আলাউদ্দিন, লোহাগাড়া প্রতিনিধি :

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশাল আলোচনা সভায়, বিদেশে অবস্থানরত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর করার জোর দাবী জানানো হয়েছে।

৩০ আগষ্ট ( সোমবার ) সকাল বেলা ১২টার দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আলহাজ্ব মোস্তফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহামেদ এমপি।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনের মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, আল্লামা ফজলুল্লাহ্ ফাউন্ডশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী এমপি।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী শোক দিবসের আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্য দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাকিস্তান সরকার এদেশের মানুষের সাথে বৈষম্যমূলক আচারণ করেছে। বাঙ্গালি জাতিকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখেছিল। তাদের এ আচারণের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুলেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙ্গালির মুক্তির ৬দফা দিয়ে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। আওয়ামীলীগ এদেশের মানুষের স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৭০ ইংরেজীর নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়েছে। উপস্থিত নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, একে অপরের বিরুদ্ধাচারণ করলে দল ও জাতির ক্ষতি হবে।

নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন আগামী নির্বাচনে সকলকে সঙ্গবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। নৌকার বিজয় অব্যহত রাখতে হবে। ঐক্যই হচ্ছে আওয়ামীলীগের শক্তি। দল ও দলীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদেরকে যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

লোহাগাড়া সাতকানিয়া ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ও হচ্ছে, উল্লেখ করে মোছলেম উদ্দিন আহমদ আরো বলেন অতিথি অন্য কোন সরকার আমলে এলাকার এভাবে উন্নয়ন হয়নি। লোহাগাড়া-সাতকানিয়া রাজনীতিকে আরো উর্বর করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে এদেশের উন্নয়ন অনেক আগেই উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছতো। বঙ্গবন্ধুর নীতি আর্দশ ভিত্তিক শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন। চট্টগ্রাম-এ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে ভালোবাসেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যরিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আগষ্ট হচ্ছে শোকের মাস। জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এ মাসে স্ব-পরিবারে আমরা হারিয়েছি। জাতির পিতাকে হারানোর শোক বুকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে লোহাগাড়ায় এসেছি। প্রতিদন্ধিতার জন্য এখানে আসা হয়নি। ১৫ আগষ্ট সবচেয়ে নির্মম হত্যাকান্ড বলে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, জাতিরপিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের চরিত্র হনন করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু অভিন্নসত্তা উল্লেখ করে ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য সকলকে কাজ করতে হবে। থাকতে হবে মিলেমিশে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের বিরুদ্ধে বার বার ষড়যন্ত্র হয়েছে, ষড়যন্ত্র চলছে।

বিদেশী মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট ষড়যন্ত্রকারীরা যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তখন মানবাধিকার নামের সংগঠনের সেসব লোকগুলো তখন কোথায় ছিলেন। জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে এদেশের মানুষের কোন অধিকার ছিল না। আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হয়েছে।

তখন কিন্তু মনবাধিকার নেতারা কোন কথা বলেননি। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অন্যতায় দল ও দেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে। জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো পথে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন বর্তমান বিশ্বে রোল মডেল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী বলেছেন, লোহাগাড়া-সাতকানিয়ায় উল্লেখযোগ্য কোন ক্ষোভ-বিক্ষোভ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল না। আগামীতে মনোনয়ন কে পাবে, আর কে পাবে না তা বড় কথা নয়। তবে কাজ করতে হবে ঐক্যবদ্ধ ভাবে। লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের আয়োজিত এ সমাবেশে সকলের দাবি আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দৃঢ় ঐক্য।

জঙ্গীদের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদেরকে কাজ করতে হবে, সজাগ থাকতে হবে। জঙ্গীরা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। আমরা সবাই ঐক্য রয়েছি, আগামীতেও ঐক্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলেও তিনি জানান।

সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন হিরুর সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পিপি অ্যাডভোকেট এ. কে. এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ,সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা হারুন লুবনা, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম. এ মোতালেব সিআইপি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়ুয়া, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক