সিবিএন ডেস্ক:
আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি জাহাজ থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে। এ খাত থেকে ৩ হাজার ২৪৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। মূলত রাজস্ব আয় বৃদ্ধিটা নির্ভর করে কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের ওপর। বিভিন্ন কৌশল ও যুগোপযুগী সিদ্ধান্ত ও বৈদেশিক জাহাজের আগমনের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ার কারণে রাজস্ব আয় বাড়ছে বলে দাবি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে জাহাজের মোট পরিচালনা আয়ের মধ্যে শুধু বৈদেশিক জাহাজ থেকে রাজস্ব এসেছে ৫২০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সে আয় ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা কমে হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। অপরদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সে আয় আরও ৪৮ কোটি ২০ লাখ টাকা কমে ৪৩৬ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছিল। এছাড়া প্রতিটি বিদেশি জাহাজ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রতি জাহাজ থেকে ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় করেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে পণ্য উঠনামা হয়ে থাকে। এরমাধ্যমেও রাজস্ব আয় করে বন্দর। ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য উঠানামা করে ২ হাজার ৭২৭ কোটি, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৫৮০ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ হাজার ৩৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা পণ্য উঠানামা বাবদ আয় করে বন্দর। পাশাপাশি ২০২০-২১ অর্থবছরে বন্দরে প্রতি টন পণ্যে রাজস্ব এসেছিল ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরেও একই পরিমাণে রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, বন্দরে জাহাজ আগমনের সংখ্যাও আগের তুলনায় বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩ হাজার জাহাজ এসেছিল বন্দরের জেটিতে। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৯৭০টি জাহাজ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ হাজার ৮৬৮টি জাহাজ এসেছিল। অপরদিকে জাহাজ বহির্গমনের সংখ্যাও অন্যান্য বছরের তুলনায় বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২ হাজার ৯৯০টি জাহাজ, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২ হাজার ৯৬০ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বহির্গমন হয়েছিল ২ হাজার ৮৫০টি জাহাজ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বেড়েছে আমদানি ও রপ্তানি মালামাল খালাসের পরিমাণও। আমদানি করা মালামালের মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯৩৯ লাখ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৯১ লাখ টন ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮২৯ লাখ টন আমদানি করা পণ্য খালাস করা হয়েছে। অপরদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৮১ লাখ টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৬৯ লাখ টন ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৫২ লাখ টন পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে বেড়েছে পণ্য রপ্তানিও।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্যমতে, দু’বছরের ব্যবধানে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ অবস্থানের জন্য বার্থ ও মুরিংয়ের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ অবস্থানের জন্য ১৭টি বার্থ ও ১৯টি মুরিং ছিল। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সে সংখ্যা বেড়ে ১৯টি বার্থ ও ৩৫টি মুরিং রয়েছে। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ৩০ লাখ ২০ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে। তার আগের অর্থবছরেও একই ধারা বজায় ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২৯ লাখ ১৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মোহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, ‘বর্তমানে বন্দরে সার্বিক কাজে গতিশীলতা ফিরেছে। কোন ধরনের কনটেইনার জট সংক্রান্ত জটিলতাও নেই। সবকিছু স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। পাশাপাশি বিগত বছরগুলোর তুলনায় বন্দরে জাহাজের আগমনের সংখ্যাও বেড়েছে এবং তা দিনকে দিন বাড়ছে। তাই জাহাজ থেকে আয়টা বেড়েছে। আশা করছি সামনে এ আয় আরও বাড়বে।’ -সিভয়েস।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।