডিবি)শব্দ উৎপন্ন হয় তাহলে সেই শিশুটি শ্রবণশক্তি হারাতে পারে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউ এইচ ও) এর মতে ঢাকার কোন কোন ব্যস্ত সড়কে ৬০ থেকে ৮০ ডেসিবেল হাইড্রোলিক হর্ণে তা ৯৫পh©ন্ত হতে পারে। সাধারণত ৬০ ডিবি শব্দ সাময়িকভাবে একজন মানুষকে বধির করতে পারে এবং১০০ ডিবি(ডেসিবেল) শব্দ একজন মানুষকে সম্পূর্ণভাবে বধির করে দিতে পারে। রাস্তায় যানজটের কারণে যে শব্দ দুষণ হয় তার কারণে সবচেয়ে ক্ষতি হচ্ছে মানুষের শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের।গুলশান মা ও শিশু ক্লিনিকের ইনচার্জ ও শিশু বিষেশজ্ঞ ডা. শাকিল সারওয়ার জানান, ছেলে মেয়েদেরওযদি শ্রবণে সমস্যা হয় তাহলে তাদের কথা বলতেও সমস্যা হতে পারে। তিনি বলেন, অতিরিক্ত শব্দ দুষণ তাদের স্কুলের পড়া লেখায় সমস্যা সৃষ্টিও পাশাপাশি ঘুমের ব্যাঘাত ও ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম এ বাশার বলেন, রাজধানীর বাসিন্দাদের নানা সমস্যার মধ্যে পরিবহণের হাইড্রোলিক হর্ণ যা কিনা মানুষকে আরো বেশী ক্ষতিগ্রস্ত করছে।শব্দ দুষনের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও মানুষ এ সম্পর্কেতেমন কিছু জানেনা।তাই মানুষ শব্দ দুষনের শিকার হচ্ছে। চালকের অসচেতনতা এবং দক্ষতার অভাবে অনেক চালক অকারণে জোরে জোরে হর্ণ বাজায়। আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়া হলে ১৪০ থেকে ১৯০ ডেসিবেল শব্দ উৎপন্ন করে। বজ্রপাত হলে ১২০ ডেসিবেল শব্দ উৎপন্ন করে। গান শোনার ক্ষেতে ১০০ ডেসিবেল শব্দ উৎপন্ন হয়।১০০ ডেসিবেল মাত্রায় যদি ১৫ মিনিট গান শোনা হয়, তাহলে শ্রবনযন্ত্রের অবশ্যই ক্ষতি হবার সমুহ সম্ভাবনা থাকে। এই ডিজিটাল শব্দ শোনাতে আমাদের দেশের কত মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তার কোন হিসাব আমাদের দেশে নাই।আমাদের দেশে হাইড্রোলিক হর্নকে বিবেচনায় এনে আইন করা হয়েছে। আদালতের রায়ও রয়েছে।
দেখা যায় সকাল বেলা প্রাথমিক স্কুলের কাছাকাছি এমনকি হাসপাতালের সামনেও খুবই তীব্রভাবে হর্ণ বাজিয়ে থাকে। বর্তমানে ঠিক এরকম আরো একটি বিষয় প্রকট হয়ে উঠছে। তা হলো যত্রতত্র চলমানমাইক্রোফোন এর ব্যবহার। শহরে চলমান মাইক্রোফোনের দৌরাত্ম্যে রাস্তায় পাশে দাঁড়িয়ে কেউ কারো সাথে দু একটি কথা বলতে এবং শুনতে পারেনা। কারণ শব্দ যন্ত্রের আওয়াজ এতো উঁচু তা কতো ডেসিবেল (শব্দ পরিমাপ যন্ত্র) দিয়ে পরীক্ষা করলে তা সহজেই ধরা পড়বে। আমাদের দেশে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক যন্ত্রপাতি এসেছে। সেই সুবাদে এই শব্দ পরিমাপকারী যন্ত্রটি নিশ্চয় এসেছে। যেমনটি এসেছে রাস্তায় যানবাহনের ভার নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র, নাম্বার প্লেট রিডিং যন্ত্র ইত্যাদি। এখানে একটি প্রসঙ্গ উল্লেখ না করলে নয়। বিশ্বের অধিকাংশ আমাদের মতো দেশে রাস্তায় গাড়ির হর্ণ বাজেনা। গতি নিয়ন্ত্রণ পর্যবেক্ষণ যন্ত্র রাস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপন করা আছে। যদি কোন ড্রাইবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে গাড়ি চালান তার গাড়ির তথ্য উপাত্ত ঐ যন্ত্রে রেকর্ড হয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে আইনের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়। ড্রাইভার সীট বেল্ট বেঁধেছেন কিনা তা দেখার জন্য রাস্তায় লুকানো ক্যামেরা বসানো আছে। এসব গাড়ী চালকরা সুশৃঙ্খলভাবে সড়ক আইনের নীতিমালা অনুসরণ করে থাকে। তাই কোথাও একটু হর্ণ বাজানোর দরকার পড়েনা। যাক এসব গেলো গতির কথা। এখন শব্দের কথায় আসি। আমাদের দেশে রাজনৈতিক সমস্যা এখন প্রকট। সেই সুবাদে বিভিন্ন জনসভা, মিছিল-মিটিং হয়ে থাকে। এতে অনেক বড় বড় শব্দ যন্ত্রের ব্যবহার হয়ে থাকে। জনসভায় মানুষ বেশী হলে শব্দ যন্ত্র থাকবে, মানুষকে জ্ঞানী-গুনী নেতাদের বক্তব্য শুনতে হবে, জানতে হবে অনেককিছু এটাও ঠিক। কিন্তু বিশাল মাঠ, জনসভার পর রাস্তায়-রাস্তায় মাইক বাজিয়ে মানুষদের বধির করা শব্দ শুনিয়ে কি সুবিধা আমি বুঝিনা। রাস্তায় মানুষ ভালো করে একজনের সাথে আরেকজন কথা বলতে পারেনা, দোকানে কেনাকাটায় অসুবিধা হয়, টেক্সি, রিক্স ওয়ালাদের সাথে কথা বলা যায়না। ইশারায় সব বলতে হয়। আমার প্রশ্ন জনসভার ভাষণে রাস্তায় কিছু বোঝা যায়না।কি কউে কোন ভাষণ ভালোভাবে শুনতে পান? আমার আরো একটি বিকল্প প্রস্তাব আছে তা হলো রাজনীতবিদিরা যদি এতোই জনগণকে শোনাতে চান তাহলে আমাদরে স্যাটলোইট চ্যানলে তো ঘরে ঘরে প্রতিটি চায়ের দোকানে অফিসে হোটেলে সব জায়গায় বসানো আছ। এর মাধ্যমে ভাষণ সরাসরি দেখালে মানুষ সব শুনতে পাবে বলে আশা করি। ঠিক তেমনি র্ধমীয় আলোচনা, ওয়াজেও এই নিয়ম অনুসরণ করলে ভালো হয়।মানুষকে সঠিক পথে আনতে র্ধমীয় আলোচনার বিকল্প নেই।কিন্তু এখানওে মসজদি মাঠ ইত্যাদরি গন্ডি পেরিয়ে একবোরে রাস্তায় অনকেদুর র্পযন্ত সারি সারি মাইকরে বহর বসানো হয়। এতে করে ক’জন মানুষ তীব্র এই শব্দ ওয়াজ শুনতে পান তার জবাব আপনারাই দিন। হয়তো অনেকে ফতোয়া দিবেন আল্লারাসুলের সা: কথা যত দুরে শোনানো হয় ততই মঙ্গল। তা ঠিক, কিন্তু শ্রবনেন্দ্রিয়ের ক্ষতি করে মানুষ চলাচলের অসুবধিা করে , মানুষকে একজনের সাথে আরেক জনের কথা বলার, শোনার অসুবধিা করে ,শব্দ বোমা তৈরী করে , মুমুর্ষ রোগীর অসুবিধা করে,ওয়াজ মাহফলি কতটুকু উপকার করছে তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।সহৃদয় পাঠক আমার কথাগুলোকে অন্যভাবে নিবেন না।
কারণ আমি দেখেছি বছর খানেক আগে মহেষখালীতে যত্র তত্র মাইক অনুমতি ছাড়া বাজানো যাবেনা ওসি সাহেবের এই ঘোষনায় অনেকে অনেক রকম মন্তব্য করেছেন। কেউ বলেছেন এখন মাহফিলের মওসুম তাই এটি বন্ধ করার পায়তারা করছেন সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ। আবার কেউ সাধুবাদ জানিয়েছেন। আবার কেউ বলেছেন রাতভর বেন্ড শো করলে কিছু হয়না , মন্দিরে ঢাক ঢোল বাজালে কিছু হয়না এখন কেন এসব। মানুষের মৃত্যু সংবাদ কিভাবে জানাবো ইত্যাদী মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আমার প্রশ্ন হলো মানুষের ক্ষতি হয় এমন কিছু না করার জন্য সরকার কোন পদক্ষেপ নিলে তাকে স্বাগত জানাতে হবে। কারন মাইকরে শব্দ কতটুকু বাড়ালে মানুষের সহনীয় র্পযায়ে থাকে তা দেখা কি উচতি নয়? কারণ সবাই ওয়াজ শুনবে এটাও ঠিক নয়। অনেকের অনেক অসুবধিা থাকতে পার।কোরান তেলওয়াত জোরে পড়ায় কারও অসুবিধা হলে তা আস্তে পড়ার বিধান রয়েছে।রাস্তায় রাস্তায় পিকনিকের চলমান মাইক্রোফোনের জোরালো আওয়াজ সত্যি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এসব আবাসিক এলাকায় , ধর্মীয় উপাসনালয়ের কাছে না বাজানো উচিত।পর্যটন মৌসুমে এসব সরকারকে মনোযোগ দিয়ে দেখা উচিত। কারন ধর্মীয় চেতনার বাইরে গিয়ে বাইরের দেশের তথাকথিত অনৈতিক মুক্ত চিন্তাধারা যেমন থাইল্যান্ড পাট্টয়ার মতো উগ্রমানসিকতা নিয়ে আমাদের পর্যটন শিল্পকে গড়ে তোলা যাবেনা। কারন আমরা ধর্র্মীয় চিন্তা চেতনার বাইরে গিয়ে কিছু করা পছন্দ করিনা। এখন আবারো শব্দ দুষন নিয়ে বলি। শব্দ দুষন জনিত কারনে আমাদের অনেক অসুবিধা হতে পারে । যেমন হার্টের সমস্যাজনিত বিভিন্ন অসুখ ইত্যাদি। তাছাড়া ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার বিষয়টিও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায়না। এখানেও স্যাটলোইট চ্যানেলের মাধ্যমে সরাসরি ওয়াজ মাহফিল দেখানো যেতে পারে।বিভিন্ন এফ এম রেডিওতেও তা শোনানো যেতে পারে। উল্লেখ করা যেতে পারে ।
আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ কলকাতার কথাই বলি, স্কুল কলেজের পরীক্ষা আসলে পশ্চমিবঙ্গ সরকার শব্দ যন্ত্ররে উপর অনকে বিধি-নিষেধ জারি করে থাকেন। র্অথাৎ শব্দরে মাত্রা কতো ডসেবিলে হবে তা নির্ধারন করে দওেয়া হয়। এসব মনিটরিং করার জন্য লোকজন তাদের রয়ছে।বিয়ের অনুষ্ঠান, ব্যান্ড শো, র্ধমীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদি শব্দযন্ত্রে মাপ অনুসারে করা হয়। বড়োমাপরে জনসভা, র্ধমীয় আলোচনা সভা, ব্যান্ড শো ইত্যাদীর জন্য আমাদের ককসবাজারে বিশাল সমুদ্র সকৈত রয়ছে।যেমন এখন প্রতি বছর তাবলীগরে এস্তেমা সহ নানা অনুষ্ঠান হচ্ছে সমুদ্র সৈকতের বেলাভুমিতে। এতে মানুষের কোন অসুবধিা তো হচ্ছে না। ককসবাজারে শুধুমাত্র একটি প্রধান সড়ক । তা ও নানা সমস্যায় র্জজরতি। এর উপর শব্দ দুষণরে মাত্রা এভাবে বাড়ালে মানুষ ক্ষতগ্রিস্ত হব।আমি একটা কথা পরষ্কিার করে বলতে চাই। রাস্তায় মাইক এর শব্দ যদি সঠিক মাত্রায় বোঝা যেতো তাহলেও ব্যাপারটিকে নিয়ে লিখতে হতো না। অসহনীয় মাত্রায় শব্দ দুষণে সাধারণ মানুষ অতষ্ঠি হয়ে উঠেছে বলেই আমার এ লেখা।ককসবাজারে বেশ কিছু চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি করে ওয়াজ মাহফিল এর আয়োজন এবং মাহফিল ছড়িয়ে অনেকদুর পর্যন্ত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সাউন্ড লাগিয়ে রাতভর উচ্চস্বরে ওয়াজ মানুষের কতটুকু উপকারে আসে তা আমাকে বোঝালে কৃতজ্ঞ থাকবো। উল্লেখ্য আমার পেয়ারা নবী সা: এর জন্ম স্থান মক্কায় আমি হজ্জ করতে গিয়েছিলাম ।ওখানে এতগুলি গাড়ির মধ্যে একটি হর্নের আওয়াজ আমি শুনিনি। ছিলনা এই শব্দ বোমার মতো কানফাটানো উচ্চ স্বরে ওয়াজ-।ওখানে কাবার একেবারে কাছে হিলটন হোটেলের উপরে তিন চার তলা মসজিদ ওখানে বাংলাভাষা সহ বিভিন্ন ভাষায় তকরির হয় । কই ওখানে তো এতো উচ্চ স্বরে কেউ ওয়াজ করেননা। পাঠক কুলের কাছে আমার অনুরোধ আমার লেখায় কোথাও ভুলত্রুটি থাকলে, আমাকে মার্জনা করবেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।