যুগান্তর: চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টায় মামলায় আলোচনায় আসেন বোট ক্লাবের সাবেক নির্বাহী সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও ক্লাবটির আরেক সদস্য তুহিন সিদ্দিকী অমি।পরে তাদের মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।সেই রাতে ক্লাবের ভেতরে কী হয়েছিল তা অনেকের কৌতূহলের কারণ ছিল।এবার ঢাকা বোট ক্লাবের ভেতরের নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। সেই রাতে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও পরীমনির ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। ওই ভিডিওটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও পর্যবেক্ষণ করছে।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ওই ভিডিটির ক্লিপস প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, পরীমনি ক্লাবে ঢুকেই বারের সামনে চেয়ারে বসে তার সঙ্গে থাকা অমি ও জিমিকে নিয়ে মদ পান করছেন। এ সময় দূর থেকে বোট ক্লাবের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নাসির ইউ মাহমুদ তাকে মদ পান করতে নিষেধ করেন। তখন পরীমনি একটি বোতল নিতে চাইলে নাসির ইউ মাহমুদ বলেন, আপনি কোনো বিদেশি মদ নিতে পারবেন না। এখানেও তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন পরিচালনা পর্ষদের এ সদস্য।
ভিডিওতে দেখা যায়, পরীমনিকে উদ্দেশ করে নাসির বলেন, ‘হোয়াট ইজ দিস, প্লিজ স্টপ ইজ, ডোন্ট ডু দিস, ইটস ঠু মাচ।’
নাসিরের উত্তরে পরীমনি বলেন, ‘অ্যাই যা…যা! বেরিয়ে যা!’
ঘটনার পরেই সাংবাদিকদের নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, মদপানে বাধা পেয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন পরীমনি। মদ না পেয়ে নাসির ইউ মাহমুদের দিকে বোতল ছুড়ে মারেন।
এর আগে বোট ক্লাবের সিসিটিভি ক্যামেরার একটি ফুটেজ প্রকাশ পায়। ওই ফুটেজে দেখা যায়, ৯ জুন রাত ১২টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে একটি কালো গাড়ি দাঁড়ায়। সেই গাড়ি থেকে পরীমনি, জিমি ও অমিকে নামতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর গাড়ি থেকে বের হন বনিও। ক্লাবের রিসিপশনেও অমির সঙ্গে পরীমনিসহ অন্যদের ঢুকতে দেখা গেছে ওই ফুটেজে।
পরে গভীর রাতে জিমির কোলে চড়ে পরীমনিকে নামতে দেখা যায়। পরে সেখান থেকে তিনি রাতেই বনানী থানায় অভিযোগ দিতে আসেন। পরে পুলিশ সদস্যরা তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।
এর পর (১৩ জুন) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন পরীমনি। স্ট্যাটাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য চান তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে মা ডেকে তার কাছে সঠিক বিচার ও মেয়ে হিসেবে আশ্রয় চান।
এরপর বিষয়টি নিয়ে ওইদিন রাতেই বনানীর নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন অভিনেত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘গত বুধবার (৯ জুন) রাত ১২টায় আমাকে বিরুলিয়ায় নাসির উদ্দিন মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় অমি। ওই সময় নাসির নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাসির আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে করে সামনের দাঁতে আঘাত পাই। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর আমাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেন।’
পরের দিন সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন পরীমনি। পরে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের মাদক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। সেই মামলায় নাসির ও অমি সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বাকি তিন নারীর ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।