শাবলু শাহাবউদ্দিন
আইন অনুযায়ী ছেলেদের ২১ বছরের কমে এবং মেয়েদের ১৮ বছরের কমে বিবাহ দেওয়া নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কতটুকু মানা হচ্ছে এই বিষয়টি তাহা বর্তমান করোনা কালীন সময়ে প্রশ্নের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে । করোনা কালীন সময়ে গণসচেতনতা এবং প্রচার প্রচারণার অভাবে আবার বাল্য বিবাহের যেন সুদিন ফিরেছে এসেছে । করোনা কালীন সময়ে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো নিয়ম অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে তাদের কাজ পরিচালনা করতে পারছে না, যার ফলে বাল্য বিবাহ গতানুগতিক নিয়মে চরম হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সহ সমাজ সেবা অধিদপ্তর এখন সঠিক ভাবে মাঠ পর্যায়ে তাদের প্রচার প্রচারণা এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধি মূলক কার্যক্রম নেই বললেই চলে । এছাড়া বিভিন্ন এনজিও এখন মাঠ পর্যায়ে সামাজিক গণসচেতনতা মূলক কোন কাজ পরিচালনা করছে না বললে ভুল হবে না । করোনা কালীন সময়ে সব প্রতিষ্ঠান তাদের টিকে থাকার স্বার্থে কাজ করছে । সমাজিক কাজ যদিও তাদের মুখ্য বিষয় তবুও তাঁরা তাদের টিকে থাকার স্বার্থে সাধ্যমত সামাজিক গণসচেতনতা মূলক কাজ করতে পারছে না । ফলে বাল্য বিবাহ বিষয়ক জনসচেতনতা এখন প্রায় নেই বললে ভুল হবে না । গ্রামে গ্রামে বাল্য বিবাহের মহা উৎসব চলছে । এই বাল্য বিবাহ উৎসব থামাতে না পারলে আবারও মাতৃমুত্যুর হার বৃদ্ধি পাবে । বৃদ্ধি পাবে প্রজন্ম হার । বৃদ্ধি পাবে শিশু মৃত্যুর হার । বৃদ্ধি পাবে পুষ্টিহীনতা জনসংখ্যার হার । স্বাস্থ্য খাত আবার ভেঙে পড়বে ।
করোনা কালীন সময়ে বাল্য বিবাহের প্রধান কারণ হল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে গ্রামের মেয়েদের বাল্য বিবাহ চরম হারে বৃদ্ধি পেয়েছে । এছাড়া স্থানীয় সরকার এবং প্রশাসনের অবহেলার কারনে বাল্য বিবাহ বৃদ্ধি অন্যতম একটি কারণ দেখা যাচ্ছে।
এছাড়া করোনা কালীন সময়ে গ্রামের মানুষের কাজের চাপ একদম কমে যাওয়ায় বাল্য বিবাহ বৃদ্ধি আরেকটি কারণ হতে পারে । করোনা কালীন সময়ে করোনা ভাইরাস বিষয়ক জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে গিয়ে কালের বিবর্তনে মত বাল্য বিবাহ বিষয়ক প্রচার প্রচারণা হারিয়ে গেছে । টেলিভিশন কিংবা খবরের কাগজে এখন আর তেমন একটা বাল্য বিবাহ বিষয়টি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করা হচ্ছে না । যার ফলে গ্রামে অশিক্ষিত এবং অর্ধশিক্ষিত মানুষগুলো একদম যেন ভুলে গেছে বাল্য বিবাহের কুফল গুলো ।
এইভাবে বাল্য বিবাহ চলতে থাকলে আগামী ভবিষ্যতে গ্রামের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অবক্ষয় বৃদ্ধি পাবে । ভেঙে যাবে গ্রামে স্বাস্থ্য খাত । বৃদ্ধি পাবে প্রজন্ম হার, শিশু মৃত্যুর হার, মাতৃমৃত্যুর হার, পুষ্টিহীনতার হার ।
এখন উপযুক্ত সময় সরকার, প্রশাসন সহ শিক্ষিত ও সচেতন সমাজের, এই বিষয়টি নিয়ে প্রচার প্রচারণা করে বাল্য বিবাহ বন্ধ করার । নতুবা আগামী ভবিষ্যৎ হবে জাতির জন্য অন্ধকার ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।