বিনোদন ডেস্ক: চলতি সময়ের আলোচিত নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। প্রথমে ফেসবুক স্ট্যাটাস পরে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, এ বিষয়ে বনানী থানায় গেলে তাকে সহযোগিতা করেনি পুলিশ।
তবে পরীমনির এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া। তিনি জানান, ‘বুধবার (৯ জুন) মধ্যরাত সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে পরীমনি বনানী থানায় এসেছিলেন। ওই সময় তিনি বেসামাল ছিলেন। মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। মদ্যপ অবস্থায় কারও অভিযোগ নেওয়া যায় না।’
ওসি আরও বলেন, সেদিন মধ্যরাতে থানার দায়িত্বে থাকা ডিউটি অফিসার আমাকে জানান, ‘পরীমনি মদ্যপ অবস্থায় বলেছিল যে তাকে জোর করে মদ খাওয়ানো হয়েছে। তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাওয়ানো হয়েছে। তবে পরীমনির কথায় নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তাই ডিউটি অফিসার পরীমনিকে প্রথমে চিকিৎসা নিতে বলেন। চিকিৎসার পর অভিযোগ শোনার আশ্বাস দিয়েছিলেন।’
ওসি জানান, ‘এরপর পুলিশের একটি দল তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে (অ্যাপোলো হাসপাতাল) নিয়ে যান। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে পরীমনি আর অভিযোগ করেননি।’ তিনি বলেন, ‘বেসামাল অবস্থায় অভিযোগ নেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা রবিবার রাত পর্যন্ত তাকে বেশ কয়েকবার লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। তিনি মধ্যরাত পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেননি।’
এদিকে, পরীমনির বনানীর বাসায় বনানী থানা পুলিশের সঙ্গে সাভার থানা পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য উপস্থিত হয়েছেন। ঘটনাস্থল ঢাকা বোট ক্লাব হওয়ায় সাভার থানা পুলিশ বিষয়টি দেখভাল করবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘আমরা ঘটনার বিষয়ে অবগত। পরীমনির বাসায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনার তদন্ত স্থানীয় থানা (সাভার) পুলিশ করবে। আমরা কোনো তদন্ত করব না।’
ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার বিচার চাওয়ার বিষয়ে পরীমনি ফেসবুক স্ট্যাটাস ও সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক এআইজি সোহেল রানা এ বিষয়ে জানান, ‘আইজিপি স্যারের সঙ্গে তিনি (পরীমনি) কখনওই কথা বলেননি। আইজিপি স্যারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেননি। আইজিপি স্যার এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। স্যারের নাম অহেতুক ম্যানশন করা হয়েছে।’
এর আগে প্রথমে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে অভিযোগ তোলার পর রাতে সাংবাদিকদের বনানীর বাসায় ডেকে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি দুজনের নাম প্রকাশ করে জানান, একজনের নাম নাছির ইউ. মাহমুদ এবং অন্যজন তার (পরীমনি) কস্টিউম ডিজাইনার জেমীর স্কুলবন্ধু অমি নামের এক ব্যবসায়ী। এসময় পরীমনি আরও জানান, নাসির ইউ. মাহমুদ নিজেকে উত্তরা বোট ক্লাবের (ঢাকা বোট ক্লাব) সাবেক সভাপতি বলে নিজেকে দাবি করেন।
পরীমনি বলেন, ‘গত বুধবার (৯ জুন) রাত ১২টায় আমাকে বিরুলিয়ায় নাসির ইউ. মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় অমি। সেখানে নাসির ইউ. মাহমুদ আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর আমাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেন। অমিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’
এ বিষয়ে অভিযোগ জানাতে বনানী থানায় গিয়েছিলেন দাবি করে পরীমনি বলেন, ‘থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার অভিযোগ শুনলেও লিখিত কোনো কাগজপত্র নেয়নি। থানা থেকে তেমন কোনো সাড়া না পেয়ে চলে আসি।’
বিচার চেয়ে শিল্পী সমিতির সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন জানিয়ে পরীমনি দাবি করেন, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক (অভিনেতা) জায়েদ খান তাকে আশ্বস্ত করলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন। -বার্তাবাজার
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।